কলকাতা, 27 মে: ঘূর্ণিঝড় রেমালের জেরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে রাজ্যের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ায় ব্যাহত জনজীবন। এই মুহূর্তে লোকসভা নির্বাচন চলায় প্রশাসনিকভাবে সবটাই দেখছেন মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকা । কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন ৷ রবিবার থেকে দফায় দফায় রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী সময় থেকে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে ত্রাণ এবং উদ্ধার কাজ নিয়েও তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । নবান্ন সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড় রেমালের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ মানুষের পরিস্থিতি কী তা জানতে মুখ্যসচিবকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । একইসঙ্গে মুখ্যসচিবের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন এখনও পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত এবং কত জনের মৃত্যু হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জল থইথই মহানগর, বিভিন্ন জায়গায় গাছ উপড়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রাজ্যজুড়ে প্রায় দেড় হাজারটি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে । এর মধ্যে দক্ষিণ 24 পরগনায় সবচেয় বেশি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে বলে খবর । রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দ্রুত বিদ্যুৎ ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলেও যেহেতু এখনও বৃষ্টিপাত চলছে এই অবস্থায় তা সম্ভব হচ্ছে না । দক্ষিণ 24 পরগনার সুন্দরবন ব্লকে এক হাজারেরও বেশি কাঁচাবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ।
রেমালের প্রভাবে গঙ্গাসাগর এবং কাকদ্বীপের সংযোগকারী জেটি লট-8 ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ আংশিক ক্ষতি হয়েছে আরও কয়েকটি জেটির । পরিবহণ দফতরের তরফ থেকে দ্রুত এগুলি ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । দেড় হাজারটিরও বেশি ক্যাম্প খোলা হয়েছে । এখনও পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া হয়েছে । যেহেতু এখনও পর্যন্ত ঝড় পুরোপুরি থেমে যায়নি তাই সুন্দরবনের বেশ কয়েকটি প্রত্যন্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর মুখ্যসচিব ব্লক ধরে ধরে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন ৷ আগামী 24 ঘণ্টার মধ্যেই প্রাথমিক তালিকা নবান্নকে পাঠাতে হবে জেলাগুলিকে। নবান্ন রাখছে কলকাতার প্রতি। নবান্নের তরফে কলকাতা পৌরনিগমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শহরের জমা জল দ্রুত নামানোর চেষ্টা করতে। ত্রাণ বা সরকারি সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও ধরনের রাজনীতির রং না-দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো সাহায্যের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে প্রশাসনকে কাজ করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন : রেমাল শক্তি হারালেও ঝোড়ো হাওয়ার দাপট কলকাতায়, বিকেল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি