কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর: অবস্থান-বিক্ষোভের মাঝেও কর্তব্যে অবিচল জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ তাঁদের তৎপরতা ও সাাময়িক চিকিৎসায় প্রাণ বাঁচল এক মহিলা পুলিশ কর্মীর ৷ ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনের সামনে ৷ পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এই ঘটনায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের । পুলিশ তাঁদেরকে বলেছে, "তোমরা না থাকলে বাঁচানো মুশকিল হয়ে যেত মহিলা পুলিশ কর্মীকে ।"
রাজ্য সরকারের চোখ রাঙানি সত্ত্বেও কর্মবিরতিতে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা । প্রায় 42 ঘণ্টার কাছাকাছি স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে রয়েছেন তাঁরা । পাঁচ দফা দাবি নিয়ে চলছে তাঁদের এই অবস্থান বিক্ষোভ । দাবি মানা না পর্যন্ত কাজে যোগদান করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা । বহু সাধারণ মানুষও তাঁদের এই অবস্থান বিক্ষোভের সামিল হয়েছেন । আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বাস্থ্যভবনের সামনে মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশও । তবে এরই মাঝে বুধবার রাত 12টা 30 মিনিট নাগাদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক মহিলা পুলিশ কর্মী ।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলা পুলিশ কর্মীর নাম নিবেদিতা হালদার ৷ তিনি বিধাননগর দক্ষিণ থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত । বুধবার স্বাস্থ্যভবনের ওখানে কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন তিনি । মূলত ওই কনস্টেবলের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে । মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্ট জাতীয় সমস্যা হয় । কিন্তু বুধবার তাঁর কাছে ইনহেলার ছিল না । শ্বাসের সমস্যা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি । আর ঠিক তখনই স্লোগান ও আন্দোলন ছেড়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন জুনিয়র ডাক্তাররা ।
সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা এগিয়ে যান ওই অসুস্থ হয়ে পড়া পুলিশ কর্মীর দিকে । যে মাইক এতক্ষণ চলছিল স্লোগান, সেই মাইকেই তখন ঘোষণা হয় ইনহেলার চেয়ে । ভিড়ের মধ্যে থেকে কেউ ইনহেলার দিয়ে সাহায্য করতে পারবেন কি না, সেই বার্তাই মাইকের মাধ্যমে জুনিয়র ডাক্তারেরা তুলে ধরেন হাজার হাজার লোকের কাছে । এই ঘোষণার পরই মেলে ইনহেলার ৷ সেটি পাওয়ার পর তার ডোজ মেপে ওই পুলিশ কর্মীকে ইনহেলার দেওয়া হয় ।
সেই সময়ে পুলিশ কর্মীর জন্য জরুরি প্রাথমিক এবং গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা ওখানেই সম্পূর্ণ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা । পরবর্তীকালে অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশ কর্মীকে নিয়ে পাঠানো হয় বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে । বর্তমানে সেখানে ভর্তি রয়েছেন ওই কনস্টেবল । পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল ।
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো বলেন,"ওই পুলিশ কনস্টেবলের অ্যাজমা ছিল ৷ হঠাতই তাঁর অ্যাজমার অ্যাটাক হয় ৷ আমাদের যারা প্রতিনিধি ছিলেন তাঁরা তৎক্ষণাৎ গিয়ে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা দেন ৷ ওই পুলিশ কর্মীকে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা না দিলে তাঁর প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটতে পারত ৷"