দুর্গাপুর, 31 মার্চ: পূর্বের পর পশ্চিম বর্ধমান ৷ তারকা প্রার্থীর সামনেই গোষ্ঠীকোন্দল ৷ রবিবার প্রচারের সময় তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের সামনেই দুর্গাপুর নগর নিগমের 12 নম্বর ওয়ার্ডের আমরাই গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ । আর তা থামাতে না পেরে ক্লান্ত প্রার্থী কীর্তি আজাদ ঢুকে পড়লেন শঙ্করানন্দ আনন্দ আশ্রমের মন্দিরে । সেখানে প্রায় আধ ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে মিনিট তারপর প্রচারে বেরোলেন ৷
2011 সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদলের পর দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের রাশ সিটুর হাতবদল হয়ে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির হাতে আসে । শ্রমিক নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে 12 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা শেখ শাহাবুদ্দিন-সহ অন্যান্যরা এই ঠিকা শ্রমিক সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব পান । তখন থেকেই 12 নম্বর ওয়ার্ডে শুরু হয়ে যায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব । একদিকে আমিনুর রহমান ও তার গোষ্ঠী আর অন্যদিকে শেখ শাহাবুদ্দিন ও তার গোষ্ঠী । মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল 12 নম্বর ওয়ার্ড । এর মাঝেই একদিন গুলিবিদ্ধ হন শেখ শাহাবুদ্দিন ৷ কিছুদিন আগে আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ও জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটকের হাত ধরে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের কমিটিতে বদল আসার পর এই অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয় । শেখ শাহাবুদ্দিন এবং তাঁর সঙ্গীদের জায়গায় কমিটিতে রাখা হয় আমিনুর রহমান ও তাঁর সঙ্গীদের ।
তাতেই নতুন করে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ঘৃতাহুতি পড়ে । এতদিন ধিক ধিক করে জ্বলছিল আগুন । রবিবাসরীয় সকালে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ 12 নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার করতে আসেন ৷ সেখানেই 2 নম্বর ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় শেখ শাহাবুদ্দিনকে ৷ শহিদ বেদিতে মাল্যদান করার পর কীর্তি আজাদকে সঙ্গে নিয়ে শাহাবুদ্দিন ও তাঁর দলবল আমরাই গ্রামের রাস্তায় মিছিল শুরু করেন । 300 মিটার দূরে দাঁড়িয়ে ছিল আমিনুর রহমান ও তাঁর দলবল । কীর্তি আজাদকে নিয়ে শাহাবুদ্দিন ও তাঁর দলবল সেখানে যাওয়া মাত্রই শুরু হয়ে যায় দুই পক্ষের হাতাহাতি । অস্বস্তিতে পড়ে যান প্রার্থী-সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্বরা । প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কেও দেখা যায় ঘটনাস্থলে । দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন কীর্তি আজাদ । সামনেই থাকা একটি মন্দিরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে দেখা যায় কীর্তি আজাদকে ।
যদিও প্রার্থী এই ঘটনাকে গোষ্ঠী কোন্দল বলতে নারাজ ৷ তাঁর কথায়,"কে আগে এসে আমাকে শুভেচ্ছা জানাবে তাই নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় ৷ এসবই কর্মীদের অতি উৎসাহ ও প্রেম ৷" ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে শেখ শাহাবুদ্দিন বলেন, "আমরা যখন প্রার্থীকে নিয়ে মিছিল করছিলাম সেই সময় অনেক অবাঞ্ছিত লোক ঢুকে পড়ে আমাদের মিছিলে । তারাই মূলত গন্ডগোল করতে শুরু করে । আমি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব । যাতে দুষ্কৃতীদের খুঁজে শাস্তি দেওয়া যায় ৷"
যদিও এই ঘটনায় আমিনুর রহমান বা তাঁর গোষ্ঠীর কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি ।
আরও পড়ুন :