কলকাতা, 7 ডিসেম্বর: তাঁর হাত ধরেই ইন্ডিয়া জোটের নামকরণের দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রয়োজনে বাংলায় বসেই ইন্ডিয়া জোট চালনাও করতে পারেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে ইন্ডিয়া জোটের গতি প্রকৃতিতে যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুশি নন এদিন তাঁর বক্তব্যে একরকম স্পষ্ট। একই সঙ্গে, আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে এখনও যে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তাও স্পষ্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গ উঠতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি তো ইন্ডিয়া জোট তৈরি করে দিয়েছিলাম।" তাহলে সেই জোট সেভাবে একজোট হতে পারছে না কেন ? মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "জোট রাখতে পারছে না তো আমি কী করব ? আমি এই ফ্রন্টকে নেতৃত্ব দিই না। যারা নেতা, তাদের এটা দেখা উচিত। তবে আমার সঙ্গে সমস্ত আঞ্চলিক ও জাতীয় দলের যোগাযোগ রয়েছে। আমি সেই সম্পর্ক বজায় রেখেছি।"
এদিন আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথায় প্রকাশ পেয়েছে জোটের অনেকেই তাঁকে ঠিকমতো পছন্দ করেন না। মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, "যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। অনেকেই আমাকে দেখতেই পারে না। তবে আমি দায়িত্ব পেলে এটুকু বলতে পারি… যদিও আমি তা চাই না। আমি বাংলার মাটি ছেড়ে কোথাও যেতে চাই না। এখানেই জন্মেছি, শেষ নিঃশ্বাস এখানেই ত্যাগ করব। কারণ, বাংলাকে আমি এতটাই ভালোবাসি। কিন্তু এটুকু আমি মনে করি, এখানে বসেও আমি এটা (ইন্ডিয়া জোট) চালিয়ে দিতে পারি।"
সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে মহারাষ্ট্রে ইন্ডিয়া জোট ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকেই জোটের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরত্ব নিয়ে জল্পনা তৈরি হচ্ছিল। বিশেষ করে সংসদের অধিবেশনের সময় যেভাবে ইন্ডিয়া জোটকে এড়িয়ে আম আদমি পার্টি বা সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস সেখান থেকেই কেউ কেউ বলতে শুরু করেছিল তাহলে কি ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে ! এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হল, জোট নেতৃত্বের আচরণ তিনি ভালোভাবে দেখছেন না।
মহারাষ্ট্র নির্বাচন নিয়েও মুখ খুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, "বিজেপির কাজই হল দেশে বিভাজন তৈরি করা। ভোটে হারের জন্য ভুল অনেকের রয়েছে। ভোট কাটাকাটিও একটা বড় ঘটনা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় মহারাষ্ট্রে সুতোর উপড়ে ঝুলছে বিজেপি। দল ভেঙে যাঁদের নেওয়া হয়েছিল তাদের দুটো গ্রুপের সমর্থনে আপাতত সরকার চালাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব এই সরকার কতদিন টিকবে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।"