জলপাইগুড়ি, 14 এপ্রিল: 2019 সালে জলপাইগুড়ি লোকসভা আসন থেকে প্রথমবার জয়ী হয়ে সাংসদ হন বিজেপির জয়ন্ত রায় ৷ 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর উপরই ভরসা রেখেছেন মোদি-শাহরা ৷ সেই ভরসা কি তিনি রাখতে পারবেন ? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জলপাইগুড়িতে ৷ জয়ন্তকুমার রায় অবশ্য আত্মবিশ্বাসী ৷ পাঁচ বছর আগের ভোটে তিনি যে প্রতিশ্রুতিগুলি দিয়েছিলেন, সেগুলির মধ্যে যা যা পূরণ করতে পেরেছেন, এবারের নির্বাচনে সেটাই তাঁর হাতিয়ার ৷ প্রচারে সেই কথাও তুলেও ধরছেন তিনি ৷ সেই প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ চালু, দার্জিলিং মেলকে হলদিবাড়ি থেকে চালানো, বন্দেভারত এক্সপ্রেস চালু করা ৷ এগুলি সবই হয়েছে ৷ তাই মানুষের কাছে সেই কথা তুলে ধরছেন তিনি ৷
পাশাপাশি আগামীতে কী কাজ করতে চান, সেই কথাও জলপাইগুড়ির ভোটারদের বোঝাচ্ছেন জয়ন্ত ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, ‘‘পর্যটনের কীভাবে উন্নতি সাধন করা যায় সেটা দেখতে হবে । রাজ্য সরকারের সহযোগিতা খুব প্রয়োজন । তেঁতুলিয়া করিডর চালুর কাজটা করতে চাই । কাজটা অনেকটা এগিয়েছে । জলপাইগুড়ির থেকে কলকাতার দূরত্ব 575 কিলোমিটারের রাস্তা অনেকটা কমে যাবে। এখানকার ব্যবসা বেড়ে যাবে ।’’
তাছাড়া কিছু বড়মাপের উন্নয়নমূলক কাজ তিনি করার চেষ্টা করছেন বলেও জানালেন ৷ সাংসদের কথায়, "যে কাজগুলো হাতে নিয়েছি, সেগুলো খুব বড় মাপের কাজ । একটা উদাহরণ দিতে চাই ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানকে কিভাবে একসঙ্গে আনা যায়, সেই চেষ্টা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে । সেই কাজটা করার আমিও চেষ্টা করছি ।"
কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার কথা তুলে ধরছে শাসক দল ৷ কেন্দ্র 100 দিনের কাজ-আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তৃণমূলের । এই অভিযোগের জবাব কি আছে জলপাইগুড়ির সাংসদের কাছে ? জয়ন্তকুমার রায় বলেন, "100 দিনের টাকা না-দিলে এত দুই নম্বরি হল কী করে ? তাদের হিসেব দিতে বাধা কোথায় ? প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় যদি ভালো কাজ করত, তাহলে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে এত অভিযোগ কেন ? এগুলো তাদের মুখে শোভা পায় না । এগুলো নিয়ে চুপ থাকাই ভালো৷ না হলে ফের চোর অপবাদ শুনতে হবে ।’’
কিছু মানুষ বলছেন জয়ন্ত রায় ভালো ৷ আবার কেউ কেউ নিখোঁজের পোস্টার দিচ্ছেন ৷ এই বিষয়ে তিনি বলেন, "মানুষের ভালোবাসার থেকে বড় কিছু নেই । মানুষ পাশে থেকেছে বলেই কাজ করতে পেরেছি । আশা করব এবারও আশীর্বাদ করবেন । আমার সম্পর্কে খারাপ তো বলতে পারেনি । চোর তো বলতে পারেনি । নিখোঁজ কী ? গত পাঁচ বছরে প্রত্যেক দিন মানুষ দেখেছে । থানায় গিয়ে মিসিং ডায়েরি করুক না ।’’
পাশাপাশি তিনি পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের উদ্দেশ্যে ৷ জলপাইগুড়ির সাংসদের প্রশ্ন, "তৃণমূল নেতাদের বলুন না কেন দত্তক গ্রামের কাজ করতে পারিনি ? তারাই উত্তর দিক । চা-বলয়ের মানুষদের ন্যূনতম মজুরি চালু হয়নি । রাজ্য সরকারকে বলব চা-শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি চালু করুক । এই মানুষগুলো যে সুবিধা পাওয়ার কথা, তা পাচ্ছেন না । আমি চা-শ্রমিকদের নিয়ে কী করা যায়, তা শ্রমমন্ত্রককে জানিয়েছি ।’’ 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ি থেকে বিজেপির জয়ন্তকুমার রায় 1 লক্ষ 84 হাজার 4 ভোটে জিতেছিলেন তাঁর আশা এবার তিনি দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতবেন ৷
আরও পড়ুন: