কোচবিহার, 3 সেপ্টেম্বর: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দিনহাটার সাহেবগঞ্জে কাঁটাতারের ওপারে বাংলাদেশ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ছিন্নমস্তা মায়ের মন্দির । সোমবার কৌশিকী অমাবস্যার রাতে সেই মন্দিরে অনুষ্ঠিত হল ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো । সেই পুজোতে হাজির ছিলেন হাজার হাজার মানুষ । রাতভর খোলা থাকল কাঁটাতারের গেট । গত 50 বছরের বেশি সময় ধরে এভাবেই পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই মন্দিরে ।
এই পুজোকে ঘিরে জড়িয়ে আছে একাধিক ধর্মীয় বিশ্বাস । কথিত আছে, আশির দশকে এই এলাকায় প্রচণ্ড খরা দেখা দিয়েছিল ৷ সেই খরা থেকে রক্ষা পেতে প্রথমে ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো করতে বলেছিলেন এক তান্ত্রিক । পুজোর পর প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হয় । এরপর থেকেই প্রচলিত এই পুজো । গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন, ছিন্নমস্তা মায়ের পুজোয় যাঁরা মানত করেন তাঁদের সকলের মনস্কামনা পূর্ণ হয় ৷ সারারাত ধরে ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো হয় । সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় পুজোর প্রস্তুতি ৷ রাতে বলি এবং ভোরবেলায় প্রসাদ বিতরণ হয় ।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পুজো হওয়ার কারণে প্রচুর বিএসএফ এবং সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ মোতায়েন থাকে এখানে । সারারাত ধরে কাঁটাতারের গেট খোলা থাকে । সেখান দিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে সঠিক ভারতীয় পরিচয় পত্র দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন পুণ্যার্থীরা । দিনহাটা, কোচবিহার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এমনকি কলকাতা ও নিম্ন অসমের বহু মানুষ এই পুজোয় অংশ নিতে আসেন । এই পুজোকে ঘিরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার মাঝে মহামিলন ক্ষেত্র তৈরি হয় ।
সোমবার রাতে ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো দিতে এসেছিলেন এনবিএসটিসি চেয়ারম্যান পার্থপ্রতীম রায় । তিনি বলেন, "প্রতিবছরই ভাবি আসব তবে এবার মায়ের পুজো দিতে আসতে পেরেছি । সকলে ভালো থাকুক ৷ মায়ের কাছে সকলের মঙ্গল কামনা করি ৷ প্রতিবেশী দেশেও শান্তি ফিরে আসুক ৷" পুজো দেখতে আসা দিনহাটার দুর্গানগরের বাসিন্দা তপন বর্মন বলেন, "প্রতিবছরের মতো এবারেও পুজো দেখতে এসেছি । গেটে আধার কার্ড দেখিয়ে ঢুকতে হয়েছে ।"