কলকাতা, 28 ডিসেম্বর: সংযুক্ত কলকাতার যাদবপুর এলাকার ফুসফুস হল বিক্রমগড় ঝিল । কলকাতা পুরনিগমের 93 ও 95 ওয়ার্ডের মধ্যে থাকা এই ঝিল সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হল ৷ পুরনিগমের এই সিদ্ধান্তে খুশি ওই দুই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরই ৷
14 একরের বেশি জায়গা নিয়ে এই ঝিল ছিল ৷ চারপাশে ছিল গাছ-গাছালি । গোটা এলাকার দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও মুক্ত বাতাসের অন্যতম স্থান ছিল এই বিক্রমগড় ঝিল । তবে দিন যত এগিয়েছে, ধীরে ধীরে ছোট হয়েছে এই ঝিল । এখন সাকুল্যে আট একর জায়গায় দাঁড়িয়েছে । সেটাও কচুরিপানায় ভরে এখন জলের দেখা মেলা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
অভিযোগ, এই ঝিল বাম আমল থেকেই সংস্কারের অভাবে বুজে যেতে শুরু করে । পাড় ভরাট ও চারপাশ ছোট হতে থাকে । মাথা তোলে একের পর এক ঘর, বাড়ি থেকে দোকানপাট ।
এই ঝিল রক্ষায় এক সময় তৈরি হয়েছিল বিক্রমগড় ঝিল বাঁচাও কমিটি । ঝিল রক্ষার দাবি নিয়ে লড়াই নামে ঝিল বাঁচাও কমিটি । নেতৃত্বে ছিলেন 95 নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত । তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ঝিল রক্ষায় পথে নেমে পুলিশের লাঠি খেয়েছি । যাদবপুর থানা আমাকে গ্রেফতার করেছিল । আন্দোলন থামায়নি । বিকাশ ভট্টাচার্যের বোর্ড এই জলা একাংশ ভরাট করে একটি নামি অ্যাপার্টমেন্ট একটি বিল্ডিং তুলতে দিয়েছেন । বহু লড়াই করেছি ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 2014 সালে আট কোটি টাকা অনুমোদন করেন । কাজ শুরু হয় । তবে সেই কাজ অজানা কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । ফের ঝিল সংস্কারের অভাবে মজে গিয়ে কচুরিপানা ভর্তি হয়েছে ।’’
অবেশেষে কলকাতা পুরনিগমের তরফে এই ঝিল সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হল । আগামী জানুয়ারি থেকেই শুরু হবে কাজ । সাড়ে তিন কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে ঝিল সংস্কারে । এই নিয়ে কলকাতা পুরনিগমের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অম্রুত প্রকল্পের আওতাধীন টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই ঝিল সংস্কারের কাজে । প্রথম ধাপে সাড়ে তিন কোটি টাকার কাজ হবে, তাতে মূল ঝিল পরিষ্কার করা, আশপাশ পরিষ্কার করা-সহ যেখানে যেমন কাজ করার প্রয়োজন, তা হবে । পরবর্তী সময় যদি ঝিলের পলি নিষ্কাশনের প্রয়োজন হয়, সেই ক্ষেত্রে আবার অর্থ বরাদ্দ হলে দ্বিতীয় ধাপে কাজ হবে ।’’
তপন দাশগুপ্ত এই নিয়ে বলেন, ‘‘এখন কলকাতা কর্পোরেশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই ঝিল সংস্থার করার এলাকার বহু মানুষ উপকৃত হবেন । তবে ঝিলের আগের মতো জল ফেরাতে আরও টাকা খরচে দরকার পলি নিষ্কাশন ।’’
ঝিলের একটা অংশ রয়েছে 93 নম্বর ওয়ার্ডে ৷ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দাস বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে এই ঝিল সংস্কারের দাবি উঠছিল । কাউন্সিলর হয়ে আমিও অনেকবার তদ্বির করেছি । এটা ভালো ।’’