কলকাতা, 31 জানুয়ারি: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের ধরনায় বসার ঘোষণা আগেই করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এবার সেই ধরনায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চিতদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ৷ পাশাপাশি জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন বঞ্চিতদের তালিকা অবলিম্বে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ৷ বুধবার মালদায় প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে এই নির্দেশ দেন তিনি ৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘একশো দিনের টাকা বন্ধ । যাঁরা 100 দিনের কাজ করেছেন, তাঁদের 7000 কোটি টাকা বাকি রয়েছে । চিন্তা করবেন না । আমি আপনাদের সঙ্গে আছি । কেন্দ্রীয় সরকার না দিলে আমি এক তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছি । আধিকারিক স্তরের বৈঠক ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে । 156টা টিম রাজ্যে এসেছে ৷ কথাও বলেছে । যদি ওরা না করে, আমি মরে যাইনি । আপনাদের সঙ্গে আমি ছিলাম, আছি, থাকব ।’’
এর পরই তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধরনার প্রসঙ্গ তোলেন ৷ সেখানে সবাইকে আগামী 3 ফেব্রুয়ারি জড়ো হওয়ার আবেদন জানান ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ করেও যারা টাকা পাননি, আমি দু’তারিখ থেকে কলকাতায় বাবাসাহেব আম্বেদকারের মূর্তি পাদদেশে একটা ধরনা করছি । সেখানে আপনারা সবাই এসে জড়ো হন । 11 লক্ষ বাড়ি ক্লিয়ার হয়ে যাওয়ার পরেও যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরাও আসুন ৷ আপনাদের বঞ্চনার বিষয়টি আমার উপর ছেড়ে দিন । আমি বিষয়টিকে আন্দোলনের মধ্যে নিয়ে গিয়ে কিভাবে আদায় করতে হয় জানি ।’’ একই সঙ্গে তিনি সমস্ত জেলাশাসককে যে 11 লক্ষ বঞ্চিত মানুষ যাঁদের বাড়ি জন্য নাম থাকা সত্ত্বেও বাড়ি পাননি, তাঁদের তালিকা প্রত্যেক জেলা সভাপতিকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন ।
পাশাপাশি বঞ্চিতদের নিয়ে আসার দায়িত্ব তিনি তৃণমূলের সবস্তরের জনপ্রতিনিধিদের দেন তিনি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই গরিব বঞ্চিত মানুষদের কলকাতায় নিয়ে যাওয়া এবং নিয়ে আসার দায়িত্ব ওই নেতাদের নিতে হবে । প্রয়োজনে এদের যাতায়াতের খরচ নিজেদের পকেট থেকেই করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । এর জন্য কোনও চাঁদা তোলার দরকার নেই বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । এর পর তিনি বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আমিও দেখতে চাই কত ধানে কত চাল !’’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এই বঞ্চিত মানুষদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আমি হয়তো আপনাদের জন্য সবটা করতে পারবো না ৷ কিন্তু কিছুটা নিশ্চয়ই করতে পারব । একটা মা জানেন তাঁকে সংসার চালাতে গেলে কিভাবে সবকিছু চালাতে হয় ।’’
প্রসঙ্গত, এর আগেও বকেয়া আদায়ের দাবিতে আম্বেদকার মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসে ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী । কিন্তু সেবার ধরনা পরেও কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিনিধি একটা ফোন পর্যন্ত তাঁকে না করার জন্য ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা । তারপর এদিন আরও একবার সেই একই জায়গায় ধরনার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী । এখন দেখার এই ধরনের শেষ পর্যন্ত কোনও লাভ হয় কি না ! কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের জন্য বকেয়া ছাড়ে কি না !
আরও পড়ুন: