রায়গঞ্জ, 20 এপ্রিল: দলীয় সভা থেকে আবারও ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, অন্য একটি প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, "দিল্লির কুকুর হওয়ার চেয়ে রয়াল বেঙ্গল হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচা অনেক ভালো!" দ্বিতীয় দফায় রায়গঞ্জে ভোট। শনিবার তার আগে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর হয়ে সেখানে জনসভা করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর বালুরঘাটেও তাঁর রোডশোও করার কথা রয়েছে। এই আসনে বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে ভোটে লড়বেন তৃণমূলের প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র।
কেন রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণীকে প্রার্থী করেছে দল, তা-ও জানালেন অভিষেক ৷ তিনি বলেন, "ওঁরা যে ভাষা বোঝে সেটাই বলা হবে । আপনারা দল ভাঙার রাজনীতি জানলে, তৃণমূলও জানে । কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপি ছাড়ার পরেই ওঁর বাড়িতে দু’দিন ধরে আয়কর দফতরের অভিযান চলেছিল । তা-ও উনি নত হননি। লড়াই করেছেন। আমাদের ভয় দেখিয়েছে। ধমকেছে এবং চমকেছে। ইডি-সিবিআই ঘর-পরিবার, মা-বউ-বাচ্চা কাউকে ছাড়েনি ৷ তা-ও আজ মাথা উঁচু করে লড়াই করছি ৷ দিল্লির কুকুর হওয়ার চেয়ে রয়্যাল বেঙ্গল হয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচা ঢের ভালো ৷" প্রসঙ্গত, আজ মালদার গাজোলের সভা থেকে মমতাও বলেন, "বাংলা ভিক্ষা চাইবে না ৷ আমি আপনাদের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ৷" তৃণমূল সুপ্রিমোর সুরেই রায়গঞ্জের সভা থেকে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
রায়গঞ্জে জনসভা থেকে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অভিষেক বলেন, "যেভাবে এখানে জনসমাগম বেড়েছে তাতে পরের বার আরও বড় ময়দানের ব্যবস্থা করতে বলব । রায়গঞ্জে এই প্রথম বার জিততে চলেছে তৃণমূল।" এরপরই রাজ্যের বাম-কংগ্রেস জোটকে নিশানা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, "2019 সালে বিজেপির হাত মজবুত করেছে কংগ্রেস-সিপিএম ৷ 2009 সাল পর্যন্ত এখানে সাংসদ ছিলেন কংগ্রেসের। তার পরের বার ছিলেন সিপিএমের সাংসদ। গতবার বিজেপির প্রার্থী জেতেন। কিন্তু মানুষকে ভুল পথে চালিত করেছেন মহম্মদ সেলিম এবং দীপা দাশমুন্সি। এই ভোট পেলে তৃণমূলের সাংসদ জিততেন। 2019 সালে আসলে বিজেপির হাত মজবুত করেছেন ওঁরা ।"
তারপর দিল্লির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘দিল্লিতে ভূমিকম্প আসা চাই। যাঁরা ভাগাভাগির কথা বলে, হিন্দু-মুসলমানে লড়াই করায়, তাঁদের সরাতেই হবে । মোদী বলছেন 400 পার । আমি বলি, ওঁদের 404 ভোল্টের ঝটকা দিতে হবে। যাঁরা আপনার ভোট নিয়ে আপনার উপরেই জুলুম করে, তাঁদের জবাব দেওয়া উচিত।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী 'মন কী বাত' করেন । গত 5 বছরে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের কেউ এসে কি জিজ্ঞেস করেছিল, কিছু প্রয়োজন আছে ? খাবেন কিছু ? অনেক লোক লকডাউনে বাইরে আটকে ছিলেন। তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ কোনও পদক্ষেপ করেছিলেন ? তৃণমূল শুধু ঈশ্বর, আল্লার সামনে নত হয় । দিল্লির সামনে নয় ।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, "অন্য যে রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের লড়াই, সেখানে কংগ্রেসের লোক বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তবে এখানে গঙ্গা উলটো দিকে বইছে। বিজেপি ছেড়ে বহু মানুষ তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন ।’’ কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘আমরা থাকতে এনআরসি হবে না। আমরা তো ভাড়াটে, জনতাই মালিক। গোটা দেশেও মালিক জনতাই । শুক্রবার প্রথম দফার ভোট হয়েছে । তাতে তৃণমূল প্রার্থীরাই জিতছেন।"
আরও পড়ুন: