বর্ধমান, 5 ফেব্রুয়ারি: নামেই শুধু অর্জুন নয় ৷ তার লক্ষ্য ও মনের জোরও যে অর্জুনের সমান, তা প্রমাণ করল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন মাঝি ৷ হাসপাতালের শয্যায় বসেই পরীক্ষা দিল সে ৷ ঘুমের মধ্যে গভীর রাতে সাপে কামড়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন মাঝিকে ৷ তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা ৷
কিন্তু, রাত পোহালেই যে মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা ৷ বাংলা ও ইংরেজি হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু, ইতিহাস পরীক্ষা দিতে না পারলে, পুরো বছরটাই যে নষ্ট ৷ তাই স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিবার ৷ এরপর পরীক্ষা কেন্দ্রের সহযোগিতায় জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমতিতে হাসপাতাল থেকেই ইতিহাস পরীক্ষা দিল অর্জুন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে ৷
ভাতার বয়েজ স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন মাঝি ৷ রবিবার রাতে ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে ওঠে সে ৷ অর্জুনের চিৎকারে বাড়ির বাকিরা ঘুম থেকে উঠে পড়েন ৷ সে জানায় পায়ে কিছু একটা কামড়েছে ৷ এর পরেই তার বাবা-মা দেখে পায়ে সাপের কামড়ের দাগ ৷ দ্রুত অর্জুনকে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে ৷ আপাতত বিপদমুক্ত অর্জুন ৷ কিন্তু, আজ মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা ছিল ৷ পরীক্ষা না দিতে পারলে পুরো বছরটাই নষ্ট হয়ে যাবে ৷
তাই বাড়ির তরফে অর্জুনের স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে যোগাযোগ করা হয় বলগোনা হাইস্কুলে ৷ সেখানেই অর্জুনের মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে ৷ সেই মতো, পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ওই এলাকার মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের কনভেনর এবং সেন্টারের পর্যবেক্ষককে বিষয়টি জানানো হয় ৷ তাঁদের অনুমতিতে স্কুলের একজন শিক্ষক হাসপাতালেই প্রশ্ন ও উত্তরপত্র নিয়ে পৌঁছে যান নির্দিষ্ট সময়ে ৷ অসুস্থ থাকলেও, মনের জোরেই হাসপাতালের শয্যায় বসে ইতিহাস পরীক্ষা দিল অর্জুন ৷
অর্জুনের বাবা উৎপল মাঝি বলেন, "আমার ছেলে অর্জুন মাঝি এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৷ গতকাল রাতে ওকে সাপে কামড়ায় ৷ রাতেই হাসপাতালে ভরতি করা হয় ৷ কিন্তু ও ভয়ে আতঙ্কিত হয়নি ৷ মনের জোরে পরীক্ষায় বসেছে ৷ হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে ৷" শিক্ষক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, "আমি হাসপাতালে গার্ড দিতে এসেছি ৷ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন মাঝিকে সাপে কামড়েছে ৷ তার চিকিৎসা চলছে ৷ আপাতত সে সুস্থ আছে ৷ ভাতার হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন: