মালদা, 11 জুন: জামাইষষ্ঠী এলেই আকাশছোঁয়া দাম হয় আম-লিচুর ৷ কিন্তু বাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী হলে, চাষিরা দাম পাচ্ছেন না ৷ মঙ্গলবার আলমপুরের হাটে দর উঠল না মালদার আমের ৷ তাতেই হতাশ চাষিরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা ৷ পাইকারী বাজারে আমের দাম কেজি প্রতি 35-40 টাকা টাকা হলেও, খুচরো বাজারে 80 টাকা দরে বিকোচ্ছে ৷
প্রসঙ্গত, গত বছর মালদায় 4 লাখ মেট্রিক টন আমের ফলন হয়েছিল ৷ এবার সেই ফলন অনেকটাই কমেছে ৷ এই বছর মেরে-কেটে হয়ত 1 লাখ মেট্রিক টন আম হতে পারে বলে দাবি করছেন আম চাষি, ব্যবসায়ী ও জেলা উদ্যানপালন দফতরের ৷ তার উপর আবার বুধবার জামাইষষ্ঠী ৷ তাই বাজারে চাহিদা ও দাম বাড়বে বলে আশা করেছিলেন সকলে ৷ কিন্তু পরিস্থিতি একেবারেই উল্টো ৷
মঙ্গলবার জামাইষষ্ঠীর আগের দিন জেলার সব থেকে বড় আমের মার্কেট বা পাইকারি হাট বসে গাজোল ব্লকের আলমপুরে ৷ প্রতিবারের মতো এই বারও বসেছিল গোপালভোগ, হিমসাগর (চলতি ভাষায় খিরসাপাতি), ল্যাংড়া, বিভিন্ন ধরনের গুটি আমের হাট ৷ কিন্তু ল্যাংড়া, হিমসাগরের মতো এলিট প্রজাতির আমের দাম কিলো প্রতি 30 থেকে 35 টাকা দরে বিক্রি হয়েছে ৷ যদিও খুচরো বাজারে কেজি প্রতি আম বিক্রি হয়েছে 80 টাকা দরে ৷
পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেই আম চাষি কুশিলাল সরকার বলেন, "চারদিন ধরে হাটে আম আসতে শুরু করেছে ৷ প্রথমদিকে বাজার ভালোই ছিল ৷ কিলো প্রতি 40-42 টাকা দর উঠেছিল ৷ আমরা ভেবেছিলাম, জামাইষষ্ঠীতে বাজার আরও চড়বে ৷ কিন্তু আজ দর পড়ে গিয়েছে ৷ 35 টাকার বেশি দাম ওঠেনি ৷ আমি গোপালভোগ প্রজাতির আম নিয়ে এসেছিলাম ৷ এবার বৃষ্টির অভাবে আমের আকারও খুব একটা ভালো হয়নি ৷ এখন বৃষ্টি হলেও আম আর বড় হবে না ৷ তবু আশা করেছিলাম, ষষ্ঠীর বাজারে দাম ভালো পাব ৷ তা আর হল না ৷"
একই আক্ষেপ আরেক চাষি দ্বিজেন সাহার গলাতেও ৷ তিনি জানান, প্রায় 4দিন ধরে ল্যাংড়া, খিরসাপাতি, গোপালভোগ, লক্ষ্মণভোগ-সহ বিভিন্ন প্রজাতির গুটি আম হাটে আসছে ৷ দু'দিন আগেও ল্যাংড়া, গোপালভাগ, খিরসাপাতির দর কিলো প্রতি 34-35 টাকা ছিল ৷ আজ সেই দর নেমে এসেছে 30-32 টাকায় ৷ এই হাটের আম কলকাতা, শিলিগুড়ি ছাড়াও অসম, ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্যে গেলেও ষষ্ঠীর বাজারে দাম বাড়বে কি না, তা নিয়ে সংশয় ৷
হাটে আম কিনতে এসেছিলেন পাইকারী ব্যবসায়ী দিলীপ মণ্ডল ৷ তিনি জানান, চারদিন ধরে আমের হাট শুরু হয়েছে ৷ মাসখানেক ধরে চলবে ৷ এখন হিমসাগর আর ল্যাংড়া আমেরই মূল চাহিদা ৷ দুই ধরনের আমই 35-36 টাকা কিলো দরে বিকোচ্ছে ৷ জামাইষষ্ঠীর মরশুমে দাম বাড়বে বলে আর মনে হয় না ৷