শ্রীরামপুর, 7 জুলাই: পুরীর পর ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম রথ উৎসব পালিত হয় মাহেশের রথকে ঘিরে ৷ পুরী মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ বেরোতেই প্রাচীন মাহেশের রথের রশিটে টান পড়ে ৷ অন্যথা হল না এবারও ৷ রীতি মেনে রথের দড়ি একবার ছোঁয়ার জন্য রবিবার মাহেশের রথে ছিল লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর ভিড় ৷
628 বছরে পা দিল মাহেশের রথযাত্রা। মাহেশে যে রথে চড়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা মাসির বাড়ি যান সেই রথ মার্টিন বার্ন কোম্পানির তৈরী ৷ 138 বছর আগে এই কোম্পানি লোহার রথ বানিয়ে দেয় ৷ তার আগে যদিও কাঠের রথই ব্যবহার হত ৷ বর্তমানে এই রথের দেখভাল করেন কলকাতা শ্যামবাজারের বসু পরিবার। সেই পরিবারের সদস্য বিশ্বজিৎ বসু বলেন, "প্রথা মেনে এই রথের উৎসব পালন করা হচ্ছে ৷ পূর্ব পুরুষেরা যে পথ দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছেন, সেইভাবে আমরা কর্তব্য পালন করে চলেছি ৷ বংশ পরম্পরায় রথের উৎসবে অংশগ্রহণ করে বসু পরিবার ৷"
মন্দিরের সেবাইত তমাল অধিকারী বলেন, "জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় এখানে ৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি ৷ মহাপ্রভুকে এক ঝলক দেখার জন্য সকাল থেকে ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে ৷" এদিন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে একাধিক সোনার গয়না, সোনার মুকুটে রাজবেশে সাজিয়ে রথে তোলা হয় ৷ মাহেশের জগন্নাথ দেব রথে চড়ে পাড়ি দেয় মাসির বাড়ির দিকে। অগণতি ভক্তদের ভিড়ে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় এলাকা ৷
বিভিন্ন জায়গায় ছিল নাকা চেকিংয়ের বন্দোবস্ত। সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ারের পাশাপাশি একাধিক জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালায় পুলিশ । মহিলা পুলিশ-সহ এক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে । শ্রীরামপুরের একাধিক ঘাটে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। রাস্তার দু'পাশে ভক্তদের জন্য খোলা হয় জলছত্র ৷
জানা যায়, স্বপ্নাদেশে পাওয়া দারু (নিম) কাঠ দিয়ে তৈরী জগন্নাথ, বলরাম, সুুভদ্রার মূর্তি ছয় শতকেরও বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছে মাহেশে ৷ কথায় বলে খিচুড়ি, অন্ন, পায়েস এই তিন নিয়ে মাহেশ। রথযাত্রায় জগন্নাথ মন্দিরের পাশে স্থানপিঁড়ির মাঠে বসেছে মেলা। সকাল থেকে চলছে পুজো পাঠ, প্রথা মেনে ভক্তরা ভিড় জমিয়েছেন জগন্নাথ মন্দিরে।