ETV Bharat / state

'দলে অনেক ঘাটতি ছিল', হারের পরই সুর বদল কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থীর - Amrita Roy Slams Party Leaders - AMRITA ROY SLAMS PARTY LEADERS

Amrita Roy Slams Party Leaders: দলে অনেক ঘাটতি ছিল, সংগঠনের কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না ৷ লোকসভা ভোটে হেরে দলের একাংশকেই কাঠগড়ায় তুললেন কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় ৷

BJP Candidate Amrita Roy
কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 7, 2024, 9:37 PM IST

Updated : Jun 7, 2024, 10:31 PM IST

কৃষ্ণনগর, 7 জুন: ভোটে হারার দায় দলের দিকেই ঠেললেন কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় ৷ একই সঙ্গে, রাজনীতির ময়দানে তিনি যে নতুন, তাও বলেছেন ৷ সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটে প্রায় 57 হাজার ভোটে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রর কাছে পরাজিত হন তিনি ৷

এর ফলাফলের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় বলেন, "দলে অনেক ঘাটতি ছিল, সংগঠনের কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না ৷ আমি একদম নতুন, তাই নিজের মতো করে সাজাতে পারিনি ৷ নিজে দায়িত্ব নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে প্রচার চালিয়ে গেলে ফল অন্য রকম হতে পারত ৷"

গত 2019 সালের লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। সেবারও তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের কাছে 63 হাজার 218 ভোটে হেরে গিয়েছিলেন পদ্ম প্রার্থী ৷ 2023 সালে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগে তাঁর সাংসদ পদও খারিজ হয়ে যায় ৷ সেবছরের 8 ডিসেম্বর মহুয়াকে বহিষ্কার করেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা ৷

এই সময় দুর্নীতির অভিযোগে মহুয়ার বাড়িতে ইডি এবং সিবিআই তল্লাশি অভিযান চালায়। এসব সত্ত্বেও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নির্বাচনে ফের মহুয়া মৈত্রকে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন ৷

অন্যদিকে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কে হবেন, এই জল্পনাও চলেছিল বেশ কিছুদিন ধরে । নাম উঠে এসেছিল ঝুলন গোস্বামী থেকে সোমা বিশ্বাসের মতো জাতীয় স্তরের ক্রীড়াবিদদের। ঠিক সেখানেই একেবারে চমকে দিয়ে বিজেপি শুভেন্দুর হাত ধরে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বংশবধূ অমৃতা রায়কে। প্রার্থী হওয়ার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে অমৃতা রায়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন ৷

আগামী দিনে কীভাবে তিনি রাজনীতি করবেন এবং উন্নয়ন কী হবে, সে বিষয়ে অমৃতা রায়ের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনাও করেন মোদি ৷ পরে সেই ফোনের অডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে শুনতে পাওয়া যায়। এরপরই প্রচার অভিযানে নেমে পড়েন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব তথা প্রার্থী অমৃতা রায় ৷

রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল এই কেন্দ্রে কঠিন লড়াই হতে চলেছে ৷ এমনকী চব্বিশের লোকসভা ভোটে এই কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি বিজেপির দখলেও চলে আসতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল ৷ কিন্তু চলতি মাসের 4 তারিখে ভোটের ফলাফলে দেখা যায় প্রায় 57 হাজার ভোটে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়। এরপরেই বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় কৃষ্ণনগর বিজেপির জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্ট উঠে আসে ৷ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে বিরোধীদের সাহায্য করার অভিযোগও ওঠে ৷

তবে নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়। সরাসরি দলের বেশকিছু জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও তিনি বলেন, "আমি রাজনীতিতে একদম নতুন ৷ সেই কারণে জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু করে নিচু স্তরের কর্মীরা সম্পূর্ণ আমার অপরিচিত ছিলেন ৷ আর সদ্য নির্বাচন এগিয়ে আসার কারণে দলের এবং জেলা নেতৃত্বের কথামতো আমি প্রচার চালিয়ে গিয়েছি ৷ জেলা নেতৃত্ব যেভাবে বলেছে আমি তাদের কথাতেই গ্রাহ্য করেছি ৷ কিন্তু যে ফলাফল আমি আশা করেছিলাম, সেটা হয়নি ৷ তার কারণ খুঁজতে গিয়ে আমি এটুকু অনুভব করেছি, দলের বেশ কিছু ঘাটতি আছে।"

বিজেপি সংগঠন সম্পর্কে অমৃতা রায় বলেন, "আমাদের দলের যে জেলাসংগঠন রয়েছে, তার কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না ৷ সঠিক সময়ে কখনও কোনো মিটিং আমি শুরু করতে পারিনি ৷ জেলা নেতৃত্বের বেশ কয়েকজনের মধ্যে আমি অনীহা দেখতে পেয়েছিলাম ৷ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে পারি, যদি আমি নিজের মতো করে সংগঠনটা সাজাতাম এবং দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতাম, তাহলে ফলটা অনেকটা অন্যরকম হত ৷"

সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের তরফে অভিযোগ উঠেছে, বেশ কিছু জেলা নেতৃত্ব টাকার বিনিময়ে দল বিরোধী কাজ করেছে ৷ সে বিষয়ে অমৃত রায়কে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য তিনি সরাসরি কোনও উত্তর দিতে চাননি ৷ অন্যদিকে, তিনি বলেন, "আগামী দিনেও আমি এই রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই থাকব ৷ রাজনীতি চালিয়ে যাব ৷ তবে আমি যখন রাজনীতি করব তখন স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ রাজনীতি করব ৷ কোনও দুর্নীতিতে আপস করব না ৷" পাশাপাশি তিনি এও বলেন, "একই দলের বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে আলাদা আলাদা গোষ্ঠী রয়েছে ৷ কিন্তু আমি চাই সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে ৷" এখনও পর্যন্ত উচ্চ নেতৃত্বকে হারের কারণ ব্যাখ্যা না করলেও তিনি আগামীদিনে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি ৷

কৃষ্ণনগর, 7 জুন: ভোটে হারার দায় দলের দিকেই ঠেললেন কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় ৷ একই সঙ্গে, রাজনীতির ময়দানে তিনি যে নতুন, তাও বলেছেন ৷ সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটে প্রায় 57 হাজার ভোটে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রর কাছে পরাজিত হন তিনি ৷

এর ফলাফলের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায় বলেন, "দলে অনেক ঘাটতি ছিল, সংগঠনের কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না ৷ আমি একদম নতুন, তাই নিজের মতো করে সাজাতে পারিনি ৷ নিজে দায়িত্ব নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে প্রচার চালিয়ে গেলে ফল অন্য রকম হতে পারত ৷"

গত 2019 সালের লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। সেবারও তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের কাছে 63 হাজার 218 ভোটে হেরে গিয়েছিলেন পদ্ম প্রার্থী ৷ 2023 সালে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগে তাঁর সাংসদ পদও খারিজ হয়ে যায় ৷ সেবছরের 8 ডিসেম্বর মহুয়াকে বহিষ্কার করেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা ৷

এই সময় দুর্নীতির অভিযোগে মহুয়ার বাড়িতে ইডি এবং সিবিআই তল্লাশি অভিযান চালায়। এসব সত্ত্বেও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নির্বাচনে ফের মহুয়া মৈত্রকে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন ৷

অন্যদিকে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কে হবেন, এই জল্পনাও চলেছিল বেশ কিছুদিন ধরে । নাম উঠে এসেছিল ঝুলন গোস্বামী থেকে সোমা বিশ্বাসের মতো জাতীয় স্তরের ক্রীড়াবিদদের। ঠিক সেখানেই একেবারে চমকে দিয়ে বিজেপি শুভেন্দুর হাত ধরে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বংশবধূ অমৃতা রায়কে। প্রার্থী হওয়ার পর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে অমৃতা রায়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন ৷

আগামী দিনে কীভাবে তিনি রাজনীতি করবেন এবং উন্নয়ন কী হবে, সে বিষয়ে অমৃতা রায়ের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনাও করেন মোদি ৷ পরে সেই ফোনের অডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে শুনতে পাওয়া যায়। এরপরই প্রচার অভিযানে নেমে পড়েন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব তথা প্রার্থী অমৃতা রায় ৷

রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল এই কেন্দ্রে কঠিন লড়াই হতে চলেছে ৷ এমনকী চব্বিশের লোকসভা ভোটে এই কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি বিজেপির দখলেও চলে আসতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল ৷ কিন্তু চলতি মাসের 4 তারিখে ভোটের ফলাফলে দেখা যায় প্রায় 57 হাজার ভোটে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়। এরপরেই বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় কৃষ্ণনগর বিজেপির জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্ট উঠে আসে ৷ জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে বিরোধীদের সাহায্য করার অভিযোগও ওঠে ৷

তবে নিজের পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়। সরাসরি দলের বেশকিছু জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও তিনি বলেন, "আমি রাজনীতিতে একদম নতুন ৷ সেই কারণে জেলা নেতৃত্ব থেকে শুরু করে নিচু স্তরের কর্মীরা সম্পূর্ণ আমার অপরিচিত ছিলেন ৷ আর সদ্য নির্বাচন এগিয়ে আসার কারণে দলের এবং জেলা নেতৃত্বের কথামতো আমি প্রচার চালিয়ে গিয়েছি ৷ জেলা নেতৃত্ব যেভাবে বলেছে আমি তাদের কথাতেই গ্রাহ্য করেছি ৷ কিন্তু যে ফলাফল আমি আশা করেছিলাম, সেটা হয়নি ৷ তার কারণ খুঁজতে গিয়ে আমি এটুকু অনুভব করেছি, দলের বেশ কিছু ঘাটতি আছে।"

বিজেপি সংগঠন সম্পর্কে অমৃতা রায় বলেন, "আমাদের দলের যে জেলাসংগঠন রয়েছে, তার কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না ৷ সঠিক সময়ে কখনও কোনো মিটিং আমি শুরু করতে পারিনি ৷ জেলা নেতৃত্বের বেশ কয়েকজনের মধ্যে আমি অনীহা দেখতে পেয়েছিলাম ৷ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে পারি, যদি আমি নিজের মতো করে সংগঠনটা সাজাতাম এবং দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতাম, তাহলে ফলটা অনেকটা অন্যরকম হত ৷"

সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের তরফে অভিযোগ উঠেছে, বেশ কিছু জেলা নেতৃত্ব টাকার বিনিময়ে দল বিরোধী কাজ করেছে ৷ সে বিষয়ে অমৃত রায়কে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য তিনি সরাসরি কোনও উত্তর দিতে চাননি ৷ অন্যদিকে, তিনি বলেন, "আগামী দিনেও আমি এই রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই থাকব ৷ রাজনীতি চালিয়ে যাব ৷ তবে আমি যখন রাজনীতি করব তখন স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ রাজনীতি করব ৷ কোনও দুর্নীতিতে আপস করব না ৷" পাশাপাশি তিনি এও বলেন, "একই দলের বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে আলাদা আলাদা গোষ্ঠী রয়েছে ৷ কিন্তু আমি চাই সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে ৷" এখনও পর্যন্ত উচ্চ নেতৃত্বকে হারের কারণ ব্যাখ্যা না করলেও তিনি আগামীদিনে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করে জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি ৷

Last Updated : Jun 7, 2024, 10:31 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.