আসানসোল, 22 ফেব্রুয়ারি: বুধবার রাত পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ যুবকের দেহ আটকে হুলস্থুল কাণ্ড চলল নিয়ামতপুরে । পথ অবরোধ ও বিক্ষোভে বিরাট উত্তেজনা ছড়ায় । পুলিশের অনুরোধেও জিটি রোড ছাড়েনি বিক্ষোভকারীরা । তাদের একটাই দাবি, যুবকের সঙ্গে থাকা যুবতীকে আড়াল করছে কেন পুলিশ । তাঁকে গ্রেফতার করতেই হবে । শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ময়দানে নামানো হয় কমব্যাট ফোর্সকে । লাঠিচার্জ করে বলপূর্বক বিক্ষোভ ও অবরোধ তোলা হয় রাস্তা থেকে বলে অভিযোগ । রাতে সৎকার করা হয় 21 বছরের রোহন প্রসাদ রামের দেহ ।
মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোল দক্ষিণ থানার অন্তর্গত কুমারপুর এলাকায় একটি হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় রোহন প্রসাদ রাম নামে ওই যুবকের দেহ । ওই যুবকের বাড়ি কুলটি নিয়ামতপুরের চক্রবর্তী পাড়ায় । হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছিল, ওই যুবকের সঙ্গে হোটেলের ঘরে এক যুবতীও ছিলেন । কিন্তু ওই যুবতী সকালে চলে যান । দুপুর পর্যন্ত ঘর থেকে কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয় । তখনই তারা পুলিশে খবর দেয় । পুলিশ এসে তালা ভেঙে হোটেলের ওই ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার করে রোহন প্রসাদ রামের গুলিবিদ্ধ দেহ ।
রোহনের পরিবার সূত্রে খবর, কুলটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি । সোমবার কলেজ যাব বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন । কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি । এরপর মঙ্গলবার সকালে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে একটি নিখোঁজের ডাইরিও করা হয়েছিল । ওইদিনই দুপুরে উদ্ধার হয় রোহন প্রসাদ রামের গুলিবিদ্ধ দেহ । বুধবার রোহন প্রসাদ রামের ময়নাতদন্ত হয় । ময়নাতদন্তের পর বিকেলে নিয়ামতপুরে দেহ পৌঁছলে এলাকাবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে । তারা দেহ আটকেই জিটি রোডে বসে বিক্ষোভ দেখায় । শয়ে শয়ে এলাকাবাসী পথ অবরোধ করে রাখে । তাদের দাবি রোহন প্রসাদ রামের সঙ্গে যে যুবতী ছিলেন হোটেলে তাঁকে পুলিশ কেন আড়াল করতে চাইছে? তাঁকে সামনে নিয়ে আসতে হবে এবং তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে ।
দীর্ঘক্ষণ ধরে এই অবরোধ চলে ৷ যার ফলে অবরুদ্ধ হয়ে যায় আসানসোল বরাকর জিটি রোড । দাঁড়িয়ে পড়ে শয়ে শয়ে বাস ও অন্যান্য গাড়ি । বুধবার প্রাথমিক তদন্তের পর আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানিয়েছিল, এটি একটি আত্মহত্যার ঘটনা । কিন্তু ওই যুবতীর বিষয়ে কোনো কথাই জানাতে চাইছে না পুলিশ । হোটেলে ঘর নেওয়ার সময় যদি যুবতী তাঁর নিজের পরিচয়পত্র দিয়ে থাকে তাহলে সেখান থেকেই ওই যুবতীর পরিচয় সহজেই জানা যায় । কিন্তু তারপরও পুলিশ তাঁকে আড়াল করতে চাইছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে । তদন্তের কারণেই এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না ।
অন্যদিকে বুধবার ওই হোটেলে আসে চার সদস্যের ফরেনসিক দল । রোহনের দেহ যে ঘরে পাওয়া গিয়েছিল সেই রুম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় । যদিও বিষয়টি নিয়ে কিছু জানাতে চায়নি ফরেনসিক বিভাগ । হোটেলটিকে তদন্তের স্বার্থে ইতিমধ্যেই সিল করেছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: