কলকাতা, 6 অক্টোবর: জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মৃতার ময়নাতদন্ত হবে কল্যাণী এইমস অথবা রাজ্য সরকারের জেএনএম হাসপাতালে ৷ ময়নাতদন্ত করবেন এইমসের বিশেষজ্ঞরা ৷ নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের ৷ যদি কল্যাণী এইমসে পরিকাঠামো সংক্রান্ত কোনও সমস্যা না থাকে তাহলে সেখানেই ময়নাতদন্ত করতে হবে। তেমন কোনও সমস্যা হলে ময়নাতদন্ত হবে জেএনএম হাসপাতালে । তবে দুটি ক্ষেত্রেই ময়নাতদন্ত করবেন এইমসে বিশেষশজ্ঞরাই।
রবিবার জয়নগর-কাণ্ড নিয়ে মামলার বিশেষ শুনানিতে বিচারপতি বলেন, সোমবার বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ দেহ পৌঁছবে এইমস হাসপাতালে ৷ সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ৷ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত থাকবেন বারুইপুরের এসিজেএম ৷
প্রসঙ্গত, জয়নগরে মৃত নাবালিকার দেহ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য বারুইপুর আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন তার বাবা ৷ তবে বারুইপুর আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জানান, আদালতের এক্তিয়ার নেই এই নির্দেশ দেওয়ার । তবে হাইকোর্ট সম্প্রতি অন্য একটি মামলায় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় হাসপাতালে এই ধরনের ঘটনায় দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল । সেই ঘটনা মাথায় রেখেই পরিবারের সম্মতি নিয়ে তাঁদের আর্জি রাজ্য পুলিশ হাইকোর্টে পেশ করে ৷
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে জরুরি ভিত্তিতে মামলাটির শুনানির আবেদন করা হয় । প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলার শুনানির জন্য নির্দেশ দেন । তাঁর নির্দেশ মতো আজ, রবিবার দুপুর দুটোয় ওই মামলার জরুরি শুনানি শুরু হয় ৷ এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মামলাটিকে অবিলম্বে বিশেষ পকসো আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ৷ তিনি বলেন, "আমি অসন্তোষ প্রকাশ করেছি, কেন সুরতহাল রিপোর্ট দেখেও পকসো যোগ করা হয়নি ?"
দেহের ময়নাতদন্ত কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে করার আবেদন জানানো হলেও, কমান্ড হাসপাতালের পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা থাকায় বিচারপতি বলেন, কল্যাণী জেএনএম হাসাপাতালে এইমসের বিশেষজ্ঞরা ময়নাতদন্ত করবেন । নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের সময় জেএনএম হাসপাতালের কোনও কর্মী সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন না । বারুইপুর কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে ।
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের পর বারবার প্রশ্ন উঠেছে নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত নিয়ে ৷ তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁর ময়নাতদন্তে অনেক ফাঁকফোকড় রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে ৷ এমনকি দ্বিতীয়বার যাতে চিকিৎসক ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্ত করতে না-হয়, সেজন্য দেহ তড়িঘড়ি শ্মশানে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে ৷ এসবের পর জয়নগরের ঘটনাতেও ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কেন্দ্রীয় হাসপাতালে মেয়ের দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের আর্জি জানান মৃতার বাবা ৷
শনিবার রাতে কাটাপুকুর মর্গে পুলিশের সঙ্গে এই নিয়ে ধস্তাধস্তি হয় সিপিএম কর্মীদের ৷ বিক্ষোভ দেখায় বিজেপিও ৷ তারা প্রত্যেকেই দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছিল ৷ কমান্ড হাসপাতালে নির্যাতিতা শিশুর দেহের ময়নাতদন্তের দাবি জানানো হয় ৷