কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর: কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ওএসডি কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে তোলাবাজির গুরুতর অভিযোগ জমা পড়েছে থানায় । তবে তিনি তাঁর পরেও স্বমহিমায় নিজের পদে বিরাজমান । পুর-প্রশাসন সূত্রে খবর, মেয়রের ওএসডি'র বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে না কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ।
বিজেপি, সিপিএম কাউন্সিলর বা নেতারা এত দিন কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে নানা আর্থিক দুর্নীতি ও স্বজনপোষনের অভিযোগ তুলেছেন । তবে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ এবার সেটাও হল ৷ মেয়রের ওএসডি'র বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের এক আধিকারিক ।
কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে তিনি একাধিক সরকারি আধিকারিক ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীর থেকে টাকা চাইতেন । এই অভিযোগ সামনে আসার পরই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি । এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ জহর সরকার । তিনি সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, "আমি যখন দুর্নীতির কথা বলেছিলাম তৃণমূলের আমার কথা পছন্দ হয়নি । এখন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের শীর্ষ নেতা তথা কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সহকারীর বিরুদ্ধে নাম ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণার করেছেন ৷ মেয়র আবার সেই সহকারীকে রক্ষা করছেন । অনুগ্রহ করে তৃণমূল দলটিতে সাফাইয়ের কাজ করুন ৷"
চলতি বছরের প্রথম দিকে গার্ডেনরিচ এলাকার বহুতল বিপর্যয়, পরে কলকাতা পুরনিগমের বিল্ডিং বিভাগের সিন্ডিকেট কীভাবে টাকা তোলে কর্মী থেকে আধিকারিক হয়ে, কার কার হাত ঘুরে টাকা আসে, সেই তালিকা দিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তাতে মেয়রের ওএসডি কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ছিল শীর্ষে । বাকি কর্মী আধিকারিকের একাংশের থেকেই এই আধিকারিকের প্রভাব কতটা সেই সম্পর্কে কলকাতা পুরনিগমে কান পাতলেই অনেক কিছু শোনা যায় । তবে এক্কেবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে মেয়রের ওএসডি'র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের নজিরবিহীন ।
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে খবর, কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন পদে বহাল ছিলেন তেমনই আছেন । তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বা হবে না । এই প্রসঙ্গে পুরনিগমের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি মেয়রের ওএসডির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে । তবে আমাদের পুরনিগমে এমন কোনও অভিযোগ হয়নি । পুলিশের তরফে আমাদের কাছে কোনও চিঠি পাঠানো হয়নি । যদি অভিযোগ না করা হয় তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু করা যায় না। অভিযোগ পেলে আইন মাফিক বিভাগীয় তদন্ত ও অভ্যন্তরীণ তদন্ত বা ভিজিলেন্স বসানোর মতো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে ।"