ETV Bharat / state

আতঙ্ক ভুলে পর্যটনের হাতছানি, এবার পুজোয় আপনার ডেস্টিনেশন হোক লঙ্কাপাড়া - Lankapara Tea Garden - LANKAPARA TEA GARDEN

North Bengal Tourism: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তরবঙ্গ ৷ আলিপুরদুয়ারের লঙ্কাপাড়া পর্যটন কেন্দ্র এখন পর্যটকদরে মূল আকর্ষণ ৷ চোখের সামনে জল খেতে দেখা যায় হাতিকে, ঘুরে বেড়ায় বন্য জীবজন্তু ৷ অ্যাডভেঞ্চার করতে চাইলে যেতে হবে এই চা-বাগানে ৷

Lankapara Tea Garden
ঘুরে আসুন লঙ্কাপাড়া (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 24, 2024, 3:55 PM IST

আলিপুরদুয়ার, 24 জুলাই: লঙ্কাপাড়া চা-বাগান ৷ এক সময়ে এই নাম শুনলেই স্থানীয় বাসিন্দারা আঁতকে উঠতেন ৷ মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের এই চা-বাগান থেকে কখনও শোনা যেত বন্দুকের গুলির আওয়াজ ৷ প্রতিদিন আনাগোনা ছিল পুলিশের ৷ এখন সেসব অতীত ৷ 10 বছর ধরে বন্ধ চা-বাগান রূপ নিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে ৷ আতঙ্ক ভুলে পর্যটনের হাত ধরে ঘুরে দাড়াচ্ছে লঙ্কাপাড়া। এখন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে ৷

আতঙ্ক ভুলে পর্যটনের হাতছানি লঙ্কাপাড়ার (ইটিভি ভারত)

আলিপুরদুয়ার থেকে 85 কিমি দূরে অবস্থিত জেলার সবচেয়ে বড় চা-বাগান লঙ্কাপাড়া। 2014 সাল থেকে সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ ফলে কর্মহীন প্রায় 2,200 শ্রমিক। বাগান বন্ধ থাকায় কার্যত সমাজবিরোধীদের আখরায় পরিণত হয়েছিল লঙ্কাপাড়া। গ্যাংওয়ার, চুরি, ডাকাতি থেকে শুরু করে সমস্ত অসামাজকি কার্যকলাপ চলত । পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাও লঙ্কাপাড়াকে এড়িয়ে চলতেন ৷ জেলা পুলিশের দৌলতে এলাকার কুখ্যাতরা আজ জেলবন্দি। সেখানে স্থানীয়দের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এক পর্যটন কেন্দ্র ৷

লাঙ্কাপাড়া চা-বাগানটি পাহাড়, নদী, জঙ্গলে ঘেরা ৷ পর্যটনের উপযোগী সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ৷ এই চা-বাগানের একদিকে ভুটান, উল্টো দিকে ভারত । মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিতি নদী। এখানে রয়েছে একাধিক বন্যপ্রাণীও। এই সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়েই এলাকার আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে লঙ্কাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেতর ছোটপাহাড় নামে পরিচিত একটি এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র ৷ চা-বাগান শ্রমিক এবং কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত মনকামনা সোশাল ওয়েলফেয়ার কমিটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

মনকামনা সোশাল ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি জন গুরুং বলেন, "বেকার সমস্যা দূর করার জন্য আমরা এই পিকনিক স্পটটা খুলেছি। বহুদিন ধরে এই চা বাগান বন্ধ রয়েছে ফলে এখানকার সমস্যা খুব দ্রুত বাড়ছিল। এখানকার পুরুষ এবং মহিলারা সবাই কাজের জন্য অন্য রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছিল সেই কারণেই এখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো করার জন্য আমরা এই পিকনিক স্পটটা খুলেছি।"

কমিটির 21 জন সদস্য 2022 সাল থেকে উদ্যোগ নিয়েছিলেন । পাহাড় চূড়ায় ওয়াচ-টাওয়ার, আই লাভ লঙ্কাপাড়া লেখা সেলফি পয়েন্ট, দোলনা-সহ সাজানো হয়েছে এলাকাটি ৷ 2023-এর ডিসেম্বর মাসে শুরু হয় এই পর্যটন কেন্দ্রের পথ চলা। গত ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ পর্যটক পা-রেখেছেন এখানে। ভরা বর্ষাতেও লেগে থাকে পর্যটকের আনাগোনা ৷ প্রায় 200 মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে । এখন এলাকাবাসীদের দাবি আর টেরর নয়, ট্যুরিজমেই সাফল্য পেয়েছে লঙ্কাপাড়া।

এই সংগঠনের আরও এক সদস্য বিকাশ গুরুং জানান, চা বাগান বন্ধের ফলে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল । আবার কর্মজীবনে যাতে ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ ৷ এখানে আসতে হলে প্রথমে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট ব্লকের বীর পাড়াতে আসতে হবে ৷ সেখান থেকে যেকোনো গাড়িতে করে মাত্র 18কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে আমাদের এই পিকনিক স্পট।"

কলকাতার শ্যামনগর থেকে আসা রণদীপ চক্রবর্তী নামে এক পর্যটক বলেন, "আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, সিকিম নর্থ বেঙ্গল আগাগোড়াই সুন্দর। আমার কাছে লঙ্কাপাড়া স্পটটা সত্যিই অনবদ্য ৷ সেলফি পয়েন্ট আছে, সামনে ভুটান পাহাড়ের দৃশ্য আছে ৷ এখান থেকে যে নদী বয়ে যাচ্ছে, সেটার একটা দৃশ্য আছে।"

আলিপুরদুয়ার, 24 জুলাই: লঙ্কাপাড়া চা-বাগান ৷ এক সময়ে এই নাম শুনলেই স্থানীয় বাসিন্দারা আঁতকে উঠতেন ৷ মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের এই চা-বাগান থেকে কখনও শোনা যেত বন্দুকের গুলির আওয়াজ ৷ প্রতিদিন আনাগোনা ছিল পুলিশের ৷ এখন সেসব অতীত ৷ 10 বছর ধরে বন্ধ চা-বাগান রূপ নিয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে ৷ আতঙ্ক ভুলে পর্যটনের হাত ধরে ঘুরে দাড়াচ্ছে লঙ্কাপাড়া। এখন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে ৷

আতঙ্ক ভুলে পর্যটনের হাতছানি লঙ্কাপাড়ার (ইটিভি ভারত)

আলিপুরদুয়ার থেকে 85 কিমি দূরে অবস্থিত জেলার সবচেয়ে বড় চা-বাগান লঙ্কাপাড়া। 2014 সাল থেকে সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ ফলে কর্মহীন প্রায় 2,200 শ্রমিক। বাগান বন্ধ থাকায় কার্যত সমাজবিরোধীদের আখরায় পরিণত হয়েছিল লঙ্কাপাড়া। গ্যাংওয়ার, চুরি, ডাকাতি থেকে শুরু করে সমস্ত অসামাজকি কার্যকলাপ চলত । পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাও লঙ্কাপাড়াকে এড়িয়ে চলতেন ৷ জেলা পুলিশের দৌলতে এলাকার কুখ্যাতরা আজ জেলবন্দি। সেখানে স্থানীয়দের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে এক পর্যটন কেন্দ্র ৷

লাঙ্কাপাড়া চা-বাগানটি পাহাড়, নদী, জঙ্গলে ঘেরা ৷ পর্যটনের উপযোগী সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ৷ এই চা-বাগানের একদিকে ভুটান, উল্টো দিকে ভারত । মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিতি নদী। এখানে রয়েছে একাধিক বন্যপ্রাণীও। এই সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়েই এলাকার আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে লঙ্কাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভেতর ছোটপাহাড় নামে পরিচিত একটি এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র ৷ চা-বাগান শ্রমিক এবং কর্মচারীদের নিয়ে গঠিত মনকামনা সোশাল ওয়েলফেয়ার কমিটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

মনকামনা সোশাল ওয়েলফেয়ার কমিটির সভাপতি জন গুরুং বলেন, "বেকার সমস্যা দূর করার জন্য আমরা এই পিকনিক স্পটটা খুলেছি। বহুদিন ধরে এই চা বাগান বন্ধ রয়েছে ফলে এখানকার সমস্যা খুব দ্রুত বাড়ছিল। এখানকার পুরুষ এবং মহিলারা সবাই কাজের জন্য অন্য রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছিল সেই কারণেই এখানকার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো করার জন্য আমরা এই পিকনিক স্পটটা খুলেছি।"

কমিটির 21 জন সদস্য 2022 সাল থেকে উদ্যোগ নিয়েছিলেন । পাহাড় চূড়ায় ওয়াচ-টাওয়ার, আই লাভ লঙ্কাপাড়া লেখা সেলফি পয়েন্ট, দোলনা-সহ সাজানো হয়েছে এলাকাটি ৷ 2023-এর ডিসেম্বর মাসে শুরু হয় এই পর্যটন কেন্দ্রের পথ চলা। গত ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ পর্যটক পা-রেখেছেন এখানে। ভরা বর্ষাতেও লেগে থাকে পর্যটকের আনাগোনা ৷ প্রায় 200 মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে । এখন এলাকাবাসীদের দাবি আর টেরর নয়, ট্যুরিজমেই সাফল্য পেয়েছে লঙ্কাপাড়া।

এই সংগঠনের আরও এক সদস্য বিকাশ গুরুং জানান, চা বাগান বন্ধের ফলে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিল । আবার কর্মজীবনে যাতে ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ ৷ এখানে আসতে হলে প্রথমে আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট ব্লকের বীর পাড়াতে আসতে হবে ৷ সেখান থেকে যেকোনো গাড়িতে করে মাত্র 18কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে আমাদের এই পিকনিক স্পট।"

কলকাতার শ্যামনগর থেকে আসা রণদীপ চক্রবর্তী নামে এক পর্যটক বলেন, "আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, সিকিম নর্থ বেঙ্গল আগাগোড়াই সুন্দর। আমার কাছে লঙ্কাপাড়া স্পটটা সত্যিই অনবদ্য ৷ সেলফি পয়েন্ট আছে, সামনে ভুটান পাহাড়ের দৃশ্য আছে ৷ এখান থেকে যে নদী বয়ে যাচ্ছে, সেটার একটা দৃশ্য আছে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.