শিলিগুড়ি, 10 ফেব্রুয়ারি: সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ঝামেলা । তাতে জখম দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর কেন্দ্রের বদলে জায়গা হল হাসপাতালে । সেখান থেকেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিল তারা । ঘটনাটি ঘটেছে দার্জিলিংয়ের শিলিগুড়িতে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি পুরনিগমের 4 নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালাপট্টির বাসিন্দা দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আফরিন আনসারি ও সাইনা আনসারি । 4 নম্বর ওয়ার্ডেরই রাজেন্দ্র প্রসাদ হাইস্কুলের ছাত্রী তারা । হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে তাদের সিট ছিল । পরিবারের অভিযোগ, তাদের পারিবারিক ভাঙাচোরার দোকানের ব্যবসা রয়েছে । মাঝে মধ্যেই জিনিস চুরি হত । সেই চুরি রুখতেই বাড়ি ও বাড়ির বাইরে সিসিটিভি বসাতে যায় ওই ছাত্রীদের পরিবার । কিন্তু এলাকার মাদক কারবারিরা তাতে বাধা দেয় ।
অভিযোগ, রবিবার মাদক কারবারিরা চড়াও হয় ও তাদের পরিবারের উপর হামলা করে । তাতেই জখম হন ওই দুই পরীক্ষার্থী । রাতেই তাদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সকালে খালপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ ওই দুই পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে নিয়ে যায়। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পর তাদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয় । এরপর পুলিশ আবার ওই দুই বোনকে হাসপাতালে ফেরত নিয়ে যায় । এরপর সংসদের সঙ্গে কথা বলে সেখানেই তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয় ।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সুপার ডাক্তার চন্দন ঘোষ বলেন, "সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আগে থেকেই ঘর তৈরি করে রাখা হয়েছিল । এই দুজন পরীক্ষার্থী গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হয় । সকালে তাদের ছেড়েও দেওয়া হয় । কিন্তু তারা তাদের শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানায় । হাসপাতাল থেকেই তারা পরীক্ষা দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন বলে জানালে তাদের সেখানেই ব্যাবস্থা করে দেওয়া হয় । তবে তদের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল ।"
পরিবারের অন্যতম সদস্য শবনম বেগম বলেন, "সিসিটিভি বসালে তাদের কর্মকাণ্ড সবটাই ধরা পড়ে যাবে । তাই বাড়ির সামনে আমাদের পরিবারের প্রতিটি ব্যক্তির উপর হামলা চালানো হয় । হাতের সামনে যা পেয়েছে সে সব দিয়েই তারা মারধর চালিয়েছে । বাড়ির ভেতর আফরিন ও সাইনা পড়াশোনা করছিল । তারাও রেহাই পাইনি । বাড়ির ভেতরে ঢুকে তাদেরও বেধড়ক মারে । এরপরই আমরা জেলা হাসপাতালে তাদের নিয়ে আসি । এখন এখান থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছে তারা ।"
ঘটনা নিয়ে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, "প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত অনুযায়ী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সমস্যা । সেটা নানা কারণেই হতে পারে । দুজন পরীক্ষার্থীকে সকালে হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হয় । তারা পরীক্ষার হলে গিয়ে শারীরিক অবনতির কথা জানালে ফের তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় । তবে ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে । আমরা গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখছি ।"
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক রাজীব প্রামাণিক বলেন, "দুই পরীক্ষার্থীর হাসপাতালে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে । দুজনে ঠিকই আছে ।"