কলকাতা, 4 মে: আচার্য এবং রাজ্য সরকারের বিবাদ ভুলে দু'পক্ষের সম্মতিতেই গত 22 এপ্রিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ হন অস্থায়ী উপাচার্য, ভাস্কর গুপ্ত । তাঁর নিয়োগের পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংগঠন শুভেচ্ছা জানায় তাঁকে । এমনকী, শুভেচ্ছাবার্তা তিনি পেয়েছেন আচার্য ও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর থেকেও। এরপরই ইটিভি ভারতের একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অনুভূতির কথা তুলে ধরলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত ।
* দীর্ঘ বিবাদের মধ্যে আপনি উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন, কী বলবেন ?
ভাস্কর গুপ্ত: আমি রাজ্য সরকার এবং আচার্য দু'জনের থেকেই সম্মতি এবং সহযোগিতা পেয়েছি। আমি এই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিপুত্র। বহু বছর বাবা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছিলেন। তখন পরিবার ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারেই। সেখানেই জন্ম আমার। তারপর পড়াশোনাও যাদবপুরে। বহু বছর ডিনের দায়িত্ব পালনের পর এখন উপাচার্য। তাই আমি সম্পূর্ণ 'যাদবপুরীয়ান'।
* সম্প্রতি ব়্যাগিং ইস্যু নিয়ে উত্তাল ছিল যাদবপুর, কীভাবে দেখছেন আপনি?
ভাস্কর গুপ্ত: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক দিক থেকে সারা বিশ্বে একটা স্থান অধিকার করেছে। যদি ব়্যাগিংয়ের কথা বলি, তাহলে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন এসব ভাবা যেত না। এর জন্য দায়ী আমাদের সমাজ সচেতনতার অভাব। যা দুর্ভাগ্যজনক। যাদবপুরে সচেতনতা, আন্দোলন আসলে অন্য ভাবে দেখানো হয়। তাতে মনে হয় যাদবপুরে রাজনীতি ছাড়া কিচ্ছু হয় না ।
* যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত আটকানো সম্ভব?
ভাস্কর গুপ্ত: বহিরাগত আটকানোর কাজ চলছে। গত মাস চারেক ধরেই কাজ চলছে। যখন রাতে ক্যাম্পাসের গেট বন্ধ হয় তখন নিয়ম করে আমাদের সিকিউরিটি ভাইরা ক্যাম্পাসে সতর্ক হয়ে টহল দিচ্ছেন। বেশ কিছু বহিরাগতকে তাঁরা ধরেছেন। এতে ছাত্ররাও সহযোগিতা করছে। অনেক সময় মাদকদ্রব্য ধরা পড়লে তাও কেড়ে নিচ্ছি। তবে এতে অভিভাবকদেরও সহযোগিতা করতে হবে।
* আন্দোলনের জেরে কী কাজ করা সম্ভব হয় না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে?
ভাস্কর গুপ্ত: আমি নিজে ছাত্র আন্দোলন করেছি, শিক্ষক আন্দোলন করেছি । আমি উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরেও কাজ করে চলেছি । একেবারে মনে হচ্ছে না এই আন্দোলনের জেরে আমি কাজ করতে পারছি না। বরং আমি মনে করি রাজনীতি একটা ইতিবাচক দিক। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা রাজনীতি করে বলেই তাঁরা সবসময় খারাপ কাজ আটকাতে পেরেছে। একটা ভুল হয়েছে। কিন্তু সবার চেষ্টায় আবার ঠিক করতে হবে।
* যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নত করতে নতুন কী ভাবছেন ?
ভাস্কর গুপ্ত: অনেক কিছু পরিকল্পনা আছে। তবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগেই যে যে জায়গায় আমাদের একটু ত্রুটি রয়েছে সেগুলোকে ঠিক করতে হবে। আমাদের কর্মসমিতির বৈঠক বহু বছর হয়নি। সেটা নিয়মিত করতে হবে। যে যে মিটিংগুলো আটকে ছিল সেগুলো শুরু করে দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন এবং গবেষণার জন্য ল্যাবগুলো 24 ঘণ্টা খুলে রাখার পরিকল্পনা আছে। তার সঙ্গে গবেষকদের নিয়মিত একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ দেওয়ার ব্যবস্থা করব।
আরও পড়ুন: