কলকাতা, 1 অক্টোবর: রাজ্যের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পুজো শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব থেকেই 2024 সালের দুর্গোৎসবের সূচনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মঙ্গলবার দুর্গা পুজো উৎসবের সূচনার এই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় 'উৎসব উচ্চারিত সূচনা'। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন দুর্গোৎসবের সূচনা করলেও মণ্ডপ বা প্রতিমার উন্মোচন করেননি মুখ্যমন্ত্রী । যেহেতু এখনও পর্যন্ত পিতৃপক্ষ চলছে, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি ।
আগামিকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহর, শহরতলি ও জেলা মিলিয়ে প্রায় এক হাজারেরও বেশি পুজোর উদ্বোধন করবেন ৷ যেহেতু আগামিকাল দেবী পক্ষের সূচনা, তাই তিনি মণ্ডপ এবং প্রতিমার উদ্বোধন করবেন বলে জানা যাচ্ছে । তবে জেলার পুজোগুলির ক্ষেত্রে উদ্বোধন হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ।
এদিন বিকেল চারটের কিছু পরে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে এসে পৌঁছন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । সে সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, পার্থ ভৌমিক, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও ব্রাত্য বসু । ছিলেন শিলং রাজ্যের বিধায়ক নির্মল ঘোষ, তাপস চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রমূখ । যেহেতু এই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দুটি নতুন দমকল কেন্দ্র এবং 50 টি ফায়ার ব্রিগেডের বাইক উদ্বোধন করলেন, তাই এই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দফতরের আধিকারিকেরাও ।
উৎসবের মধ্যে উত্তর থেকে দক্ষিণ বিভিন্ন প্রান্তে বন্যার ভ্রূকুটি । এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এবার চারিদিকে বন্যা হয়েছে । আমি সব ক'টা জায়গায় মিটিং ও ত্রাণের ব্যবস্থা করেছি । সরকার থেকে প্রশাসন সকলেই তৎপর । দলের তরফ থেকেও সাধারণ মানুষকে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ৷ তবে সেক্ষেত্রে দলের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে না ।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "মানুষের মুখে হাসি না থাকলে উৎসবের আনন্দ থাকে না ।" এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একবার বাংলার বন্যাকে 'ম্যান মেড বন্যা' আখ্যা দিয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোশী নদীর জলে উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । আগে ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসেছিল দক্ষিণবঙ্গ । এখন নেপালের কোশী নদীর জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গে । এর কারণে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর, গাজোলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ।" মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সেবা করাটা মানুষের বড় ধর্ম, এটাই পুজো । এটাই উৎসব । মানুষের মুখে হাসি না-থাকলে কারও মুখে হাসি থাকে না । এমনকি দেবীর মুখেও হাসি থাকে না ।"
প্রসঙ্গত, এদিন এই মঞ্চ থেকে দুটি নতুন ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী । এর একটি হচ্ছে বাঁকুড়ার দুবরাজপুরে, অন্যটি হচ্ছে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায়। এই নিয়ে রাজ্যে দমকল কেন্দ্রের সংখ্যা হল 164। দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু জানালেন, মুর্শিদাবাদ এবং জঙ্গিপুরে আরও দুটি দমকল কেন্দ্র প্রায় প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে ৷ খুব শীঘ্রই সেগুলোও উদ্বোধন করা হবে । এতদিন পর্যন্ত সরু গলিতে ঢুকে আগুন নেভানোর জন্য রাজ্যের 236টি মোটরবাইক রয়েছে । আজ শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের মঞ্চ থেকে আরও 50টি মোটরবাইকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী । ফলে সংখ্যাটা বেড়ে হল 286 ।