ETV Bharat / state

এখনও সঙ্কটে 3 প্রসূতি ! স্যালাইন-কাণ্ডে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দায় নিতে হবে, সরব জুনিয়র চিকিৎসকরা - EXPIRED SALINE DEATH CASE

এখনও সঙ্কটজনক অবস্থা এসএসকেএমে ভর্তি তিনজন প্রসূতির ৷ স্যালাইন-কাণ্ডে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দায় নিতে হবে বলে দাবি জুনিয়র চিকিৎসকদের ৷

ETV BHARAT
স্যালাইন-কাণ্ডে সরব জুনিয়র চিকিৎসকরা (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 15, 2025, 1:17 PM IST

কলকাতা, 15 জানুয়ারি: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য । এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজন প্রসূতির ৷ এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিআইডি । এর মধ্যেই বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ । প্রশ্ন উঠেছে আরএল স্যালাইন নিয়ে । তবে পাশাপাশি সন্দেহ দানা বেঁধেছে চিকিৎসকের গাফিলতি নিয়েও । এসবের মাঝেই সরব ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট ৷ এই ঘটনায় তারা দায়ী করেছে স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে । তাদের 10 দফা দাবিও ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা ।

মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট । সেখানে তারা সরব হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিয়ে । জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, "অক্সিটোসিন প্রসূতিদের দিতেই হয় । এটার নিম্নমান নিয়ে বারবার স্বাস্থ্য ভবনে কথা বলতে গেলে তাঁদের শোকজ, ট্রান্সফার করা হয়েছে । অভয়া আন্দোলনে এই স্ক্যাম নিয়েও আমরা লড়েছি । আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্ত । কিন্তু সেটা তো প্রহসন । তবে ওষুধ নিয়ে তদন্ত আগে কেন হল না ? প্রাণ চলে যাওয়ার পর কেন টনক নড়ল ?"

ETV BHARAT
এখনও সঙ্কটজনক অবস্থা এসএসকেএমে ভর্তি তিনজন প্রসূতির (নিজস্ব চিত্র)

এরপর এই জুনিয়র চিকিৎসকরা সরব হন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের নয়া বিজ্ঞপ্তি নিয়ে । জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস বলেন, "সিনিয়ররা ছিলেন না শোনা যাচ্ছে ৷ হ্যাঁ তদন্ত দরকার । তারপরেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে পিজিটিরা কোনও ওটি অ্যানাস্থেশিয়া করতে পারবেন না । সিনিয়ররা সব করবেন । কিন্তু এনএমসি গাইডলাইনে বলা আছে অন্য কথা । তবে যদি সিনিয়রদেরই করতে হয়, সেই পরিমাণ ডাক্তার আছে ? নিয়োগ কেন হবে না তাহলে ।"

এই বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা তুলে নিয়ে আসেন সেই দুর্নীতি প্রসঙ্গ । দেবাশিসের কথায়, "এটা একটা অস্পষ্ট নির্দেশিকা । গোটা ঘটনার দায় নিগমকে নিতে হবে । তাকে অপসারণ করতে হবে । যাঁরা পলিসি বানান, তাঁরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করুন । সেসব না করে রাজনৈতিক আস্ফালন করে তাঁরা বলছেন রাজ্য স্বাস্থ্যে এক নম্বর । তাহলে কি এই প্রাণহানি মানা যায় ? অনেক চেষ্টা করার পরেও অনেক প্রাণহানি হয়ে যায় ৷ কিন্তু এটা তো আটকানো যেত । তাই এর দায় নিতে হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং স্বাস্থ্যসচিবকে ।"

এদিকে, এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের তিন প্রসূতির শারীরিক অবস্থার এখনও বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি । প্রত্যেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক । তাঁদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা অতি সংকটজনক । হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাম্পি সিংয়ের কিডনিতে সংক্রমণ রয়েছে । তিনি এখনও ভেন্টিলেশনে । সোমবার ও মঙ্গলবার তাঁর ডায়ালিসিস হয়েছে ।

অন্যদিকে, নাসরিন খাতুনেরও একই সমস্যা । তিনিও ভেন্টিলেশনে ভর্তি আছেন ৷ তাঁরও ডায়ালিসিস হয়েছে । তাঁদের ভেন্টিলেশন থেকে বের করার ট্রায়াল চলছে । তবে শারীরিক অবস্থা এখনও একই রকম আছে । আর এক প্রসূতি মিনারা বিবির ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে । প্লেটলেটও কমে গিয়েছে । তাঁর অবস্থাও সঙ্কটজনক হলেও সামান্য উন্নতি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর ।

হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তিনজনের শারীরিক অবস্থা একই আছে । আমাদের চিকিৎসকেরা তাঁদের দেখছেন ।" তাঁদের শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে, মেডিক্যাল বোর্ডে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়িয়ে আট থেকে 13 করা হয়েছে ৷

অন্যদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল থেকে আনা নমুনার দু'ধরনের টেস্ট করা হবে । একটি হল স্টেরিলিটি টেস্ট এবং অপরটি পাইরোজেন টেস্ট । এই টেস্টের রিপোর্ট আসতে 10 দিন সময় লাগবে । এমনটাই খবর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে । সোমবারই রাজ্যের ড্রাগ টেস্টিংয়ের হাতে পৌঁছেছে নমুনা ।

স্টেরিলিটি টেস্টে স্যালাইনের মধ্যে ব্যাকটেরিয়াল নিউট্রিয়েন্ট লিকুইড দেওয়া হয় ব্যাকটেরিয়াকে বাড়তে দেওয়ার জন্য । যদি স্যালাইন বা ওষুধে কোনও ভাবে কোনও ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া থাকে, সেটি পরিপূর্ণ বেড়ে উঠতে 10 দিন সময় লাগবে । অন্যদিকে, পাইরোজেন টেস্টে স্যালাইন যখন তৈরি হয়েছে সেই সময় যে জল ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা কোনওভাবে দূষিত হয়েছিল কি না তা পরীক্ষা করা হয় ৷

কলকাতা, 15 জানুয়ারি: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য । এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থা এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজন প্রসূতির ৷ এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিআইডি । এর মধ্যেই বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ । প্রশ্ন উঠেছে আরএল স্যালাইন নিয়ে । তবে পাশাপাশি সন্দেহ দানা বেঁধেছে চিকিৎসকের গাফিলতি নিয়েও । এসবের মাঝেই সরব ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট ৷ এই ঘটনায় তারা দায়ী করেছে স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে । তাদের 10 দফা দাবিও ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা ।

মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট । সেখানে তারা সরব হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা নিয়ে । জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার বলেন, "অক্সিটোসিন প্রসূতিদের দিতেই হয় । এটার নিম্নমান নিয়ে বারবার স্বাস্থ্য ভবনে কথা বলতে গেলে তাঁদের শোকজ, ট্রান্সফার করা হয়েছে । অভয়া আন্দোলনে এই স্ক্যাম নিয়েও আমরা লড়েছি । আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্ত । কিন্তু সেটা তো প্রহসন । তবে ওষুধ নিয়ে তদন্ত আগে কেন হল না ? প্রাণ চলে যাওয়ার পর কেন টনক নড়ল ?"

ETV BHARAT
এখনও সঙ্কটজনক অবস্থা এসএসকেএমে ভর্তি তিনজন প্রসূতির (নিজস্ব চিত্র)

এরপর এই জুনিয়র চিকিৎসকরা সরব হন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের নয়া বিজ্ঞপ্তি নিয়ে । জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস বলেন, "সিনিয়ররা ছিলেন না শোনা যাচ্ছে ৷ হ্যাঁ তদন্ত দরকার । তারপরেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়েছে পিজিটিরা কোনও ওটি অ্যানাস্থেশিয়া করতে পারবেন না । সিনিয়ররা সব করবেন । কিন্তু এনএমসি গাইডলাইনে বলা আছে অন্য কথা । তবে যদি সিনিয়রদেরই করতে হয়, সেই পরিমাণ ডাক্তার আছে ? নিয়োগ কেন হবে না তাহলে ।"

এই বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা তুলে নিয়ে আসেন সেই দুর্নীতি প্রসঙ্গ । দেবাশিসের কথায়, "এটা একটা অস্পষ্ট নির্দেশিকা । গোটা ঘটনার দায় নিগমকে নিতে হবে । তাকে অপসারণ করতে হবে । যাঁরা পলিসি বানান, তাঁরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করুন । সেসব না করে রাজনৈতিক আস্ফালন করে তাঁরা বলছেন রাজ্য স্বাস্থ্যে এক নম্বর । তাহলে কি এই প্রাণহানি মানা যায় ? অনেক চেষ্টা করার পরেও অনেক প্রাণহানি হয়ে যায় ৷ কিন্তু এটা তো আটকানো যেত । তাই এর দায় নিতে হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রক এবং স্বাস্থ্যসচিবকে ।"

এদিকে, এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের তিন প্রসূতির শারীরিক অবস্থার এখনও বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি । প্রত্যেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক । তাঁদের মধ্যে দু'জনের অবস্থা অতি সংকটজনক । হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাম্পি সিংয়ের কিডনিতে সংক্রমণ রয়েছে । তিনি এখনও ভেন্টিলেশনে । সোমবার ও মঙ্গলবার তাঁর ডায়ালিসিস হয়েছে ।

অন্যদিকে, নাসরিন খাতুনেরও একই সমস্যা । তিনিও ভেন্টিলেশনে ভর্তি আছেন ৷ তাঁরও ডায়ালিসিস হয়েছে । তাঁদের ভেন্টিলেশন থেকে বের করার ট্রায়াল চলছে । তবে শারীরিক অবস্থা এখনও একই রকম আছে । আর এক প্রসূতি মিনারা বিবির ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে । প্লেটলেটও কমে গিয়েছে । তাঁর অবস্থাও সঙ্কটজনক হলেও সামান্য উন্নতি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর ।

হাসপাতালের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তিনজনের শারীরিক অবস্থা একই আছে । আমাদের চিকিৎসকেরা তাঁদের দেখছেন ।" তাঁদের শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে, মেডিক্যাল বোর্ডে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়িয়ে আট থেকে 13 করা হয়েছে ৷

অন্যদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল থেকে আনা নমুনার দু'ধরনের টেস্ট করা হবে । একটি হল স্টেরিলিটি টেস্ট এবং অপরটি পাইরোজেন টেস্ট । এই টেস্টের রিপোর্ট আসতে 10 দিন সময় লাগবে । এমনটাই খবর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে । সোমবারই রাজ্যের ড্রাগ টেস্টিংয়ের হাতে পৌঁছেছে নমুনা ।

স্টেরিলিটি টেস্টে স্যালাইনের মধ্যে ব্যাকটেরিয়াল নিউট্রিয়েন্ট লিকুইড দেওয়া হয় ব্যাকটেরিয়াকে বাড়তে দেওয়ার জন্য । যদি স্যালাইন বা ওষুধে কোনও ভাবে কোনও ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া থাকে, সেটি পরিপূর্ণ বেড়ে উঠতে 10 দিন সময় লাগবে । অন্যদিকে, পাইরোজেন টেস্টে স্যালাইন যখন তৈরি হয়েছে সেই সময় যে জল ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা কোনওভাবে দূষিত হয়েছিল কি না তা পরীক্ষা করা হয় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.