ETV Bharat / state

অস্ত্রোপচারের সময় টানা 3 ঘণ্টা খোলা চোখের পাতা, কলকাতায় জটিল অস্ত্রোপচার শিশুর

Rare surgery in Kolkata: 3 ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের সময় টানা খুলে রাখতে হল চোখের পাতা ৷ কলকাতার হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচার হল দুর্ঘটনায় জখম এক শিশুকন্যার ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 26, 2024, 7:48 PM IST

Updated : Feb 26, 2024, 9:14 PM IST

বিরল অস্ত্রপচার হল কলকাতায়

কলকাতা, 26 ফেব্রুয়ারি: অস্ত্রোপচারের সময় টানা খুলে রাখতে হবে চোখের পাতা । সেটাই ছিল চ্যালেঞ্জ । তবে সেই চ্যালেঞ্জকে জয় করে টানা তিন ঘণ্টা চোখের পাতা খুলে রেখেই সফল অস্ত্রোপচার হল বছর পাঁচেকের গীতাঞ্জলির । দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম ঝাড়খণ্ডের শিশুটিকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল ৷

গিরিডি অঞ্চলের বাসিন্দা বিকাশ কুমার গুপ্তা । পেশায় তিনি হকার । তাঁর স্ত্রী পাম্পি দেবী গৃহবধূ । তাঁদেরই পাঁচ বছরের মেয়ে গীতাঞ্জলি । গত বছর বড়দিনে সকাল ন'টায় বাবার সঙ্গে বাইকে চড়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল ছোট্ট কন্যা । আচমকাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে বাইকটিকে । বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যায় শিশুটি ৷ তার মুখে গুরুতর চোট লাগে ৷

তৎক্ষণাৎ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়খণ্ডের একটি নিকটবর্তী হাসপাতালে । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের খোঁজ পায় আহত শিশুর পরিবার । এক মিনিটও দেরি না-করে মেয়ে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সেদিন রাত সাড়ে 12টায় কলকাতার মুকুন্দপুরের কাছে ওই বেসরকারি হাসপাতালে চলে আসেন বিকাশ গুপ্তা ৷ হাসপাতালে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কন্যার অস্ত্রোপচার শুরু হয় ৷

প্লাস্টিক সার্জেন অখিলেশ কুমার আগরওয়ালের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার হয় শিশুটির । দুর্ঘটনার কারণে গীতাঞ্জলির মুখের হাড় থেকে টিস্যু আলাদা হয়ে গিয়েছিল । বিশেষ করে তার মুখের ডান দিক, চামড়া, চোখের মণি আর নাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল । চিকিৎসকের কথায়, "সামগ্রিক চিকিৎসার মধ্যে অন্যতম একটি দিক ছিল তার দৃষ্টিশক্তি বাঁচানো । তবে বিষয়টি মোটেও সহজ ছিল না । কারণ তার চোখের সকেটে ছিদ্র তৈরি হয়েছিল । ফলে অস্ত্রোপচারের সময় অনেকক্ষণ চোখ খুলে রাখতে হবে । নয়তো তার চোখের বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ।" সেই ভাবেই অস্ত্রোপচার করা হয় ।

গীতাঞ্জলি কুমারীর বাবা বিকাশ গুপ্তা বলেন, "মেয়ে খুব যন্ত্রণায় ছিল । সারা মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল । আমরা ওকে চটজলদি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই । তারা আমাদের বলে, দ্রুত কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য । ওই রাতেই আমরা ওকে এখানে ভর্তি করি । একদিকে আমরা ভীষণ চিন্তায় ছিলাম, আমাদের মেয়ের প্রাণ বাঁচানো নিয়ে । সত্যি কথা বলতে কি, এই ধরনের চিকিৎসা খুবই ব্যয়সাধ্য । তবে হসপিটালের তরফ থেকে খুবই সাহায্য করা হয় ।"

অস্ত্রোপচারের পর পাঁচ সপ্তাহ ধরে পুরো রিহ্যাব চলে । বর্তমানে চোখ স্বাভাবিকভাবে খুলতে ও বন্ধ করতে পারছে গীতাঞ্জলি ।

আরও পড়ুন:

  1. রোগীকে সজ্ঞানে রেখে ব্রেন টিউমার অস্ত্রোপচারে সেঞ্চুরি, অভিজ্ঞতায় 'ডায়েরী' বিশ্বখ্যাত নিউরোসার্জেনের
  2. 'ব্লু বেবি সিনড্রোম' আক্রান্ত শিশুকে 'জীবনদান', অবাক করলেন কলকাতার চিকিৎসকরা
  3. বারওয়ানিতে বৃদ্ধের শরীরে 3টি বিষাক্ত তীর, অস্ত্রোপচারে বাঁচল প্রাণ

বিরল অস্ত্রপচার হল কলকাতায়

কলকাতা, 26 ফেব্রুয়ারি: অস্ত্রোপচারের সময় টানা খুলে রাখতে হবে চোখের পাতা । সেটাই ছিল চ্যালেঞ্জ । তবে সেই চ্যালেঞ্জকে জয় করে টানা তিন ঘণ্টা চোখের পাতা খুলে রেখেই সফল অস্ত্রোপচার হল বছর পাঁচেকের গীতাঞ্জলির । দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম ঝাড়খণ্ডের শিশুটিকে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতাল ৷

গিরিডি অঞ্চলের বাসিন্দা বিকাশ কুমার গুপ্তা । পেশায় তিনি হকার । তাঁর স্ত্রী পাম্পি দেবী গৃহবধূ । তাঁদেরই পাঁচ বছরের মেয়ে গীতাঞ্জলি । গত বছর বড়দিনে সকাল ন'টায় বাবার সঙ্গে বাইকে চড়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল ছোট্ট কন্যা । আচমকাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে বাইকটিকে । বাইক থেকে ছিটকে পড়ে যায় শিশুটি ৷ তার মুখে গুরুতর চোট লাগে ৷

তৎক্ষণাৎ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়খণ্ডের একটি নিকটবর্তী হাসপাতালে । সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের খোঁজ পায় আহত শিশুর পরিবার । এক মিনিটও দেরি না-করে মেয়ে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সেদিন রাত সাড়ে 12টায় কলকাতার মুকুন্দপুরের কাছে ওই বেসরকারি হাসপাতালে চলে আসেন বিকাশ গুপ্তা ৷ হাসপাতালে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কন্যার অস্ত্রোপচার শুরু হয় ৷

প্লাস্টিক সার্জেন অখিলেশ কুমার আগরওয়ালের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার হয় শিশুটির । দুর্ঘটনার কারণে গীতাঞ্জলির মুখের হাড় থেকে টিস্যু আলাদা হয়ে গিয়েছিল । বিশেষ করে তার মুখের ডান দিক, চামড়া, চোখের মণি আর নাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল । চিকিৎসকের কথায়, "সামগ্রিক চিকিৎসার মধ্যে অন্যতম একটি দিক ছিল তার দৃষ্টিশক্তি বাঁচানো । তবে বিষয়টি মোটেও সহজ ছিল না । কারণ তার চোখের সকেটে ছিদ্র তৈরি হয়েছিল । ফলে অস্ত্রোপচারের সময় অনেকক্ষণ চোখ খুলে রাখতে হবে । নয়তো তার চোখের বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ।" সেই ভাবেই অস্ত্রোপচার করা হয় ।

গীতাঞ্জলি কুমারীর বাবা বিকাশ গুপ্তা বলেন, "মেয়ে খুব যন্ত্রণায় ছিল । সারা মুখ রক্তে ভেসে যাচ্ছিল । আমরা ওকে চটজলদি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই । তারা আমাদের বলে, দ্রুত কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য । ওই রাতেই আমরা ওকে এখানে ভর্তি করি । একদিকে আমরা ভীষণ চিন্তায় ছিলাম, আমাদের মেয়ের প্রাণ বাঁচানো নিয়ে । সত্যি কথা বলতে কি, এই ধরনের চিকিৎসা খুবই ব্যয়সাধ্য । তবে হসপিটালের তরফ থেকে খুবই সাহায্য করা হয় ।"

অস্ত্রোপচারের পর পাঁচ সপ্তাহ ধরে পুরো রিহ্যাব চলে । বর্তমানে চোখ স্বাভাবিকভাবে খুলতে ও বন্ধ করতে পারছে গীতাঞ্জলি ।

আরও পড়ুন:

  1. রোগীকে সজ্ঞানে রেখে ব্রেন টিউমার অস্ত্রোপচারে সেঞ্চুরি, অভিজ্ঞতায় 'ডায়েরী' বিশ্বখ্যাত নিউরোসার্জেনের
  2. 'ব্লু বেবি সিনড্রোম' আক্রান্ত শিশুকে 'জীবনদান', অবাক করলেন কলকাতার চিকিৎসকরা
  3. বারওয়ানিতে বৃদ্ধের শরীরে 3টি বিষাক্ত তীর, অস্ত্রোপচারে বাঁচল প্রাণ
Last Updated : Feb 26, 2024, 9:14 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.