কলকাতা, 27 অক্টোবর: বৃষ্টি মুসল ধারায় হয়নি। তবে আকাশে রোদের মুখ বেলা বাড়ার সঙ্গে দেখা যায়। হালকা মেঘে দিনের পুরোটাই ঢাকা ছিল। শুক্রবারের বৃষ্টিস্নাত দিনের সঙ্গে তুলনা করলে শনিবারটা ছিল কার্যত শুকনো। আলিপুর আবহাওয়া দফতর আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়ার উন্নতি হবে। দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র বৃষ্টি হলেও তা হবে হালকা থেকে মাঝারি। বৃষ্টির কিছুটা দাপট থাকবে দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ 24 পরগনায়। আজ রবিবার ফের হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায়। তবে তা কখনও ভারী থেকে অতিভারী পর্যায়ের হবে না।
উপকূলে উচ্চচাপ বলয় ও ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা:
বর্ষা ইতিমধ্যে বিদায় নিয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু পরবর্তী সময় চলছে। এই সময় একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকে। আপাতত সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত নেই। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে একটি উচ্চচাপ বলয় রয়েছে। এরফলে তীব্র ঘূর্ণিঝড় সেটি ঠেলে পশ্চিমবঙ্গের দিকে ঢুকতে পারেনি। এমনকি ওড়িশায় ঢোকার পরেও কিছুটা দক্ষিণে সরে গিয়েছে। তীব্র ঘূর্ণিঝড় দানার দাপট সেভাবে দেখা যায়নি। এখন দেখার বিষয় হল, এই ঘূর্ণিঝড়ের হাত ধরে শীতের ছোঁয়া গায়ে লাগে কি না!
বঙ্গে শীতের আগমন কবে?
হাওয়া অফিস জানিয়েছে শীতের আগমনের জন্য বাতাসে শুষ্কতা প্রয়োজন। এখনও দক্ষিণবঙ্গের বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যথেষ্ট। ফলে শীতের অনুভূতি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। প্রসঙ্গত তীব্র ঘূর্ণিঝড় দানার সৌজন্যে ভারী থেকে অতিভারী এমনকি কোথাও কোথাও অত্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে পারদ পাঁচ ডিগ্রির বেশি নেমে গিয়েছে। ফলে একটা ঠান্ডার ভাব পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ঠান্ডার ভাবের সঙ্গে শীতের আগমনীর সম্পর্ক নেই।
ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ ক্ষেত্রে পরিনত:
শনিবার সকালে তীব্র ঘূর্ণিঝড় আরও দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ ক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। ফলে বৃষ্টিপাত কমে গিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ডানা শক্তি ক্ষয় করে বর্তমানে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ল্যান্ডফল হওয়ার পরে ধীরে ধীরে শক্তি ক্ষয় করে। প্রথমে তীব্র ঘূর্ণিঝড় তারপর ঘূর্ণিঝড় তারপর গভীর নিম্নচাপ এবং নিম্নচাপে পরিণত হয়।
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার পূর্বাভাস:
আজ দক্ষিণবঙ্গে দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। উত্তরবঙ্গের পর জেলাতে হালকা মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত দু-এক জায়গায় হতে পারে। 30 অক্টোবরে পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় কিছু জায়গায় অথবা দু-এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি এই ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। 31 অক্টোবরে সমগ্র দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে দুই এক জায়গাতে হালকা মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাত বিক্ষিপ্তভাবে। উত্তরবঙ্গেও হালকা মঝারি। 1 নভেম্বর গোটা পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই দুই এক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বলে জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত।
কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের আবহাওয়ার পূর্বাভাস:
কলকাতা এবং সংলগ্ন অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 29.7 ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল 24.4 ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের চেয়ে 1.4 ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল সর্বোচ্চ 98 শতাংশ এবং সর্বনিম্ন 77 শতাংশ। গত চব্বিশ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 24.1 মিলিমিটার। আজ রবিবার দিনের আকাশ মেঘলা। কয়েকটি জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 31 ডিগ্রি এবং 25 ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে।