কলকাতা, 2 মে: লোকসভা নির্বাচনের আবহে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় অস্বস্তিতে রেখেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে ৷ সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও পুরোপুরি স্বস্তি পায়নি তারা ৷ এই পরিস্থিতিতে শাসক দলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছেন কুণাল ঘোষ ৷ বুধবার সন্ধ্যায় তিনি জানিয়েছেন, চাকরি যে বিক্রি হয়েছে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল জানত । চাকরি বিক্রি হয়েছে জেনেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়নি ।
বুধবার সকালে উত্তর কলকাতায় এক রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হয়ে বিজেপির তাপস রায়ের প্রশংসা করেছিলেন কুণাল ঘোষ ৷ তার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই কুণালকে তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অপসারিত করে ৷ এর পর সন্ধ্যায় এক বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন কুণাল ঘোষ ৷ সেখানেই তিনি এই কথা বলেন ৷
নিয়োগ দুর্নীতিতে যে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন, সেই বিষয়টি তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে খবর ছিল বলেই কুণালের দাবি ৷ ওই সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, সেটা তৃণমূলের কাছে অনেক আগে থেকে খবর ছিল । পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে টাকা নিয়েছেন ৷ পার্থর নাম করে কেউ কেউ টাকা তুলেছেন ৷ সেটাও তৃণমূলের কাছে অনেক আগে থেকেই খবর ছিল ।
কুণালের আরও দাবি, সেই খবর ছিল বলেই 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আর শিক্ষামন্ত্রী করা হয়নি ৷ শিক্ষামন্ত্রী হতে না পেরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন । তাই কুণালের প্রশ্ন, ‘‘দল এগুলোকে বাড়তে দিল কেন ? আর এই নিয়ে বেশি কথা বলতে গেলেই বলা হয় আমি শৃঙ্খলা ভেঙেছি ।’’
এখানেই শেষ নয়, তাঁর বন্দি জীবনের সময়ের এক বিস্ফোরক ঘটনা সামনে এনেছেন কুণাল ঘোষ । কুণালের দাবি, তিনি জেলবন্দী থাকাকালীন একজন চাকরির জন্য তাঁর কাছে এসেছিলেন এক নেতাকে চিরকুট লিখে দিতে বলে । তিনি অবশ্য তা লিখে দেননি । তবে এর মাধ্যমে ওই ব্যক্তির নাম জেনে গিয়েছেন তিনি ।
কে সেই ব্যক্তি ? তা অবশ্য খোলসা করেননি কুণাল ঘোষ ৷ তবে জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি এখনও রাজ্য মন্ত্রিসভায় রয়েছেন । স্বাভাবিকভাবে কুণাল ঘোষের এই দুই দাবিতে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি । এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷ এখন দেখার এই পরিস্থিতিতে কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে শাসক দল কী পদক্ষেপ করে ?
আরও পড়ুন: