কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর: বিষাক্ত পানীয় জল খেয়ে প্রায় পাঁচটি গ্রামের দেড়শো'র বেশি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লেন । তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমান তাঁরা সেখানেই চিকিৎসাধীন। অসুস্থ হয়ে এক 12 বছরের নাবালিকার পাশাপাশি প্রৌঢ়েরও মৃত্যু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে সরকারিভাবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি 1 নম্বর ব্লকের মহিষাগোট গ্রাম পঞ্চায়েতের।
স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, অন্যান্যদের মতো ওই মেয়েটি অসুস্থ হয়ে প্রথমে ব্লক হাসপাতাল, পরে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তারপরই তার মৃত্যু হয়। যদিও ওই মেয়েটি মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিল। অপরদিকে, অশোক কুমার মাইতি নামে প্রৌঢ়ের (65) মৃত্যু হয়েছে। তবে, পানীয় জল খেয়ে মৃত্যু হয়েছে কি না, তা এখনও প্রশাসনের আধিকারিকরা পরিষ্কারভাবে জানাননি। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পানীয় জলে বিষক্রিয়ার কারণে ওই দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা রাজ্য সরকারকে দায়ী করেছেন। পাল্টা বিজেপির উপর দোষ চাপিয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
- কাঁথি 1 নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি তথা বিজেপি নেতা উমেশ প্রধান ফোনে বলেন, "সজল ধারা প্রকল্পের ট্যাঙ্ক দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয়নি। সেই কারণেই এই বিপত্তি। মেডিক্যাল টিম বসানো হয়েছে। চিকিৎসার জন্য সবরকমের সহযোগিতা করা হচ্ছে।"
- তৃণমূল কংগ্রেসের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পীযূষ কান্তি পণ্ডা বলেন, "পানীয় জলে বিষক্রিয়ার কারণেই মানুষ অসুস্থ হয়েছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত ও কাঁথি 1 নম্বর পঞ্চায়েতের সমিতি বিজেপি'র ক্ষমতায় রয়েছে। তার ফল মানুষকে ভুগতে হচ্ছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সভাধিপতি উত্তম বারিকের তৎপরতায় সক্রিয়ভাবে বিষবটি খতিয়ে দেখছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি থাকায় এই ঘটনাটি বহিঃপ্রকাশ হতে দেরি হয়েছে। বিজেপি প্রথম থেকে তৎপরতা দেখায়নি। যদি দেখাত তাহলে এত বড় ঘটনা ঘটত না ।"
- কাঁথি 1 নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসেনজিৎ চন্দ্র ফোনে জানান, একাধিক গ্রামের বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে মাজনা ব্লক হাসপাতাল ও কাঁথি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিষয়টি তৎপরতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, 2 জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। কিন্তু পানীয় জল খেয়ে মৃত্যু হয়েছে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। মেয়েটি মৃগীরোগে আক্রান্ত ছিল। এদিকে ওই ব্যক্তির বয়স্কজনিত কারণেও মৃত্যু হতেও পারে ৷
- স্থানীয় বাসিন্দা হীরালাল শিট বলেন, "আমরাও জেনেছি, হাসপাতালে চিকিৎসকরা একথা বলছেন। আমার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের ভর্তি রয়েছেন। 4দিন কেটে গেলেও এখনও সুস্থ হয়নি। জল খাওয়ার পর বমি ও পায়খানা শুরু হয়। এখন জল কিনে খাচ্ছি।"
- আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "জল খেয়ে বিপওি ঘটেছে। হাসপাতাল থেকে বাড়ি এলাম। এখন জল কিনে খাচ্ছি ৷"