কলকাতা, 6 মে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কদর্য রাজনীতি করছেন। শহরে ফিরে সোমবার সন্ধ্যায় এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। গত সপ্তাহে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠার পরই রাজ্য ছেড়ে কেরলে চলে যান রাজ্যপাল। দিন তিনেক বাদে ফিরলেন। বিমান থেকে নেমে বিমানবন্দর চত্বরেই রাজ্যপাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। একাধিক বিষয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে আক্রমণও করেন তিনি।
রাজ্যপাল শুরুতেই বলেন, "আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আমি কোনও কথা বলব না ৷ কারণ, আমি নিজেই অভিযুক্ত।" এরপরই তিনি বলতে শুরু করেন, "আমি রাজনীতির উর্ধে থাকার চেষ্টা করেছি। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরাও সে কথা জানেন। রাজনীতির উর্ধে থাকলেও সমস্ত দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। সব দলের নেতারাই জানেন, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন কাজ নয়। শাসক দলের নেতাদের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি।"
এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার আক্রমণ করেন সাংবিধানিক প্রধান। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "ব্যক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আমি সবসময় ভালো কথা বলেছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কেও আমি উচ্চ ধারণা রেখে এসেছি। প্রতিটা মুহূর্তে তাঁকে নিজের সাংবিধানিক সহকর্মীই মনে করে এসেছি।" ঠিক এখানেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। তিনি জানান, তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক বৃত্তে টেনে নিয়ে এসেছেন। আর যে ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে তা থেকে তিনি মনে করতে বাধ্য হচ্ছেন, মমতা কদর্য রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন।
বক্তব্যের শেষের দিকে রাজ্যপালকে বলতে শোনা য়ায়, "এখনও আমি ঈশ্বরের কাছে মমতার জন্য প্রার্থনা করব। ঈশ্বর যেন তাঁকে রক্ষা করেন। তবে এটা তাঁর জন্যও খুব শক্ত কাজ।" কটাক্ষের সুরে তিনি আরও বলেন, "আমি আপনাদের জানিয়ে যেতে চাই, রাজ্যপালের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিদিগিরি কিছুতেই সহ্য করব না।"
গত সপ্তাহে রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মীর অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় পড়ে যায় । তিনি দাবি করেন রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন । এই ঘটনার পর থেকে রাজ্যপালকে দফায় দফায় আক্রমণ করেছেন মমতা। নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা দাবি করেন, রাজ্যপাল দু'বার ওই মহিলার শ্লীলতাহানি করেছেন। সংবাদ মাধ্যমে তাঁকে কাঁদতে দেখে মমতাও ব্যথিত হয়েছেন। এছাড়া সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে ধরেও আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, সন্দেশখালি নিয়ে বড় বড় কথা বলার আগে তিনি (রাজ্যপাল) নিজে কী করছেন সেটা দেখা উচিত। এবার কলকতায় ফিরে মমতার কড়া সমালোচনা করলেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: