মালদা, 22 অগস্ট: মালদা মেডিক্যালে রক্তের দালাল চক্রের শিকড় অনেক গভীর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে ৷ বিশেষত গরমের মরশুমে সক্রিয়তা বাড়ে এই চক্রের ৷ রক্তের কারবারের সঙ্গে যুক্ত দু'জনকে জেরা করে তার প্রমাণ পেয়েছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ৷ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই চক্রের শিকড় শুধু মালদা নয়, ছড়িয়ে রয়েছে অন্য জেলাতেও ৷ ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে, জানিয়েছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ৷
মালদা মেডিক্যালে রক্তের দালাল চক্রের সক্রিয়তা নিয়ে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ কিন্তু, এই চক্র ভাঙতে কর্তৃপক্ষের সক্রিয়তা সে ভাবে দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ ৷ মঙ্গলবার এক রোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে থেকে এই কারবারের সঙ্গে জড়িত দু'জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে ৷ সেই সময় তারা রক্ত বিক্রি করছিল ৷ ধৃতদের নাম মহম্মদ আলিম শেখ ও খুদু দাস ৷ 42 বছর বয়সি আলিমের বাড়ি মালদা শহরের মিরচক বটতলি এলাকায় ৷ 40 বছরের খুদু পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড় এলাকার বাসিন্দা ৷
ইংরেজবাজার থানার পুলিশের একটি সূত্র অনুযায়ী, মালদা জেলা আদালতের অনুমোদনক্রমে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে ধৃতদের ৷ তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ অভিযুক্তদের জেরা করে এই কারবার সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে ৷
এর আগেও মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে থেকে দুই রক্ত বিক্রেতা ধরা পড়েছিল ৷ তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, তারা দু’জনই অভাবের দায়ে রক্ত বিক্রি করতে এসেছিল ৷ কিন্তু এবার যে দুই কারবারি ধরা পড়েছে, তারা কোনও অভাবে রক্ত বিক্রি করতে আসেনি বলেই খবর ৷ তারা এই চক্রের অন্যতম দুই মাথা ৷ যদিও তদন্তের স্বার্থে এ নিয়ে বেশি কিছু জানাতে রাজি হয়নি পুলিশ ৷
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব শুধু বলেন, "টাকার বিনিময়ে রোগীদের রক্ত বিক্রির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ তাদের জেরা করে এই চক্রের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চলছে ৷"
এদিকে, এই ঘটনার জেরে ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মালদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, "ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে সিসি ক্যামেরা রয়েছে ৷ সেই ক্যামেরার সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে ৷ শুধু তাই নয়, সেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগেরও চিন্তাভাবনা করছি আমরা ৷ যে কোনও মূল্যে এখান থেকে রক্তের দালাল চক্রকে তাড়াতে হবে ৷ এদের রুখতে গোটা হাসপাতাল চত্বরে কীভাবে নিরাপত্তা বাড়ানো যায়, সেটাও ভাবা হচ্ছে ৷"