জলপাইগুড়ি, 12 সেপ্টেম্ব: আইএমএ পশ্চিমবঙ্গ শাখার পর IMA জলপাইগুড়ি শাখাও থেকে সুশান্ত রায়কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। পাশাপাশি তাঁর ছেলে যুগ্ম-সম্পাদক সৌত্রিক রায় ও সহ-সভাপতি অভিক দেকেও সাসপেন্ড করার জন্য আইএমএ কেন্দ্রীয় কমিটিকে চিঠি পাঠাচ্ছে জলপাইগুড়ি আইএমএ ৷ একই সঙ্গে সুশান্ত কুমার রায়ের নেতৃত্বাধীন আইএমএ কমিটিকে ভেঙে দিলেন ব্রাঞ্চ সভাপতি ৷
আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখার সভাপতি ডা: নিতাই মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের পরেই সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, আরজি কর-কাণ্ডে সুশান্ত কুমার রায় ও তাঁর ছেলে সৌত্রিক রায় ও অভিক দের নাম জড়ানোর পরেই আজ সভা ডেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখার প্রাক্তন সম্পাদক পান্থ দাশগুপ্ত সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, "আমরা আইএমএ কেন্দ্রীয় কমিটিকে জলপাইগুড়ি IMA-এর সদস্য পদ থেকে সুশান্ত কুমার রায়কে বহিষ্কার করার জন্য সুপারিশ করছি ৷ পাশাপাশি সুশান্ত রায়ের নেতৃত্বাধীন কমিটিও আজ ভেঙে দেওয়া হল।আগামী রবিবার আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখা আরজি করের নির্যাতিতার প্রতিবাদে মিছিল করবে ৷" এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির বিধায়ক তথা সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি ডা: পিকে বর্মা, রাহুল ভৌমিক, স্বস্তিশোভন চৌধুরী ও ডা: নিতাই মুখোপাধ্যায়।
জ্যেঠু সুশান্ত রায়ের নেতৃত্বাধীন আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখায় সহ-সভাপতি পদে ছিলেন ডা: অভিক দে। নিজের পাল্লা ভারি রাখতে, পছন্দের ডাক্তারদের আইএমএ কমিটিতে রেখেছিলেন ডা: সুশান্ত রায়। থ্রেট কালচারের অভিযোগে স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই ডা: অভিক দে-কে সাসপেন্ড করলেও জলপাইগুড়িতে বহাল তবিয়তে আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখার সহসভাপতি পদ অলকৃত করেছিলেন তিনি। জলপাইগুড়ির ডাক্তারদের বাদ দিয়ে বাইরের জেলায় ডাক্তারদের কমিটিতে কেন রেখেছিলেন সুশান্ত রায় ? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, ছেলে সৌত্রিক রায় ও শুভদ্বীপ সরকারকে সহ-যুগ্ম সম্পাদক পদে রেখেছিলেন সুশান্ত রায়।
ওয়েষ্টে বেঙ্গল মেডিকেল কাউন্সিল-এর সদস্য থেকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও ডা: অভিক দে-কে সাসপেন্ড করেছে ৷ উত্তরবঙ্গ লবির অন্যতম চিকিৎসক নেতা সুশান্ত কুমার রায়ের ঘনিষ্ঠ ডা: অভিক দে। কিন্তু তার পরেই আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখা থেকে ডা: অভিক দে-র বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নেয়নি জ্যেঠু সুশান্ত কুমার রায় ৷ আরজি কর-কাণ্ডে সারা দেশে যখন ডাক্তারদের সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আইএমএ জলপাইগুড়ি শাখা কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করেনি ৷ আরজি কর-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে সুশান্ত কুমার রায়েরও। সেই কারণেই কী ডা: সুশান্ত রায়ের নেতৃত্বাধীন জলপাইগুড়ির আইএমএ শাখা কোন সভা বা কর্মসূচিতে অংশ নেয়নি ? এ নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল ৷
অভিযোগ, ডা: সুশান্ত কুমার রায়ের পরামর্শেই বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভিক দের ঘনিষ্ট থ্রেট কালচার ও সিন্ডিকাটে রাজ চালাতেন। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতর বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভিক দে-কে সাসপেন্ড করেছে ৷ গত পরশু সুশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে আইএমএ বেঙ্গল ব্রাঞ্চ আর্থিক তছরূপ-সহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে সুশান্ত রায়কে সাসপেন্ড করে ৷ শুধু তাই নয়, সুশান্ত কুমার রায় নিজের স্বর্থচরিতার্থ করার জন্য IMA-কে ব্যবহার করেছে বলে বেঙ্গল ব্রাঞ্চের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে ৷