শিলিগুড়ি, 20 নভেম্বর: মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য সরকার ৷ আর তারই বিরুদ্ধে এবার প্রতিবাদে নামল জুনিয়র ডক্টরস ফোরাম ৷ বুধবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাল তারা ৷ অভিযোগ, আদালতে কলেজ কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে গিয়ে, মিথ্যে কথা বলেছে রাজ্য সরকার ৷
একইসঙ্গে কলেজ কাউন্সিল যে পাঁচ পড়ুয়াকে থ্রেট কালচার চালানোর অভিযোগে সাসপেন্ড করেছিল, তাতে আদালতের স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন ফোরামের চিকিৎসকরা ৷ জুনিয়র ডক্টরস ফোরামের অভিযোগ, রাজ্য সরকার সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়াদের মামলা নিজেদের হাতে নিয়ে আদালতে মিথ্যাচার করছে ৷ আদালতে সঠিক তথ্য পেশ করা হয়নি ৷
এ নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হাউজ স্টাফ শাহরিয়ার আলম বলেন, "জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানেই তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ছাত্রছাত্রীদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা নবান্নের অনুমতি ছাড়া কেন দেওয়া হয়েছে ? কমিটি গঠন করে তিনদিন ধরে তদন্ত হয়েছে ৷ তারপর কলেজ কাউন্সিল 6 মাসের সাসপেনশনের নির্দেশ দিয়েছে ৷ এখন সরকার পক্ষের আইনজীবী দাবি করছেন, কোনও উপযুক্ত তদন্ত ও প্রমাণাদি ছাড়াই নাকি তাঁদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে ৷"
নিজের দাবির সপক্ষে শাহরিয়ার আলম বলেন, "যে শাস্তি তাঁদের দেওয়া হয়েছে, তা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের গাইডলাইন মেনে হয়েছে ৷ কলেজ কাউন্সিলের স্বাধীনতাকে এরা কেড়ে নিতে চাইছে ৷ রাজ্য সরকার ওই স্বৈরাচারীদের বার্তা দিচ্ছে, তোমারা তোমাদের র্যাগিং চালিয়ে যাও ৷ আমরা তোমাদের পাশে রয়েছি ৷ আমাদের দাবি, উচ্চ আদালতে যেন কোনও মিথ্যাচার না-করা হয় ৷"
তিনি বলেন, "যে নোটিশ আমরা হাতে পেয়েছি, তাতে তদন্ত কমিটির নাম রয়েছে ৷ কিন্তু, আদালতে বলা হচ্ছে কোনও তদন্ত কমিটি হয়নি ৷ এই মিথ্যাচার যেন না হয় ৷ কলেজ থেকে যে হলফনামা যাবে, সেখানে যেন সত্যি কথা লেখা হয় ৷ নিয়ম মেনে শাস্তি দেওয়া হয়েছে ৷ সে কথা যেন উল্লেখ থাকে সেখানে ৷ না-হলে যাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা ভয়ে রয়েছেন ৷"
এ বিষয় নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, "বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না ৷ আদালতের নির্দেশ আমরা মানব ৷ এই মামলার শুনানি বাকি রয়েছে ৷"
হাসপাতালের চিকিৎসক ও সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিশীথরঞ্জন মল্লিক বলেন, "কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকেই সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, কাউন্সিলের সিদ্ধান্তটাকে মান্যতা দেওয়া হল না, সেটা স্পষ্ট ৷"