সন্দেশখালি, 30 ডিসেম্বর: একবছর আগে সন্দেশখালির আন্দোলনে টাকার খেলা হয়েছিল ৷ সোমবার প্রথমবার সন্দেশখালির মাটিতে পা-দিয়ে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, যে অভিযোগগুলি উঠেছিল, সেসবই ভাওতা ছিল ৷ তাঁর কথায়, "আমি জানি এখানে টাকার অংকে খেলা হয়েছে ৷ পরে দেখলেন তো সবটাই ভাওতা ৷ মিথ্যে বেশিদিন চলে না ৷ মিথ্যে তো একদিন প্রকাশ পায় ৷"
এ দিন মঞ্চ থেকে মমতা সন্দেশখালির মহিলাদের উদ্দেশে বার্তায় বলেন, "কেউ ডাকলেই চলে যাবেন না ৷ বিজেপির টাকার প্রলোভনে পা দেবেন না ৷ দুষ্টু লোকের খপ্পড়ে পড়বেন না ৷ প্রশাসন যা করার দুয়ারে সরকারের মাধ্যমেই করবে ৷ প্রয়োজনে আপনার দরজায় আসবে ৷ তারা আপনাদের ব্যাপারটা দেখবে ৷"
তবে, একবছর আগে নারী নির্যাতন ও জমি দখল-সহ নানা অভিযোগ উঠেছিল শেখ শাহজাহান ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে ৷ সেই ইস্যুতে সরাসরি না-হলেও, মহিলাদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, "মেয়েরা, কেউ ডাকল আর চলে গেলেন, এমনটা করবেন না ৷ আপনাদের অধিকার, আপনাদের নিজস্ব ৷"
এর পরপরই সন্দেশখালির আন্দোলনে টাকার অংকের খেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "আমি জানি এখানে টাকার অংকে খেলা হয়েছে ৷ পরে দেখলেন তো সবটাই ভাওতা ৷ মিথ্যে বেশিদিন চলে না ৷ মিথ্যে তো একদিন প্রকাশ পায় ৷ আমি চাই যা হয়েছে সব ভুলে যেতে ৷ আমার মনে নেই। আমি ভুলে গিয়েছি ৷ আমি চাই সন্দেশখালির ছেলেমেয়েরা এক নম্বর জায়গায় যাক ৷ তাঁরা ভারতবর্ষে এক নম্বর হোক ৷"
সন্দেশখালির আন্দোলনের অন্যতম অভিযোগই ছিল, সেখানকার বাসিন্দাদের প্রতি বঞ্চনা ও অবহেলা ৷ তাই এ দিন মমতার ভাষণের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল সন্দেশখালি তথা উত্তর 24 পরগনার উন্নয়নের প্রসঙ্গ ৷ তিনি সন্দেশখালির ধুলিয়া-ধুপখালী সেতু-সহ প্রায় 123 কোটি টাকার 66টি প্রকল্পের ঘোষণা করেন ৷ একইসঙ্গে আরও 42টি প্রকল্পের সূচনা করেন তিনি ৷
বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণার সূত্রে, কাটমানি ইস্যুতে সন্দেশখালির মানুষকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য টাকা দিচ্ছে ৷ কিন্তু, কেউ টাকা চাইলে আপনারা দেবেন না ৷ আমরা যে টাকা দিচ্ছি, তার জন্য কোনও পয়সা কাউকে দেওয়ার দরকার নেই ৷ কারণ টাকাটা সরকারের ৷ আপনি পাচ্ছেন সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে ৷ তাই কেউ চাইলেও টাকা দেবে না ৷ এটা আপনাদের অধিকার ৷"
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে ফের কেন্দ্রকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি, "আজ যেটার নাম বাংলার বাড়ি, সেটাই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ৷ দীর্ঘদিন এই প্রকল্পের জন্য টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার ৷ এখন রাজ্যের হাতে কোনও ট্যাক্স নেই ৷ একটাই ট্যাক্স, জিএসটি ৷ যে টাকাটা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যায় ৷ ...সেই টাকা থেকে আমরা যা পাই, তা দিয়ে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে খরচ করছি ৷"