কলকাতা, 7 জুলাই: কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে নয়া জল্পনা । আবার কি তৃণমূলে ঘরওয়াপসি হতে চলেছে তাঁর ? এই জল্পনার আবহে রবিবার শোভনের 61তম জন্মদিন । প্রত্যেকবার এই দিনটি ঘটা করে পালন করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও তার অন্যথা হবে না ৷ আমন্ত্রিতদের তালিকাটাও বেশ লম্বা । তবে সেই তালিকায় রয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। শোভনের জন্মদিনের নিমন্ত্রণ রক্ষা নিয়ে কুণাল বলছেন, "রথে এবার প্রচুর আমন্ত্রণ। সব সেরে যদি সময় পাই অবশ্যই যাব ।"
সাম্প্রতিক সময়ে কুণাল ঘোষ ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ বিশেষ জল্পনার জন্ম দিয়েছে । যদিও নিজের বাড়িতে কুণালের যাওয়াকে সৌজন্য বলে এড়িয়ে গিয়েছেন শোভন। কিন্তু হঠাৎ শোভনের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের সখ্য বৃদ্ধিতে নয়া সমীকরণ দেখছেন কেউ কেউ । কয়েকদিন আগে, হকারদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার বলতে শোনা গিয়েছিল বেআইনি হকার ও পার্কিং সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ ফিরহাদ হাকিম ও দেবাশিস কুমার। আর তাই তাঁকে হাল ধরতে হচ্ছে । অতীতে দলের মেয়রকে এভাবে প্রকাশ্যে কোনও কিছু বলতে কখনও শোনা যায়নি মমতাকে ।
পাশাপাশি, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে শহুরে ভোটারদের মধ্যে তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যানের ঘটনা দলনেত্রীকে ভাবিয়েছে। তিনি শহুরে মানুষদের এই সমর্থন আরও একবার ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন । এরই মাঝে প্রশাসন ও দলের মধ্যে শোভনকে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কারণ এক সময় তিনিই ছিলেন কলকাকার মহানাগরিক । 2010 সাল থেকে পরপর দুটি নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বেই কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছিল তৃণমূল। শহুরে ভোটারদের মন পেতে আবারও কি শোভনেই আস্থা রাখতে চলেছেন নেত্রী ? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে রাজনৈতিক মহল।
দলীয় সূত্রের জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একবার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিজের দলে চাইছেন । ইতিমধ্যেই দলনেত্রীর দূত হয়ে 2 জন তাঁর সঙ্গে দেখাও করেছেন । যদিও তাঁদের মধ্যে একজন এই সাক্ষাতের কথা স্বীকার করছেন না । অপরজন সাক্ষাতের কথা স্বীকার করলেও তিনি কারও বার্তা নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন, এই কথা মানতে নারাজ । বরং তিনি বলছেন, মাঝেমধ্যেই সেখানে তাঁর যাওয়া হয় । কে এই ব্যক্তি? তিনি আর কেউ নন, কুণাল ঘোষ ।
গত কয়েকদিনের মধ্যে কুণাল যে তাঁর বাড়িতে এসেছেন সে কথা মেনে নিয়েছেন শোভনও । তবে তাঁর বক্তব্য, সবটাই ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ । তিনি অবশ্য দলনেত্রীর কোনও বার্তা নিয়ে কেউ তাঁর কাছে এসেছিলেন এ কথা মানতে চাইছেন না । বরং তাঁকে প্রকাশ্যে বলতে শোনা গিয়েছে, "মমতাদি যদি আমায় কিছু বলেন, সেই নির্দেশ অমান্য করার সাহস আমার নেই । তবে এর জন্য কাউকে দূত করে পাঠানোর প্রয়োজন নেই ।" একই কথা শোনা গিয়েছে কুণালের গলাতেও ।
তিনি বলেন, "উনি যদি দলে আসেন তার জন্য কোনও তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন নেই ।" তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আজ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি যান অথবা না যান এই হেভিওয়েট নেতার ঘরওয়াপসির জল্পনা কিন্তু বাড়ছেই । এখন দেখার এই জল্পনার মাঝেই শোভনের কাছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো জন্মদিনের কোনও বার্তা রবিবার আসে কি না ।