বারাসত, 30 এপ্রিল: প্রশ্ন শুনে মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিকদের 'স্টুপিড' বললেন ব্যারাকপুরের এক সময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা তড়িৎবরণ তোপদার ৷ দিলেন ধমকও । মঙ্গলবারের এই ঘটনা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক । তবে, এই নিয়ে বিশেষ হেলদোল নেই প্রাক্তন এই বাম সাংসদের ।
ব্যারাকপুর লোকসভার সিপিএমের তারকা প্রার্থী দেবদূত ঘোষের মনোনয়নপত্র জমা দিতে তাঁর সঙ্গে মঙ্গলবার বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে আসেন দলের বর্ষীয়ান নেতা তড়িৎবরণ তোপদার । দীর্ঘ প্রায় 20 বছর ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন সিপিএমের এই হেভিওয়েট নেতা । তবে, রাজ্যে বাম শাসনের অবসানের পর দীর্ঘদিনের গড় ব্যারাকপুরে ফিকে হতে শুরু করে লাল ঝান্ডা । দাপট বেড়েছে তৃণমূলের । 2009 সালে লোকসভা নির্বাচনে তৎকালীন শাসক নেতা দীনেশ ত্রিবেদীর কাছে হেরে যান ব্যারাকপুরের দাপুটে বাম নেতা তড়িৎবরণ তোপদার । তারপর থেকে সিপিএমের সক্রিয় রাজনীতিতে সে ভাবে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি । তবে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে আজও তাঁর প্রাসঙ্গিকতা অটুট ! আর তা বুঝতে পেরেই সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের যুযুধান দুই প্রার্থী তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক এবং বিজেপির অর্জুন সিং ।
সেই বিষয়েই প্রশ্ন করা হলে তড়িৎবরণবাবু বলেন, "শুধু ওরা দু'জন নয়, দেবদূতও এসেছিল আমার কাছে । আমি পার্থ, অর্জুন দু'জনকেই বলে দিয়েছি আমাদের দলের প্রার্থী রয়েছে । তাই, আশীর্বাদ করার সঙ্গে রাজনীতির পার্থক্য রয়েছে ।" এরপরই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনি ওই দু'জনকে আশীর্বাদ করলেও দলীয় প্রার্থীর হয়েই লড়াইয়ের ময়দানে নামবেন ? তাতেই মেজাজ হারিয়ে সিপিএম নেতা তড়িৎবরণ তোপদার বলেন,"না ! আমি আমার প্রার্থীকে হারিয়ে দেব ! ভেরি স্টুপিড কোয়েশ্চেন ! আমি বলছি আমার প্রার্থী । আর আপনি বলছেন লড়াইয়ের ময়দানে নামব কি না !"
বিরোধী দলের প্রার্থীরা আপনার কাছে যাচ্ছে, এর ব্যাখা কীভাবে দেবেন ? এর জবাবে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ বলেন, "এর ব্যাখা ওরাই দিতে পারবে । আমাকে না বলে ওদেরকে জিজ্ঞাসা করুন । ওরাই তো এর জবাব দিতে পারবে ।"
এদিকে, দীর্ঘদিন বাদে এদিন তাঁকে রাজনীতি ময়দানে দেখা যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,"2009 সালে হারার পর থেকে ঘরে ঢুকে যাইনি । প্রতিনিয়ত আমার সঙ্গে মানুষের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে । মানুষের মধ্যেই ছিলাম, এখনও আছি । তাই, এই কথার আপত্তি রয়েছে ।" এরপরই অন্য প্রশ্নে যাওয়ার চেষ্টা করলে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে ধমক দেন তিনি । বলেন, "আমার সঙ্গে একদম 'চালাকি' করার চেষ্টা করবেন না । ঝট করে অন্য প্রশ্নে যাবেন না ।"
অন্যদিকে, ব্যারাকপুরের রাজনীতিতে এখনও তিনি প্রাসঙ্গিক কি না, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তড়িৎবরণ তোপদার বলেন,"ব্যারাকপুরে রাজনীতি যখন করি তখন প্রাসঙ্গিক থাকাটা উচিত । যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন থাকবে এই প্রাসঙ্গিকতা । আর বাকিটা তো আপনারই ভালো বলতে পারবেন ।"
আরও পড়ুন :