কলকাতা, 14 জানুয়ারি: করোনার পর রাজ্যে বর্তমানে আতঙ্কের আর এক নাম রিঙ্গার ল্যাক্টেট স্যালাইন । মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ঘটনার পর ত্রস্ত গোটা রাজ্যবাসী । এই স্যালাইন নেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পাঁচজন প্রসূতি । তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে । তিনজন অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । ইতিমধ্যেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মা কোম্পানির এই স্যালাইন ৷ কিন্তু রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন আসলে কী ? কোন ক্ষেত্রে এই স্যালাইন ব্যবহার করা হয় ? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইটিভি ভারত কথা বলেছে বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রত্নাবলী চক্রবর্তীর সঙ্গে ।
ইটিভি ভারত: রিঙ্গার ল্যাক্টেট বা আরএল স্যালাইন কী ?
চিকিৎসক: যখন একজনের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়, তখন সে মুখ দিয়ে খেতে পারে না । কিন্তু তখনও তাঁর শরীরে প্রয়োজনীয় পদার্থগুলো যাওয়া প্রয়োজন । তাই রিঙ্গার ল্যাক্টেট স্যালাইনের মাধ্যমে রোগীর শরীরে সেই সময় যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠানো হয় ।
ইটিভি ভারত: এই স্যালাইনের মাধ্যমে শরীরে কী কী প্রবেশ করানো হয় ?
চিকিৎসক: রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনে সোডিয়াম, পটাশিয়াম ক্লোরাইড, গ্লুকোজ সব কিছুই মিশ্রিত অবস্থায় থাকে । পরিমাণ মতো সেই সব কিছু শরীরে ফ্লুইড আকারে প্রবেশ করানো হয় । একদিনে সাধারণত 2 বার এক থেকে দুই বোতল এই স্যালাইন রোগীকে দেওয়া হয় ।
ইটিভি ভারত: কিন্তু এই স্যালাইনে বিপদ হচ্ছে কেন ?
চিকিৎসক: এই স্যালাইনে বিপদ তখনই হবে, যদি রোগীর শরীরে যে জিনিসের দরকার নেই, সেটাও ওই স্যালাইনের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করানো হয় । অর্থাৎ ধরুন, রোগীর শরীরে যদি সোডিয়ামের দরকার না থাকে, তাও যদি তাকে আরএল স্যালাইনের মাধ্যমে অতিরিক্ত সোডিয়াম দেওয়া হয়, তখন এই ধরনের সমস্যা দেখা যায় । তবে এর পাশাপাশি ড্রাগ কন্ট্রোলারে দিয়ে ওই স্যালাইনগুলির গুণগত মান বিচার করাও প্রয়োজন । যদি সব দিক থেকে ইতিবাচক উত্তর আসে, তখন কোনও সমস্যা হবে না ।
ইটিভি ভারত: এই স্যালাইনের কি কোনও বিকল্প রয়েছে ?
চিকিৎসক: অ্যান্টিবায়োটিকের যেমন কোনও বিকল্প হয় না, তেমনই এই স্যালাইনেরও বিকল্প হয় না । সারা ভারতে এই স্যালাইন দেওয়া হয় । যদি কোনও রোগীর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে আরএল স্যালাইনের কোম্পানি বদলে দেওয়া হয় । কিন্তু রিঙ্গার ল্যাক্টেট স্যালাইনের কোনও বিকল্প হয় না ।"
উল্লেখ্য, এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি তিনজন প্রসূতির শারীরিক অবস্থার এখনও কোনও পরিবর্তন হয়নি । এখনও তাঁদের আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি ৷ তাঁদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা অতি সঙ্কটজনক ।