কলকাতা, 29 জানুয়ারি: প্রতি বছরই কলকাতা বইমেলায় থাকে নানা চমক ৷ তারই টানে বছরের এই সময়টায় শহর তথা রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ভিড় জমান বইমেলা প্রাঙ্গণে ৷ শুধু বই কেনা নয়, নতুন বইয়ের গন্ধ, নানা দেশ, নানা লেখকের, নানা দুস্প্রাপ্য বই হাতে নিয়ে পাতা ওলটানোরও যেন এক আলাদা রোমাঞ্চ ৷ আর তা যদি হয় কবিগুরুর নোবেলজয়ী গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের একেবারে প্রথম সংস্করণ ! বইমেলার ভিড় ঠেলে পরশপাথরের মতো সেই দুস্প্রাপ্য রত্নই খুঁজে বের করল ইটিভি ভারত ৷ রইল তারই সুলুকসন্ধান ৷
2010 সালে ইউনেস্কোর একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, পৃথিবীর সব থেকে মিষ্টি ভাষা হল বাংলা । আর এই ভাষাকে বিশ্ব দরবারে যিনি নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । বাংলা তথা বাঙালি জাতির গর্বের নাম রবীন্দ্রনাথ । তাঁর অমর সৃষ্টি গীতাঞ্জলির হাত ধরেই ভারত প্রথম দেখেছিল নোবেল পুরস্কার, 1913 সালে । কিন্তু সেই নোবেল আজ কোথায়, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা । ঠিক তেমনই ওই নোবেল যে কাব্যগ্রন্থের জন্য এ দেশে এসেছিল, তাও আজ দুষ্প্রাপ্য । কিন্তু সেই দুষ্প্রাপ্য বই এ বার চাক্ষুস করার সুযোগ করে দিয়েছে কলকাতা বইমেলা ।
47তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার 529 নম্বর স্টল সবুজপত্র প্রকাশনী । সেই স্টলেই রয়েছে বহু দুষ্প্রাপ্য সব বই । তার মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হল রবি ঠাকুরের গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের প্রথম সংস্করণ । 1912 সালে প্রথম এই বই অনুবাদ করা হয় । তখন তার বেশ কিছু সংকলন বের করা হয়েছিল । 1913 সালে জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হয় গীতাঞ্জলির এই ইংরাজি অনুবাদ । যা ভারতের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে ৷ সেখান থেকেই একটি বই সংগ্রহ করে রেখেছিলেন সবুজপত্র প্রকাশনীর প্রধান শুভাশিস ভট্টাচার্য ।
বিগত 27 বছর ধরে বইমেলায় অংশ নিচ্ছেন তিনি । এ বছর বইমেলার তাঁর চমক, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের প্রথম সংস্করণ । প্রকাশনীর প্রধান শুভাশিস ভট্টাচার্য জানালেন, "1913 সালের এই বই এ বছর আমরা বইমেলায় এনেছি । প্রতি বছরই বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য বই আমরা নিয়ে আসি । তেমনই এই বছর এই বই ।"
গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ দেখতে বহু মানুষ আসছেন স্টলে । প্রকাশনীর প্রধানের সঙ্গে কথা বলে এই বই হাতে নিয়ে উলটে পালটে দেখছেন বহু পাঠক । পড়তে ইচ্ছে হলে সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁরা পড়তেও পারছেন । কিন্তু এই বই বাড়ি নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় । কারণ শুভাশিস ভট্টাচার্য জানান, "এই বই দুষ্প্রাপ্য, তাই এই বইকে আমি হারাতে চাই না ।" এমনকি আগামী দিনেও এই বই বাজারজাত করার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর ।
আরও পড়ুন: