কলকাতা, 6 অক্টোবর: দশ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় শেষমেশ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । দাবি জমা দেওয়ার 24 ঘণ্টা সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে আমরণ অনশন শুরুর ঘোষণা করেন তাঁরা । জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় বিরক্ত হয়েই অনশনের সিদ্ধান্ত ৷ তাঁরা আরজি কর মামলার বিচার চান ।
জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, প্রথম দফায় ছ’জন অনশনে বসবেন ৷ আমরণ অনশনের প্রথম সারিতে যে 6 জন জুনিয়র ডাক্তাররা রয়েছেন তাঁরা হলেন- কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, তনয়া পাঁজা ও ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট স্নিগ্ধা হাজরা । আরও রয়েছেন, এসএসকেএম হাসপাতলের পিজিটি অর্ণব মুখোপাধ্যায়, এনআরএসের পিজিটি পুলস্ত্য আচার্য এবং কেপিসি হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা ৷ পরে তাঁদের সঙ্গে বাকিরা যোগ দেবেন ৷ পাশাপাশি স্বচ্ছতা এবং সকলের কাছে নিজেদের দাবি পৌঁছে দিতে মঞ্চের চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
জুনিয়র চিকিৎসকরা এদিন বলেন, ‘‘আমাদের দাবি না-মানায় আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হচ্ছি ৷ আমরণ অনশন করছি ।’’ একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, আমাদের ক্রমাগত আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে । কলকাতা পুলিশ আন্দোলনকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে । রাজ্য সরকার আমাদের দিকে নজর দিচ্ছে না ৷ সরকারের উদাসীন আচরণে তারা ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত অবস্থায় রাজপথে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ।
অনশনে বসলেও কাজে যোগ দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । পূর্ণ কর্মবিরতি তুলে নিয়ে জরুরি, ওপিডি-সহ সমস্ত পরিষেবায় ফিরে গিয়েছেন তাঁরা । শুক্রবার রাত থেকেই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে দেখা গিয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগদান করেছেন । শুক্রবার রাতে অস্ত্রোপচারও করেছেন তাঁরা । চিকিৎসা পরিষেবায় ফিরে গেলেও ন্যায়বিচারের জন্য তাঁদের আন্দোলন চলছে । কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও রাজ্য সরকারের কাছে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তাঁরা । 24 ঘণ্টার ডেডলাইন দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারকে । দেবাশিস হালদার জানিয়েছিলেন, অবস্থান মঞ্চে একটি ঘড়ি থাকবে । প্রতিটি সেকেন্ড-মিনিটের হিসেব হবে । 24 ঘণ্টার মধ্যে দাবি মানা না-হলে অনশন শুরু হবে । সেই কথা মতোই পরিষেবা চালু রাখলেও অনশনে গেলেন চিকিৎসকরা ৷
অন্যদিকে, দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে ধর্মতলা চত্ত্বর ৷ শুরুতে পুলিশের অনুমতি মিললেও পরে আন্দোলনের অনুমতি দেয়নি পুলিশ ৷ ফলে বৃষ্টিতে ভিজে নিজেরাই মঞ্চ বেঁধেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ গতকাল একটি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা ।