ETV Bharat / state

নেতাজির জন্মদিনে চন্দননগর কলেজের 'স্পেশাল কভার' প্রকাশ করল ভারতীয় ডাক বিভাগ - CHANDERNAGORE COLLEGE

রাজ্যে প্রথম সরকারি কলেজ হিসেবে ডাক বিভাগের বিশেষ খামে চন্দননগর কলেজ ৷ স্বাধীনতার ইতিহাসে এই কলেজের গুরুত্ব বিশেষ এই খামে লেখা রয়েছে ফরাসি ভাষাতেও।

CHANDERNAGORE COLLEGE
চন্দননগর সরকারি কলেজের 'স্পেশাল কভার' (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 24, 2025, 9:02 AM IST

চন্দননগর, 24 জানুয়ারি: চন্দননগর সরকারি কলেজের 'স্পেশাল কভার' আত্নপ্রকাশ করল ভারতীয় ডাক বিভাগ। সাধারণ স্পেশাল কভার খামে বাংলা হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় তার ইতিহাস লেখা থাকে ৷ স্বাধীনতার ইতিহাসে চন্দননগর কলেজের গুরুত্ব বিশেষ এই খামে ফরাসি ভাষাতেও লেখা রয়েছে ৷

ভারতীয় ডাক বিভাগ সাধারণত 2 হাজার স্পেশাল কভার ছাপানো হয়। কিন্তু এই কলেজের ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য 5 হাজার স্পেশাল কভার খাম ছাপানো হয়েছে। শুধুমাত্র কলেজের ছবি ছাড়াও চন্দননগরের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি রয়েছে সেই খামে ৷ বৃহস্পতিবার চন্দননগর সরকারি কলেজের অডিটোরিয়ামে বিশেষ খামের উদ্বোধন করা হয়। ভারতীয় ডাক বিভাগ এই ঐতিহাসিক কলেজকে সম্মান জানিয়ে 23 জানুয়ারি একটি বিশেষ খাম বা 'স্পেশাল কভার প্রকাশ করে। উপস্থিত ছিলেন চন্দননগরের মেয়র শ্রীরাম চক্রবর্তী, ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল, দক্ষিণবঙ্গের ডাকবিভাগের মাননীয় অধিকর্তা ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় ও কলেজের প্রিন্সিপাল দেবাশিস সরকার।

নেতাজির জন্মদিনে চন্দননগর কলেজের ছবি ও ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এই বিশেষ খামে। কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র রায় ছাড়াও কানাইলাল দত্ত, মতিলাল রায়, রাসবিহারী বসু ও অরবিন্দ ঘোষের ছবি রয়েছে এই স্পেশাল কভারে ৷ হুগলি জেলার ঐতিহ্যবাহী চন্দননগর কলেজ (1862) ।

দক্ষিণবঙ্গের ডাক বিভাগের মাননীয় অধিকর্তা ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্পেশাল কভার ডাক বিভাগের তরফে প্রকাশ করা হয় ৷ এই স্পেশাল কভারের ভিতরে একটি করে কার্ড রয়েছে ৷ ফরাসি ভাষায় এই কলেজের ভবনের গুরুত্ব ও বিশেষত্ব লেখা থাকছে ৷ এই ধরনের স্পেশাল কভার আগে কোথাও কোনও দিন হয়নি। ভারতীয় ডাক বিভাগ এই ধরনের স্পেশাল কভার ন্যূনতম 500 ও সর্বাধিক 2 হাজার ছাপিয়ে থাকে। কিন্তু এই কলেজের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেলের অনুমতিতে 5 হাজার কভার ছাপানো হয়েছে ৷"

CHANDERNAGORE COLLEGE
চন্দননগর কলেজের জন্য 'স্পেশাল কভার' প্রকাশ করল ভারতীয় ডাক বিভাগ (নিজস্ব চিত্র)

ভারতবর্ষের শতাব্দীপ্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম। এই কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল 31 অগস্ট, 1862 জেসুইট পাদ্রি এম ম্যাগলয়ের বার্থের তৈরি Ecole de Sainte Marie নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৷ যা লোকমুখে St. Mary’s Institution নামে পরিচিত ছিল ৷ পরে চন্দননগরের ফরাসি কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করে। তখন নাম পরিবর্তন করে ডুপ্লে কলেজ নামে জনপ্রিয়তা পায়। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সংযোগের অভিযোগে, ব্রিটিশ সরকারের নিরন্তর চাপে তৎকালীন ফরাসি সরকার 1908-31 সাল পর্যন্ত প্রায় 23 বছরের জন্য কলেজ ডুপ্লে বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতবর্ষের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির ইতিহাসে এই ঘটনা বিরল ৷

CHANDERNAGORE COLLEGE
ঐতিহাসিক চন্দননগর কলেজ (নিজস্ব চিত্র)

1931 সালে কলেজ পুনরায় চালু হয় ৷ তখন এর নাম হয়েছিল College Dupleix ৷ স্বাধীনতার পর 1949 সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চন্দননগর কলেজে পরিণত হয় ৷ এই কলেজের শতাব্দীপ্রাচীন 'হেরিটেজ বিল্ডিংটি 2010 সালে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের দ্বারা ঐতিহাসিক মান্যতা লাভ করে। 2023 সালের 6 অক্টোবর এই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ে স্থাপিত 'চন্দননগর কলেজ মিউজিয়ামটিও স্বল্পদিনের মধ্যেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সাম্প্রতিক সর্বভারতীয় মূল্যায়নের নিরিখেও চন্দননগর কলেজ সুনাম (ন্যাক গ্রেড-এ+) অর্জন করেছে।

চন্দননগর কলেজের প্রিন্সিপাল দেবাশিস সরকার বলেন, "ভারতীয় ডাক বিভাগ চন্দননগরের মতো ঐতিহাসিক কলেজকে সম্মানিত দেওয়ার জন্য স্পেশাল খাম প্রকাশ করেছে ৷ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতা সংগ্রামী জন্মদিনে এই সম্মান আমাদের কাছে খুবই গর্বের।চন্দননগর কলেজের বয়স 162 বছর। অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র রায় ও তাঁর ছাত্ররা স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়ার কারণে ব্রিটিশ সরকার 23 বছর বন্ধ রেখে ছিল এই কলেজ ৷ রাজ্যে প্রথম সরকারি কলেজ, যাকে নিয়ে ভারতীয় ডাক বিভাগ স্পেশাল কভার খাম প্রকাশ করল।"

চন্দননগর, 24 জানুয়ারি: চন্দননগর সরকারি কলেজের 'স্পেশাল কভার' আত্নপ্রকাশ করল ভারতীয় ডাক বিভাগ। সাধারণ স্পেশাল কভার খামে বাংলা হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় তার ইতিহাস লেখা থাকে ৷ স্বাধীনতার ইতিহাসে চন্দননগর কলেজের গুরুত্ব বিশেষ এই খামে ফরাসি ভাষাতেও লেখা রয়েছে ৷

ভারতীয় ডাক বিভাগ সাধারণত 2 হাজার স্পেশাল কভার ছাপানো হয়। কিন্তু এই কলেজের ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য 5 হাজার স্পেশাল কভার খাম ছাপানো হয়েছে। শুধুমাত্র কলেজের ছবি ছাড়াও চন্দননগরের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি রয়েছে সেই খামে ৷ বৃহস্পতিবার চন্দননগর সরকারি কলেজের অডিটোরিয়ামে বিশেষ খামের উদ্বোধন করা হয়। ভারতীয় ডাক বিভাগ এই ঐতিহাসিক কলেজকে সম্মান জানিয়ে 23 জানুয়ারি একটি বিশেষ খাম বা 'স্পেশাল কভার প্রকাশ করে। উপস্থিত ছিলেন চন্দননগরের মেয়র শ্রীরাম চক্রবর্তী, ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল, দক্ষিণবঙ্গের ডাকবিভাগের মাননীয় অধিকর্তা ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় ও কলেজের প্রিন্সিপাল দেবাশিস সরকার।

নেতাজির জন্মদিনে চন্দননগর কলেজের ছবি ও ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এই বিশেষ খামে। কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র রায় ছাড়াও কানাইলাল দত্ত, মতিলাল রায়, রাসবিহারী বসু ও অরবিন্দ ঘোষের ছবি রয়েছে এই স্পেশাল কভারে ৷ হুগলি জেলার ঐতিহ্যবাহী চন্দননগর কলেজ (1862) ।

দক্ষিণবঙ্গের ডাক বিভাগের মাননীয় অধিকর্তা ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্পেশাল কভার ডাক বিভাগের তরফে প্রকাশ করা হয় ৷ এই স্পেশাল কভারের ভিতরে একটি করে কার্ড রয়েছে ৷ ফরাসি ভাষায় এই কলেজের ভবনের গুরুত্ব ও বিশেষত্ব লেখা থাকছে ৷ এই ধরনের স্পেশাল কভার আগে কোথাও কোনও দিন হয়নি। ভারতীয় ডাক বিভাগ এই ধরনের স্পেশাল কভার ন্যূনতম 500 ও সর্বাধিক 2 হাজার ছাপিয়ে থাকে। কিন্তু এই কলেজের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেলের অনুমতিতে 5 হাজার কভার ছাপানো হয়েছে ৷"

CHANDERNAGORE COLLEGE
চন্দননগর কলেজের জন্য 'স্পেশাল কভার' প্রকাশ করল ভারতীয় ডাক বিভাগ (নিজস্ব চিত্র)

ভারতবর্ষের শতাব্দীপ্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম। এই কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল 31 অগস্ট, 1862 জেসুইট পাদ্রি এম ম্যাগলয়ের বার্থের তৈরি Ecole de Sainte Marie নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৷ যা লোকমুখে St. Mary’s Institution নামে পরিচিত ছিল ৷ পরে চন্দননগরের ফরাসি কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করে। তখন নাম পরিবর্তন করে ডুপ্লে কলেজ নামে জনপ্রিয়তা পায়। বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে সংযোগের অভিযোগে, ব্রিটিশ সরকারের নিরন্তর চাপে তৎকালীন ফরাসি সরকার 1908-31 সাল পর্যন্ত প্রায় 23 বছরের জন্য কলেজ ডুপ্লে বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতবর্ষের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির ইতিহাসে এই ঘটনা বিরল ৷

CHANDERNAGORE COLLEGE
ঐতিহাসিক চন্দননগর কলেজ (নিজস্ব চিত্র)

1931 সালে কলেজ পুনরায় চালু হয় ৷ তখন এর নাম হয়েছিল College Dupleix ৷ স্বাধীনতার পর 1949 সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চন্দননগর কলেজে পরিণত হয় ৷ এই কলেজের শতাব্দীপ্রাচীন 'হেরিটেজ বিল্ডিংটি 2010 সালে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের দ্বারা ঐতিহাসিক মান্যতা লাভ করে। 2023 সালের 6 অক্টোবর এই হেরিটেজ বিল্ডিংয়ে স্থাপিত 'চন্দননগর কলেজ মিউজিয়ামটিও স্বল্পদিনের মধ্যেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সাম্প্রতিক সর্বভারতীয় মূল্যায়নের নিরিখেও চন্দননগর কলেজ সুনাম (ন্যাক গ্রেড-এ+) অর্জন করেছে।

চন্দননগর কলেজের প্রিন্সিপাল দেবাশিস সরকার বলেন, "ভারতীয় ডাক বিভাগ চন্দননগরের মতো ঐতিহাসিক কলেজকে সম্মানিত দেওয়ার জন্য স্পেশাল খাম প্রকাশ করেছে ৷ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীনতা সংগ্রামী জন্মদিনে এই সম্মান আমাদের কাছে খুবই গর্বের।চন্দননগর কলেজের বয়স 162 বছর। অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র রায় ও তাঁর ছাত্ররা স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়ার কারণে ব্রিটিশ সরকার 23 বছর বন্ধ রেখে ছিল এই কলেজ ৷ রাজ্যে প্রথম সরকারি কলেজ, যাকে নিয়ে ভারতীয় ডাক বিভাগ স্পেশাল কভার খাম প্রকাশ করল।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.