ETV Bharat / state

'ইউ-টার্ন নেব না', ভোটে জমানত খুইয়ে যাদবপুরবাসীকে আশ্বাস সৃজনের - Srijan Bhattacharya

Srijan Bhattacharya's Assurance To People: অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছিল, সৃজন ভট্টাচার্য 'দারুণ প্রার্থী' ! বক্তব্যও ভালোই রাখেন। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল সায়নী ঘোষ বড় ব্যবধানে হারালেন সৃজনকে । সায়নী ঘোষের নিকটম প্রতিপক্ষও হয়ে উঠতে পারেননি সৃজন।

Srijan Bhattacharya
সৃজন ভট্টাচার্য (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 9, 2024, 9:05 AM IST

কলকাতা, 9 জুন: লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছিল 'দারুণ প্রার্থী' ! রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তৃণমূলের সায়নী ঘোষের থেকে 'বেশ ভালো'। বক্তব্যও ভালোই রাখেন। কিন্তু, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল সেই সায়নী ঘোষই সৃজনকে গোল দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। শুধু তাই নয়, সায়নীর নিকটম প্রতিপক্ষও হয়ে উঠতে পারলেন না সৃজন।

সায়নীর নিকটম প্রতিপক্ষ হওয়া তো দূর, জামানত ধরে রাখতেও পারলেন না। এখন নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে যাদবপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন সিপিএমের সৃজন । একই সঙ্গে তিনি আশ্বস্থ করছেন, "ইউ-টার্ন নেব না!" রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার লাইন ধার করে সৃজন সোশাল মিডিয়ায় লিখছেন, "আর যাই হোক, পলাতক নই..."।

একই সঙ্গে সৃজনের কথায়, আইএসএফ-ভাঙর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় আলাদা লড়ে সিপিআই(এম) এবং আইএসএফ, দুজনেরই ভোট কমেছে বলেই দাবি তাঁর। যাদবপুরবাসীর উদ্দেশ্য সৃজনের বার্তা," হেরেছি। তবে, হাল ছাড়িনি। খুব কঠিন লড়াইতে, ময়দানে থাকতে এসেছি। জিততে শিখতে এসেছি। এখানে কোনও শর্টকার্ট নেই। ইউ-টার্ন তো একেবারেই নেই । রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার মতো - "আর যাই হোক, পলাতক নই..."।

সৃজনের কথায়, "যাদবপুর লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা আছে। তার মধ্যে ৬টি বিধানসভা এলাকায় ২০২১-এর তুলনায় সামান্য হলেও ভোট বেড়েছে আমাদের। ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় আলাদা লড়ে সিপিআই (এম) এবং আইএসএফ, দুজনেরই ভোট কমেছে। যে ২,৫৮,৭৩২ জন সহনাগরিক ভোট দিলেন আমাদের - তাঁদের ধন্যবাদ। যাঁরা ভোট দিলেন না, তাঁদেরও ভরসার যোগ্য হয়ে উঠতে চেষ্টা করব আগামী দিনে। আমি এই ভোটের ফলাফলকে রাজনৈতিক পরাজয় হিসেবেই দেখব। তবে, এখান থেকেই নতুন উদ্যমের উপাদানও খুঁজতে চাইব।"

তিনি বলেন, "আমরা এই ভোটের প্রচারপর্ব জুড়ে রুজি-রুটি-কাজের ইস্যুগুলিকে সামনে এনে তৃণমূল-বিজেপি'র প্রচলিত তরজার বাইরে এক বিকল্প ভাষ্য গঠনের চেষ্টা করেছি। নির্বাচনের ফল বলছে, ধ্বংসাত্মক বিজেপি কমলো দেশজুড়ে, রাজ্যজুড়েও। এটা আমাদের পক্ষে অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক। তৃণমূল-বিরোধী মানুষের কাছে বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠার প্রয়াস আমাদের জারি রাখতে হবে। আমরা বিগত পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমুল-বিজেপি'র বাইনারি খানিকটা ভেঙে দিতে পেরেছিলাম। এই ভোটে আবার সে দেওয়াল উঠে গিয়েছে। আরএসএস'এর ভূমিকা আছে এ প্রশ্নে। আমাদের সামনে কাজ অনেক। '২৬'এর ভোটের আগে আবার ভাঙতে হবে তৃণমূল-বিজেপি'র সাম্প্রদায়িক বাইনারি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলতে হবে জীবন-জীবিকার কথা ।"

এর সঙ্গেই সিপিএমের যাদবপুরের প্রার্থী বলেন, "এই নির্বাচনে কংগ্রেস কর্মীরা আমাদের সাহায্য করেছেন। সাহায্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি ও ব্যক্তি। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, এমন অনেক মানুষও বিভিন্নভাবে পাশে থেকেছেন আমাদের। আমি সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই। মিডিয়ার কর্মীরা, যাঁরা আমাদের প্রচারের খবর সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানাই। ভোট-প্রক্রিয়া চলাকালীন ও ভোট-পরবর্তী সময়ে আমাদের পার্টি কর্মীদের উপর সন্ত্রাসের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রশাসন আংশিকভাবে সক্রিয়, পুরোটা নয়। যাঁরা জিতেছে, তাঁরা দায়িত্বশীল ও সংযত হবে, এ প্রত্যাশা স্বাভাবিক। যদি অন্যথা হয়, আত্মরক্ষার অধিকার আমাদের দেশের সংবিধানে আছে - এ কথা ভুলে যাব না আমরা কেউ ।"

সব শেষে সৃজনের বক্তব্য, "এই ৭৭ দিন ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এক বিপুল শিক্ষণীয় জার্নি হয়ে থেকেছে। এত মানুষের ভালবাসা, স্নেহ ও পরামর্শ পেয়েছি, যা আমার সারাজীবনের পাথেয় হয়ে থাকল। যাদবপুরের যে কোনও মানুষ, তাঁর প্রয়োজনে আমার সঙ্গে, আমাদের সঙ্গে, যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা আছি। আমরা থাকব।"

কলকাতা, 9 জুন: লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছিল 'দারুণ প্রার্থী' ! রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তৃণমূলের সায়নী ঘোষের থেকে 'বেশ ভালো'। বক্তব্যও ভালোই রাখেন। কিন্তু, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল সেই সায়নী ঘোষই সৃজনকে গোল দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। শুধু তাই নয়, সায়নীর নিকটম প্রতিপক্ষও হয়ে উঠতে পারলেন না সৃজন।

সায়নীর নিকটম প্রতিপক্ষ হওয়া তো দূর, জামানত ধরে রাখতেও পারলেন না। এখন নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে যাদবপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন সিপিএমের সৃজন । একই সঙ্গে তিনি আশ্বস্থ করছেন, "ইউ-টার্ন নেব না!" রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার লাইন ধার করে সৃজন সোশাল মিডিয়ায় লিখছেন, "আর যাই হোক, পলাতক নই..."।

একই সঙ্গে সৃজনের কথায়, আইএসএফ-ভাঙর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় আলাদা লড়ে সিপিআই(এম) এবং আইএসএফ, দুজনেরই ভোট কমেছে বলেই দাবি তাঁর। যাদবপুরবাসীর উদ্দেশ্য সৃজনের বার্তা," হেরেছি। তবে, হাল ছাড়িনি। খুব কঠিন লড়াইতে, ময়দানে থাকতে এসেছি। জিততে শিখতে এসেছি। এখানে কোনও শর্টকার্ট নেই। ইউ-টার্ন তো একেবারেই নেই । রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতার মতো - "আর যাই হোক, পলাতক নই..."।

সৃজনের কথায়, "যাদবপুর লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা আছে। তার মধ্যে ৬টি বিধানসভা এলাকায় ২০২১-এর তুলনায় সামান্য হলেও ভোট বেড়েছে আমাদের। ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় আলাদা লড়ে সিপিআই (এম) এবং আইএসএফ, দুজনেরই ভোট কমেছে। যে ২,৫৮,৭৩২ জন সহনাগরিক ভোট দিলেন আমাদের - তাঁদের ধন্যবাদ। যাঁরা ভোট দিলেন না, তাঁদেরও ভরসার যোগ্য হয়ে উঠতে চেষ্টা করব আগামী দিনে। আমি এই ভোটের ফলাফলকে রাজনৈতিক পরাজয় হিসেবেই দেখব। তবে, এখান থেকেই নতুন উদ্যমের উপাদানও খুঁজতে চাইব।"

তিনি বলেন, "আমরা এই ভোটের প্রচারপর্ব জুড়ে রুজি-রুটি-কাজের ইস্যুগুলিকে সামনে এনে তৃণমূল-বিজেপি'র প্রচলিত তরজার বাইরে এক বিকল্প ভাষ্য গঠনের চেষ্টা করেছি। নির্বাচনের ফল বলছে, ধ্বংসাত্মক বিজেপি কমলো দেশজুড়ে, রাজ্যজুড়েও। এটা আমাদের পক্ষে অবশ্যই উৎসাহব্যঞ্জক। তৃণমূল-বিরোধী মানুষের কাছে বিকল্প শক্তি হয়ে ওঠার প্রয়াস আমাদের জারি রাখতে হবে। আমরা বিগত পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমুল-বিজেপি'র বাইনারি খানিকটা ভেঙে দিতে পেরেছিলাম। এই ভোটে আবার সে দেওয়াল উঠে গিয়েছে। আরএসএস'এর ভূমিকা আছে এ প্রশ্নে। আমাদের সামনে কাজ অনেক। '২৬'এর ভোটের আগে আবার ভাঙতে হবে তৃণমূল-বিজেপি'র সাম্প্রদায়িক বাইনারি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলতে হবে জীবন-জীবিকার কথা ।"

এর সঙ্গেই সিপিএমের যাদবপুরের প্রার্থী বলেন, "এই নির্বাচনে কংগ্রেস কর্মীরা আমাদের সাহায্য করেছেন। সাহায্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি ও ব্যক্তি। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন, এমন অনেক মানুষও বিভিন্নভাবে পাশে থেকেছেন আমাদের। আমি সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই। মিডিয়ার কর্মীরা, যাঁরা আমাদের প্রচারের খবর সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানাই। ভোট-প্রক্রিয়া চলাকালীন ও ভোট-পরবর্তী সময়ে আমাদের পার্টি কর্মীদের উপর সন্ত্রাসের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রশাসন আংশিকভাবে সক্রিয়, পুরোটা নয়। যাঁরা জিতেছে, তাঁরা দায়িত্বশীল ও সংযত হবে, এ প্রত্যাশা স্বাভাবিক। যদি অন্যথা হয়, আত্মরক্ষার অধিকার আমাদের দেশের সংবিধানে আছে - এ কথা ভুলে যাব না আমরা কেউ ।"

সব শেষে সৃজনের বক্তব্য, "এই ৭৭ দিন ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এক বিপুল শিক্ষণীয় জার্নি হয়ে থেকেছে। এত মানুষের ভালবাসা, স্নেহ ও পরামর্শ পেয়েছি, যা আমার সারাজীবনের পাথেয় হয়ে থাকল। যাদবপুরের যে কোনও মানুষ, তাঁর প্রয়োজনে আমার সঙ্গে, আমাদের সঙ্গে, যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা আছি। আমরা থাকব।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.