ETV Bharat / state

কালীঘাট থেকে প্রথম মেলে গুপ্ত আমলের মুদ্রা, জানুন ইতিহাস - GUPTA DYNASTY COINS

মুদ্রার নিজস্ব কথা থাকে । সেই কথা শুনতে হয় । কিন্তু কীভাবে কথা বলবে মুদ্রা ? পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে অধ্যাপক গল্প শোনালেন ভারতীয় জাদুঘরে ।

Indian Museum kolkata
মুদ্রার সঙ্গে পড়ুয়াদের পরিচিত করাচ্ছেন অধ্যাপক (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 16, 2025, 5:40 PM IST

Updated : Jan 16, 2025, 6:41 PM IST

কলকাতা, 16 জানুয়ারি: মুদ্রাও কথা বলে ! কালীঘাট থেকে প্রথম পাওয়া গিয়েছিল গুপ্ত আমলের মুদ্রা ৷ কিন্তু সেই মুদ্রাগুলি আর অবশিষ্ট নেই কলকাতায় ৷ কিছু রয়েছে বেনারসের ভারত কলা কেন্দ্র ও 24টি লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ৷ সেই মুদ্রার যাত্রাপথের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে ভিড় ভারতীয় জাদুঘরে ৷ পড়ুয়াদের সেই মুদ্রার গল্প শোনালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার ।

প্রতি মঙ্গলবার 'টিউসডে টেলস: মিথস, মেমোরিস এবং মাস্টারপিস' নামে সাপ্তাহিক টক সিরিজ চালু হয়েছে ভারতীয় জাদুঘরে ৷ সেখানেই মঙ্গলবার মুদ্রার যাবতীয় খুঁটিনাটি নিয়ে গল্প শোনানো হয় ৷ পড়ুয়াদের হাতে-কলমে মুদ্রা চেনালেন ও তার ইতিহাস বলে দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার ।

মুদ্রার অজানা কথা (ইটিভি ভারত)

টাকশাল থেকে জাদুঘরে মুদ্রার যাত্রাপথ

তাঁর কথায়, টাকশালে তৈরি হওয়া সমস্ত মুদ্রা জাদুঘরে স্থান পায় না । কিছু থেকে যায় সংগ্রাহকদের কাছে । কিছু চলে আসে জাদুঘরে । এই টাকশাল থেকে জাদুঘরে মুদ্রার যাত্রাপথ কেমন হয় ?

Indian Museum kolkata
ভারতীয় জাদুঘরের এই উদ্যোগে খুশি পড়ুয়ারা (নিজস্ব ছবি)

ইটিভি ভারতকে অধ্যাপক বলেন, "এটাকে আমরা দু'ভাবে ভাবতে পারি । মিউজিয়ামে মুদ্রা থাকলে অনেক মানুষ ও গবেষক তা দেখতে পান । আবার সংগ্রাহকদের কাছে মুদ্রা থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ । মানুষের মধ্যে উৎসাহ বৃদ্ধি করে ।" আর এসব বলতে গিয়েই অধ্যাপক পড়ুয়াদের শোনালেন, কালীঘাট থেকে প্রথম গুপ্ত আমলের মুদ্রা পাওয়ার ইতিহাস । যা এখন আর কলকাতায় নেই । এমনকি, হাতে গোনা 24টি গুপ্ত যুগের মুদ্রা ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আছে । বাকিটা ভিন দেশে ।

গুপ্ত যুগের মুদ্রার ইতিহাস

সুস্মিতা বসু মজুমদারের দাবি, কলকাতায় নবকৃষ্ণ দেবের জমি থেকে 200'রও বেশি মুদ্রা পাওয়া গিয়েছিল ৷ এই মুদ্রাগুলো তৎকালীন গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংসকে দিয়ে দেওয়া হয় । পরবর্তীতে তাঁর থেকে 172টি মুদ্রা ওয়ারেন হেস্টিংস লন্ডনে পাঠিয়ে দেন । হাতে গোনা 30টি মুদ্রা হেস্টিংস নিজের কাছে রেখেছিলেন । যেগুলিও পরবর্তীকালে উপহার হিসেবে তিনি বিতরণ করেন । সেভাবে কিছু মুদ্রা চলে যায় বেনারসে, ভারত কলা কেন্দ্রে ৷ দেশে একমাত্র বেনারসে এখন রয়েছে গুপ্ত আমলের মুদ্রা ৷ যদিও যেসময় মুদ্রাগুলি উদ্ধার হয় তখন বোঝাই যায়নি এটা গুপ্ত সাম্রাজ্যের ।

Indian Museum kolkata
মুদ্রার গল্প শোনালেন অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার (নিজস্ব ছবি)

মুদ্রার নিজস্ব কথা থাকে

বইতে পড়া মুদ্রাগুলি চোখের সামনে দেখতে পেয়ে অভিভূত পড়ুয়ারাও । হাতে কলমে তারা অনেক কিছু শিখছেন বলে জানাচ্ছে ৷ তাদের মধ্যে শিল্পী নাইয়া ও সৌম্যদীপ মিত্র বলছে, "বইতে পড়া একরকম । কিন্তু চোখের সামনে মুদ্রা দেখতে পেলে, বুঝতেও সুবিধা হয় ।" মুদ্রা গ্যালারি ঘুরে ঘুরে অধ্যাপক যখন পড়ুয়াদের বোঝাচ্ছেন, তারাও কিন্তু মন দিয়ে তা শুনে নোট নিয়ে নিচ্ছেন । কেবল গুপ্ত আমলের মুদ্রা নয়, টাকশাল থেকে জাদুঘর পর্যন্ত মুদ্রার গোটা যাত্রাপথ সম্পর্কে জানতে পারছেন সাধারণ মানুষ থেকে পড়ুয়ারা ৷ এতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলেই মনে করছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ৷

Indian Museum kolkata
মুদ্রা সম্পর্কে জানতে জাদুঘরে ভিড় (নিজস্ব ছবি)

ভারতীয় জাদুঘরের নয়া উদ্যোগ

ভারতীয় জাদুঘরের ডেপুটি ডিরেক্টর সায়ন ভট্টাচার্য বলেন, "টিউসডে টেলস: মিথস, মেমোরিস এবং মাস্টারপিস- সাপ্তাহিক টক সিরিজে আমরা ঐতিহাসিক ধন, শিল্প এবং সংস্কৃতির মনোমুগ্ধকর গল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করি ৷ এই সপ্তাহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার, 'দ্য জার্নি অফ কয়েন: ফ্রম মিন্ট টু মিউজিয়াম' বিষয়ে আলোচনা করেছেন । এর ফলে ওরা যা পড়াশোনা করছে, সেগুলো হাতে কলমে জানতে পারে ।"

তাঁর কথায়, "এই নতুন গ্য়ালারি টক সিরিজে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে ৷ প্রত্যেকদিন সাত থেকে আট হাজার মানুষ ভারতীয় জাদুঘরে গ্য়ালারি টক শুনতে আসছে ৷ বিশেষত স্কুল ও কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ভীষণ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ৷ মুদ্রার কথা শুধু বইয়ের পাতায় পড়া না, এখানে মুদ্রা কথা বলছে ৷"

কলকাতা, 16 জানুয়ারি: মুদ্রাও কথা বলে ! কালীঘাট থেকে প্রথম পাওয়া গিয়েছিল গুপ্ত আমলের মুদ্রা ৷ কিন্তু সেই মুদ্রাগুলি আর অবশিষ্ট নেই কলকাতায় ৷ কিছু রয়েছে বেনারসের ভারত কলা কেন্দ্র ও 24টি লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ৷ সেই মুদ্রার যাত্রাপথের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে ভিড় ভারতীয় জাদুঘরে ৷ পড়ুয়াদের সেই মুদ্রার গল্প শোনালেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার ।

প্রতি মঙ্গলবার 'টিউসডে টেলস: মিথস, মেমোরিস এবং মাস্টারপিস' নামে সাপ্তাহিক টক সিরিজ চালু হয়েছে ভারতীয় জাদুঘরে ৷ সেখানেই মঙ্গলবার মুদ্রার যাবতীয় খুঁটিনাটি নিয়ে গল্প শোনানো হয় ৷ পড়ুয়াদের হাতে-কলমে মুদ্রা চেনালেন ও তার ইতিহাস বলে দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার ।

মুদ্রার অজানা কথা (ইটিভি ভারত)

টাকশাল থেকে জাদুঘরে মুদ্রার যাত্রাপথ

তাঁর কথায়, টাকশালে তৈরি হওয়া সমস্ত মুদ্রা জাদুঘরে স্থান পায় না । কিছু থেকে যায় সংগ্রাহকদের কাছে । কিছু চলে আসে জাদুঘরে । এই টাকশাল থেকে জাদুঘরে মুদ্রার যাত্রাপথ কেমন হয় ?

Indian Museum kolkata
ভারতীয় জাদুঘরের এই উদ্যোগে খুশি পড়ুয়ারা (নিজস্ব ছবি)

ইটিভি ভারতকে অধ্যাপক বলেন, "এটাকে আমরা দু'ভাবে ভাবতে পারি । মিউজিয়ামে মুদ্রা থাকলে অনেক মানুষ ও গবেষক তা দেখতে পান । আবার সংগ্রাহকদের কাছে মুদ্রা থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ । মানুষের মধ্যে উৎসাহ বৃদ্ধি করে ।" আর এসব বলতে গিয়েই অধ্যাপক পড়ুয়াদের শোনালেন, কালীঘাট থেকে প্রথম গুপ্ত আমলের মুদ্রা পাওয়ার ইতিহাস । যা এখন আর কলকাতায় নেই । এমনকি, হাতে গোনা 24টি গুপ্ত যুগের মুদ্রা ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আছে । বাকিটা ভিন দেশে ।

গুপ্ত যুগের মুদ্রার ইতিহাস

সুস্মিতা বসু মজুমদারের দাবি, কলকাতায় নবকৃষ্ণ দেবের জমি থেকে 200'রও বেশি মুদ্রা পাওয়া গিয়েছিল ৷ এই মুদ্রাগুলো তৎকালীন গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংসকে দিয়ে দেওয়া হয় । পরবর্তীতে তাঁর থেকে 172টি মুদ্রা ওয়ারেন হেস্টিংস লন্ডনে পাঠিয়ে দেন । হাতে গোনা 30টি মুদ্রা হেস্টিংস নিজের কাছে রেখেছিলেন । যেগুলিও পরবর্তীকালে উপহার হিসেবে তিনি বিতরণ করেন । সেভাবে কিছু মুদ্রা চলে যায় বেনারসে, ভারত কলা কেন্দ্রে ৷ দেশে একমাত্র বেনারসে এখন রয়েছে গুপ্ত আমলের মুদ্রা ৷ যদিও যেসময় মুদ্রাগুলি উদ্ধার হয় তখন বোঝাই যায়নি এটা গুপ্ত সাম্রাজ্যের ।

Indian Museum kolkata
মুদ্রার গল্প শোনালেন অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার (নিজস্ব ছবি)

মুদ্রার নিজস্ব কথা থাকে

বইতে পড়া মুদ্রাগুলি চোখের সামনে দেখতে পেয়ে অভিভূত পড়ুয়ারাও । হাতে কলমে তারা অনেক কিছু শিখছেন বলে জানাচ্ছে ৷ তাদের মধ্যে শিল্পী নাইয়া ও সৌম্যদীপ মিত্র বলছে, "বইতে পড়া একরকম । কিন্তু চোখের সামনে মুদ্রা দেখতে পেলে, বুঝতেও সুবিধা হয় ।" মুদ্রা গ্যালারি ঘুরে ঘুরে অধ্যাপক যখন পড়ুয়াদের বোঝাচ্ছেন, তারাও কিন্তু মন দিয়ে তা শুনে নোট নিয়ে নিচ্ছেন । কেবল গুপ্ত আমলের মুদ্রা নয়, টাকশাল থেকে জাদুঘর পর্যন্ত মুদ্রার গোটা যাত্রাপথ সম্পর্কে জানতে পারছেন সাধারণ মানুষ থেকে পড়ুয়ারা ৷ এতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলেই মনে করছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ৷

Indian Museum kolkata
মুদ্রা সম্পর্কে জানতে জাদুঘরে ভিড় (নিজস্ব ছবি)

ভারতীয় জাদুঘরের নয়া উদ্যোগ

ভারতীয় জাদুঘরের ডেপুটি ডিরেক্টর সায়ন ভট্টাচার্য বলেন, "টিউসডে টেলস: মিথস, মেমোরিস এবং মাস্টারপিস- সাপ্তাহিক টক সিরিজে আমরা ঐতিহাসিক ধন, শিল্প এবং সংস্কৃতির মনোমুগ্ধকর গল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করি ৷ এই সপ্তাহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুস্মিতা বসু মজুমদার, 'দ্য জার্নি অফ কয়েন: ফ্রম মিন্ট টু মিউজিয়াম' বিষয়ে আলোচনা করেছেন । এর ফলে ওরা যা পড়াশোনা করছে, সেগুলো হাতে কলমে জানতে পারে ।"

তাঁর কথায়, "এই নতুন গ্য়ালারি টক সিরিজে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে ৷ প্রত্যেকদিন সাত থেকে আট হাজার মানুষ ভারতীয় জাদুঘরে গ্য়ালারি টক শুনতে আসছে ৷ বিশেষত স্কুল ও কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে ভীষণ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে ৷ মুদ্রার কথা শুধু বইয়ের পাতায় পড়া না, এখানে মুদ্রা কথা বলছে ৷"

Last Updated : Jan 16, 2025, 6:41 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.