মালদা, 12 নভেম্বর: পড়ুয়াদের ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্তে স্কুলে এসেছে জেলা প্রশাসনের তৈরি কমিটি ৷ কমিটিতে রয়েছেন মহকুমাশাসক, মহকুমা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক), মহকুমা পুলিশ আধিকারিক এবং স্থানীয় থানার আইসি ৷ স্কুলের অফিস ঘরের আলমারির নীচে চোখ পড়তেই তাজ্জব তদন্তকারী আধিকারিকরা ৷ উঁকি মারছে মদের বোতল ! পাশে রাখা রয়েছে ডিমের ট্রে ৷ মালদার স্কুলে এমন দৃশ্য়ে হতবাক হয়ে গেলেন প্রশাসনিক কর্তারা ৷ ঘটনায় পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন মহকুমাশাসক ৷
মালদায় এখনও পর্যন্ত তিনটি স্কুলে ট্যাবের জন্য বরাদ্দ টাকা কেলেঙ্কারির খবর মিলেছে ৷ তিনটি স্কুলের 149 জন পড়ুয়ার সরকারি ট্যাবের টাকা অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে বলে অভিযোগ ৷ এই খবর পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেন মালদার জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া ৷ তদন্তের জন্য গঠন করেন কমিটি ৷ তাঁর নির্দেশে তিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস ৷ সোমবার প্রতিটি স্কুলে যায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি ৷
এদিন, হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের কনুয়া ভবানীপুর স্কুলে তদন্তে যান চাঁচলের মহকুমাশাসক সৌভিক মুখোপাধ্যায় ৷ সঙ্গে ছিলেন মহকুমা স্কুল পরিদর্শক শর্মিলা ঘোষ-সহ চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা এবং হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার ৷ তাঁদের উপস্থিতিতেই স্কুলের আলমারির নীচ থেকে বেরিয়ে আসে মদের বোতল ৷
ঘটনা প্রসঙ্গে মহকুমাশাসক বলেন, "ট্যাব নিয়ে তদন্তের বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না ৷ তবে স্কুলে মদের বোতল উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি ৷" ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা চৌধুরী বলেন, "প্রশাসনের কমিটি তদন্ত করে গিয়েছে ৷ আমাকে জেলায় তলব করা হয়েছে ৷ সেখান থেকে ফিরে আসার পরই আমি এই বিষয়ে কিছু বলব ৷ মদের বোতল উদ্ধারের ঘটনায় কোনও মন্তব্য করব না ৷"
ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনার তদন্তে এদিন হবিবপুরের কেন্দপুকুর হাইস্কুলেও যান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক অনিন্দ্য সরকারও ৷ এই স্কুলের 91 জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি ৷ তদন্ত চলাকালীন বাইরের কাউকে স্কুলের আশেপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি ৷ এই স্কুল থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শক চলে যান গাজোলের ডোবা খোকসান কেআর হাইস্কুলে ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন গাজোল থানার আইসি চন্দ্রশেখর ঘোষাল-সহ আরও অনেকে ৷ স্কুলের 24 জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা কীভাবে অন্য অ্যাকাউন্টে গেল ? তদন্ত করেন তাঁরা ৷ যদিও তদন্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বাণীব্রত দাস ৷ তবে জানা গিয়েছে, তিনটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককেই জেলায় তলব করা হয়েছে ৷