বিধাননগর, 20 সেপ্টেম্বর: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ৷ এই মামলার কিনারা করতে সিবিআইয়ের আর কতদিন সময় লাগবে, সেই প্রশ্ন তুলে শুক্রবার পথে নামলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷
এ দিন বিধাননগরের স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা ৷ সেই মিছিল থেকে স্লোগান তোলেন, ‘আর কতদিন সময় চাই, জবাব দাও সিবিআই’ ৷ তাঁদের সঙ্গে থাকা ব্যানারে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘আর কবে ?’ সঙ্গে ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ ও ‘জাস্টিস ফর অভয়া’ স্লোগানও দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে ৷
এ দিন মিছিলে অংশ নেওয়া চিকিৎসক অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রথমবার যখন মিছিল করেছিলাম, তখন সিজিও কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্যভবন এসেছিলাম ৷ এবার তার উল্টো করছি৷ এর কারণ, কিছু কিছু দাবি আংশিকভাবে মেটানো যেতে পারে ৷ কিন্তু ন্যায়বিচারের দাবিতে তো সেটা হতে পারে না ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এটার জন্যই তো সবাই পথে নেমেছে ৷ উই ওয়ান্ট জাস্টিস ৷ এই জাস্টিসের প্রশ্নটা এখন সিবিআই ও সুপ্রিম কোর্টের হাতে রয়েছে ৷ এর আগে সিবিআইকে ডেপুটেশন দিয়েছি ৷ আবারও সেটা মনে করিয়ে দিতে চাই সিবিআই-কে যে আমরা যদি অবস্থান তুলেও নিই তাহলেও আমরা তদন্তের উপর নজর রাখব ৷ তাদের উপর আশা আছে, ভরসা রাখছি৷ আমরা চাই তদন্ত তাড়াতাড়ি শেষ হোক ৷’’
উল্লেখ্য, আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের বিষয়টি সামনে আসে গত 9 অগস্ট ৷ তার পর ওই চিকিৎসক পড়ুয়ার মর্মান্তিক পরিণতি বিচার চেয়ে আন্দোলন শুরু করে জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ তাঁরা হাসপাতালগুলিতে থ্রেট কালচার-সহ একাধিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন ৷ লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ চালাতে থাকেন আরজি কর হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই ৷ এরই মাঝে তাঁরা লালবাজার অভিযান করেন ৷ প্রথমদিন লালবাজারে তৎকালীন পুলিশ কমিশনার দেখা না-করায় তাঁরা রাত থেকে সকাল হয়ে দুপুর পর্যন্ত ফিয়ার্স লেনেই অবস্থান-বিক্ষোভ চালান ৷
পরে তৎকালীন নগরপালের হাতেই তাঁর পদত্যাগের দাবি সংক্রান্ত ডেপুটেশন তুলে দিয়ে আসেন ৷ এর কয়েকদিন পর স্বাস্থ্য ভবন অভিযান করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ তার পর থেকে সেখানেই অবস্থান-বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা ৷ এর মধ্যে নবান্ন থেকে কালীঘাট নানা টালবাহানা পেরিয়ে দু’দফায় সরকারের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক হয় ৷ তার পর বদল হয়েছেন কলকাতার নগরপাল ৷ স্বাস্থ্য দফতরেও রদবদল হয়েছে৷ হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ করেছে সরকার ৷
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান যে তাঁরা কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন ৷ আগামিকাল, শনিবার থেকে তাঁরা আংশিকভাবে কাজে যোগ দেবেন ৷ শুক্রবার সেই কর্মসূচির শেষ হল সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান দিয়ে ৷ এখন দেখার তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয় !