বংশীহারি, 12 জানুয়ারি: রবিবার ছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার 29তম বইমেলার শেষদিন ৷ বুনিয়াদপুর ফুটবল মাঠে এই বইমেলার আয়োজন হয় ৷ সেখানে এবার ছিল রাজবংশী ভাষার বইয়ের স্টলও ৷ কিন্তু, থাকলে কী হবে ! সোমবার থেকে শুরু করে শেষদিনেও রাজবংশী ভাষার বই কিনতে খুব একটা ভিড় দেখা গেল না স্টলে ৷
এ নিয়ে মূলত, আয়োজক কমিটি থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন ওই পাবলিকেশনের কর্ণধার এবং রাজবংশী ভাষার বই কিনতে আসা হাতেগোনা কয়েকজন গ্রাহক ৷ তাঁদের অভিযোগ, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বইমেলায় যে রাজবংশী ভাষার প্রকাশনা সংস্থা স্টল দিয়েছে, তা অধিকাংশ মানুষ জানেই না ৷
আর এ নিয়ে মানুষকে অবগত করতে মেলা কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়েনি ৷ মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার হয়নি ৷ লিফলেটও বিলি হয়নি ৷ উত্তরবঙ্গের পেশা ভিত্তিক জনজাতির কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও জীবিকা নিয়ে নানান বইয়ের সম্ভার ছিল বুনিয়াদপুর বইমেলার ওই বুকস্টলে ৷
এ নিয়ে স্বাধীন সরকার নামে এক ক্রেতা জানান, "বুনিয়াদপুর ফুটবল মাঠে এই প্রথম রাজবংশী ভাষার বই পাওয়া যাচ্ছে ৷ আমরা রাজবংশী সমাজের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খুঁজলেও, সেই বই পাই না ৷ কিন্তু, এই বইমেলাতে যে ওই সমস্ত বই পাওয়া যাচ্ছে আমরা তাতে খুব খুশি ৷ কিন্তু, প্রশাসনের উচিত ছিল, আরও একটু প্রচারের ব্যবস্থা করা ৷"
দিনাজপুর লোকসংস্কৃতি ও লোকনাট্য কমিটির সদস্য সৌরভ রায় বলেন, "রাজবংশী ভাষার উপর যে সকল লোকজন বই পড়েন, তাঁরা জানতেই পারেনি যে, এবারের বইমেলাতে তাঁদের ভাষার উপর বই এসেছে ৷ সমস্ত উত্তরবঙ্গের বই এখানে এলেও লোকজন জানতে না পারার কারণেই বইমেলাতে রাজবংশী ভাষার বই বিক্রি হচ্ছে না একদম ৷ মূলত, প্রশাসন এবং কমিটির গাফিলতির কারণেই বই বিক্রি একদম নেই বললেই চলে ৷"
মেলা কমিটির তরফে স্বীকার করা হয়েছে যে, তারা প্রচার একেবারেই করেনি ৷ কিন্তু, এর পিছনে তাদের যুক্তি, বইমেলায় রাজবংশী ভাষার বুকস্টল আছে, তা আয়োজকরা জানতই না ! বুনিয়াদপুর বইমেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুভাষ ভাওয়াল বলেন, "আমরা লটারির মাধ্যমে বিভিন্ন স্টল ভাগ করেছি ৷ তাই আমরা জানতাম না, কোচবিহার থেকে রাজবংশী ভাষার বইয়ের প্রকাশনা সংস্থা এসেছে ৷ আমরা যদি জানতাম, তাহলে মাইকিং করে বইমেলার পক্ষ থেকে প্রচার চালাতাম ৷ দক্ষিণ দিনাজপুরের রাজবংশী এবং সেই ভাষার চর্চা করেন যাঁরা, তাঁর যাতে বই কিনতে যায়, সেই বার্তা দিতাম ৷