কলকাতা, 16 ডিসেম্বর: আমূল সংস্কার হতে চলেছে 22 কিলোমিটার দীর্ঘ ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ৷ বছর শেষের মুখে বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরনিগম ৷
সময়ের সঙ্গেই বাইক বা গাড়ি চালকদের কাছে দুর্বিষহ রাস্তায় পরিণত হয়েছে ইএম বাইপাস । উঁচুনিচু খানাখন্দে ভর্তি রাস্তায় আকছাড় দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে ৷ বিশেষ করে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন বাইক চালক ও আরোহীরা । কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটির কাছ থেকে ইতিমধ্যে ইএম বাইপাসের দায়িত্ব এসেছে পুরনিগমের হাতে ৷ এরপরেই প্রথমবার ইএম বাইপাসের আমূল সংস্কারের পথে হাঁটতে চলেছে কলকাতা পুরনিগম ।
পরিবেশ বান্ধব মেকানিকাল ম্যাস্টিক ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই এসপি মুখার্জি রোডের রাসবিহারী থেকে হাজরা মোড় সংস্কারের কাজ হয়ে গিয়েছে । এতে যেমন বায়ুদূষণ কম হবে, তেমন রাস্তা মসৃণ ও পোক্ত হবে বলে জানিয়েছে পুরনিগম । এবার সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে গোটা ইএম বাইপাসের 22 কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার হবে । রাস্তা খারাপ থাকার কারণে অধিকাংশ সময় ইএম বাইপাসে দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয় গাড়ির চালক থেকে বাইক চালকদের । এই সংস্কারের ফলে বাইপাসের দীর্ঘ যাত্রাপথ লক্ষ লক্ষ গাড়ির ও বাইক চালকরা স্বস্তির যাত্রা করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে ।
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, 22 কিলোমিটার পথে কোথায় উঁচুনিচু, কোথায় গর্ত, কোথায় খারাপ অবস্থা রাস্তার ধাপে ধাপে মসৃণ করা হবে । ইএম বাইপাসের সঙ্গে যে সমস্ত রাস্তা দুইধারে যুক্ত, সেগুলো মেরামত করা হবে । বর্তমানে রুবি মোড় ও বাঘাযতীন রেল সেতুর মধ্যে রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে । যে অংশগুলোতে বেশি পরিমাণ বাইক চলাচল করে, সেই অংশগুলো আগে প্রাধান্য দিয়ে দেখা হচ্ছে । যেমন যেমন কাজ হবে, তেমন তেমন টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে অর্থ অনুমোদন ও কাজ চলবে । এই কাজ শেষ হলে ছোট গাড়ি থেকে শুরু করে বাইক দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কমবে বলে আশাবাদী পুরনিগম ।
চলতি বছর দুর্গাপুজোর আগে কলকাতা পুরনিগমের কমিশনার রাস্তা বিভাগের আধিকারিকরা গোটা ইএম বাইপাস পরিদর্শন করেন । এরপরেই বৈঠক করে ইএম বাইপাসের আমূল সংস্কার করার একটা প্রাথমিক পরিকল্পনা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে প্রস্তাব করা হয় ।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা কর্পোরেশনের এক আধিকারিক বলেন, "ইএম বাইপাস একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা । দিনের বেশিরভাগ সময়ই যান চলাচলে ব্যস্ত থাকে । এই রাস্তা প্রায় 22 কিলোমিটার দীর্ঘ ৷ ফলে রাস্তার কোনও অংশে কাজ হলে, কোথাও খোঁড়াখুঁড়ি হলে, অনেক ক্ষেত্রে পিচ করা হলেও মসৃণতার দিকে নজর দেওয়া হয় না । আবার কোথাও পিচ উঠে গেলে জোড়া তাপ্পি দেওয়া হয়, তা খানিকটা রাস্তা থেকে নিচু হয়ে যায় ।"
তাঁর কথায়, "অন্যদিকে বেশ কিছু জায়গায় খানাখন্দ থাকলেও নজর এড়িয়ে যাওয়ায় কাজ হয় না । এর ফলে প্রায়শই এই দীর্ঘ রাস্তার বিভিন্ন অংশে ছোট গাড়ি বিশেষ করে দুই চাকাকে দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয় । এই দীর্ঘ রাস্তা ও তার আশপাশের লাগোয়া রাস্তা মসৃণ ও মজবুত করার মধ্যে দিয়ে দুর্ঘটনার প্রবণতা অনেকটাই কমানো যাবে ৷ যান চলাচলে গতি আনা যাবে । ধাপে ধাপে এই দীর্ঘ পথ মসৃণ করা হবে ।"