ETV Bharat / state

পুরীতে বলরাম বিগ্রহ পড়ে যাওয়া অমঙ্গলের ! কী করণীয় ? জানালেন পুরাণ বিশেষজ্ঞ - Idol of Lord Balabhadra - IDOL OF LORD BALABHADRA

Lord Balarama Rath in Puri: রথের দিনই তালধ্বজ রথ থেকে পড়ে যায় বলরামের মূর্তি ৷ আর তারপরই আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে উঠেছে বিভিন্ন মহলে ৷ উলটো রথের দিন তা নিয়েই মুখ খুললেন পুরাণ বিশেষজ্ঞ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী ৷ একই সঙ্গে কী করণীয় তাও জানালেন ৷

Lord Balaram Rath
পুরীর বলরাম বিগ্রহ (ফাইল চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 15, 2024, 1:06 PM IST

Updated : Jul 15, 2024, 1:29 PM IST

কলকাতা, 15 জুলাই: চলতি বছর রথের দিনই পুরীতে ঘটে গিয়েছিল বিপর্যয় ৷ গত মঙ্গলবার গুন্ডিচা মন্দিরে নামানোর সময় আচমকাই তালধ্বজ রথ থেকে পড়ে যায় বলরামের মূর্তি ৷ আর তা নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন মহলে ৷ তবে কি ফের কোনও দৈব দুর্বিপাক আসতে চলেছে ? ঘটতে চলেছে বড় বিপর্যয় ? এমন কোনও সম্ভবনা দেখছেন না পুরাণ বিশেষজ্ঞরা ৷ বিপর্যয়ের যাবতীয় আশঙ্কাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে পুরাণবিদদের দাবি, এটা নিছকই সাধারণ বিষয় ৷ খোদ শাস্ত্রেও এর বিধান রয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷

পুরীতে বলরাম বিগ্রহ পড়ে যাওয়া অমঙ্গলের ! (ইটিভি ভারত)

গত মঙ্গলবার রথ গুন্ডিচা মন্দিরের সামনে যাওয়ার পর একে একে তিন রথ থেকে নামানো হয় বিগ্রহদের ৷ আর তখনই আচমকা রথ থেকে নামতে গিয়ে হুড়মুড়িয়ে পড়ে যায় বলরামের মূর্তি ৷ ভগবান বলরামের মূর্তি নিয়ে পিছলে যান সেবায়েতরাও ৷ মূর্তির নীচে চাপাও পড়েন বেশ কয়েকজন সেবায়েত ৷ এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রে-রে পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে ৷ অনেকেই মনে করতে থাকেন, বিগ্রহের পড়ে যাওয়ায় এবার বড় কোনও দুর্যোগ বা বিপদ আসতে চলেছে ৷ যদিও এই বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী ৷

পণ্ডিত জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের শ্লোককে সামনে রেখেই নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী জানাচ্ছেন, এ এক স্বাভাবিক নিয়ম ৷ অনেক সময়ই বিগ্রহ হাত থেকে পড়ে যায় ৷ তাতে অঘটনের কোনও কারণ থাকতে পারে না বলেই মনে করছেন তিনি ৷ এমনকী এর আগেও বলভদ্রের মূর্তি পুরীতে রথ থেকে পড়ে গিয়েছিল ৷ সেই সময় রাজা ছিলেন চলদবিষ্ণু ৷ আর তখনই পুরাণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে যাবতীয় শঙ্কার নিরসন ঘটিয়েছিলেন এই জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন ৷

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলেন, "সেই সময় বলরামের বিগ্রহ মাটিতে পড়ে যেতেই মহারাজ চলদবিষ্ণু বলে উঠেছিলেন, এ কী অমঙ্গল! যার সংস্কৃত প্রতিশব্দটি ছিল ‘ঔৎপাতিক’ ৷ কথাটা ‘উৎপাত’ থেকেই এসেছে। তর্কপঞ্চানন সেই অমঙ্গল-উৎপাতের কথাটা ধরেই বলতে আরম্ভ করেন এরপর। তিনি বলেন- আপনি অকারণে বিব্রত হচ্ছেন, মহারাজ। কোনও ভয়ংকর অমঙ্গল ‘ঔৎপাতিক’ কিছু ঘটে যায়নি। তবে হ্যাঁ, আপনি অমঙ্গল অকল্যাণের কথা বলতে পারতেন, যদি মহাপ্রভু জগন্নাথ অথবা সুভদ্রা পড়ে যেতেন রথ থেকে ৷"

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী পুরাণের শ্লোক উদ্ধৃতি করে বলেন, "নারায়ণো যদি পতেদ্‌ অথবা সুভদ্রা। কিন্তু তা তো হয়নি, পড়ে গেছেন বলরাম, তাঁর পড়ে যাওয়াটা একান্তই স্বাভাবিক। মহারাজ চলদ্‌বিষ্ণু অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন পণ্ডিত জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের চোখের দিকে। পণ্ডিত বললেন, দেখুন ভগবান বলভদ্র সর্বক্ষণ মদবিহ্বল থাকেন ৷ ঘোরে তাঁর চক্ষু দুটি সদাই আরক্ত হয়ে থাকে, মাথাটাও তাঁর ঘোরে সব সময়। তার মধ্যে কাঁধে অত বড় একখানা লাঙল তাঁর অস্ত্র। তা এমন টল-টলায়মান অবস্থায় তিনি যদি মাটিতে পড়ে গিয়ে থাকেন, তার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই ৷ যুক্তং হি লাঙ্গলভৃতঃ পতনং পৃথিব্যাম্‌ ৷" একই সঙ্গে, তিনি এও বলেন, "অধিকাংশ সময়ই আমাদের হাত থেকে শালগ্রাম শিলা পড়ে যায় ৷ অনেক সময় মূর্তি ভেঙে যায় ৷ তাতে অমঙ্গল কিছুই হয় না ৷ শাস্ত্রে সেই সব কিছুর বিধান দেওয়া আছে কী করণীয় ৷ প্রণাম করে সেই দেবতার বিগ্রহকে ফের অভিষেক করে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হয় ৷ শাস্ত্রে এমনই বলা আছে ৷ সুতরাং এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয় ৷"

কলকাতা, 15 জুলাই: চলতি বছর রথের দিনই পুরীতে ঘটে গিয়েছিল বিপর্যয় ৷ গত মঙ্গলবার গুন্ডিচা মন্দিরে নামানোর সময় আচমকাই তালধ্বজ রথ থেকে পড়ে যায় বলরামের মূর্তি ৷ আর তা নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন মহলে ৷ তবে কি ফের কোনও দৈব দুর্বিপাক আসতে চলেছে ? ঘটতে চলেছে বড় বিপর্যয় ? এমন কোনও সম্ভবনা দেখছেন না পুরাণ বিশেষজ্ঞরা ৷ বিপর্যয়ের যাবতীয় আশঙ্কাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে পুরাণবিদদের দাবি, এটা নিছকই সাধারণ বিষয় ৷ খোদ শাস্ত্রেও এর বিধান রয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ৷

পুরীতে বলরাম বিগ্রহ পড়ে যাওয়া অমঙ্গলের ! (ইটিভি ভারত)

গত মঙ্গলবার রথ গুন্ডিচা মন্দিরের সামনে যাওয়ার পর একে একে তিন রথ থেকে নামানো হয় বিগ্রহদের ৷ আর তখনই আচমকা রথ থেকে নামতে গিয়ে হুড়মুড়িয়ে পড়ে যায় বলরামের মূর্তি ৷ ভগবান বলরামের মূর্তি নিয়ে পিছলে যান সেবায়েতরাও ৷ মূর্তির নীচে চাপাও পড়েন বেশ কয়েকজন সেবায়েত ৷ এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রে-রে পড়ে যায় বিভিন্ন মহলে ৷ অনেকেই মনে করতে থাকেন, বিগ্রহের পড়ে যাওয়ায় এবার বড় কোনও দুর্যোগ বা বিপদ আসতে চলেছে ৷ যদিও এই বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী ৷

পণ্ডিত জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের শ্লোককে সামনে রেখেই নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী জানাচ্ছেন, এ এক স্বাভাবিক নিয়ম ৷ অনেক সময়ই বিগ্রহ হাত থেকে পড়ে যায় ৷ তাতে অঘটনের কোনও কারণ থাকতে পারে না বলেই মনে করছেন তিনি ৷ এমনকী এর আগেও বলভদ্রের মূর্তি পুরীতে রথ থেকে পড়ে গিয়েছিল ৷ সেই সময় রাজা ছিলেন চলদবিষ্ণু ৷ আর তখনই পুরাণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে যাবতীয় শঙ্কার নিরসন ঘটিয়েছিলেন এই জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন ৷

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী বলেন, "সেই সময় বলরামের বিগ্রহ মাটিতে পড়ে যেতেই মহারাজ চলদবিষ্ণু বলে উঠেছিলেন, এ কী অমঙ্গল! যার সংস্কৃত প্রতিশব্দটি ছিল ‘ঔৎপাতিক’ ৷ কথাটা ‘উৎপাত’ থেকেই এসেছে। তর্কপঞ্চানন সেই অমঙ্গল-উৎপাতের কথাটা ধরেই বলতে আরম্ভ করেন এরপর। তিনি বলেন- আপনি অকারণে বিব্রত হচ্ছেন, মহারাজ। কোনও ভয়ংকর অমঙ্গল ‘ঔৎপাতিক’ কিছু ঘটে যায়নি। তবে হ্যাঁ, আপনি অমঙ্গল অকল্যাণের কথা বলতে পারতেন, যদি মহাপ্রভু জগন্নাথ অথবা সুভদ্রা পড়ে যেতেন রথ থেকে ৷"

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী পুরাণের শ্লোক উদ্ধৃতি করে বলেন, "নারায়ণো যদি পতেদ্‌ অথবা সুভদ্রা। কিন্তু তা তো হয়নি, পড়ে গেছেন বলরাম, তাঁর পড়ে যাওয়াটা একান্তই স্বাভাবিক। মহারাজ চলদ্‌বিষ্ণু অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন পণ্ডিত জগন্নাথ তর্কপঞ্চাননের চোখের দিকে। পণ্ডিত বললেন, দেখুন ভগবান বলভদ্র সর্বক্ষণ মদবিহ্বল থাকেন ৷ ঘোরে তাঁর চক্ষু দুটি সদাই আরক্ত হয়ে থাকে, মাথাটাও তাঁর ঘোরে সব সময়। তার মধ্যে কাঁধে অত বড় একখানা লাঙল তাঁর অস্ত্র। তা এমন টল-টলায়মান অবস্থায় তিনি যদি মাটিতে পড়ে গিয়ে থাকেন, তার মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই ৷ যুক্তং হি লাঙ্গলভৃতঃ পতনং পৃথিব্যাম্‌ ৷" একই সঙ্গে, তিনি এও বলেন, "অধিকাংশ সময়ই আমাদের হাত থেকে শালগ্রাম শিলা পড়ে যায় ৷ অনেক সময় মূর্তি ভেঙে যায় ৷ তাতে অমঙ্গল কিছুই হয় না ৷ শাস্ত্রে সেই সব কিছুর বিধান দেওয়া আছে কী করণীয় ৷ প্রণাম করে সেই দেবতার বিগ্রহকে ফের অভিষেক করে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হয় ৷ শাস্ত্রে এমনই বলা আছে ৷ সুতরাং এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয় ৷"

Last Updated : Jul 15, 2024, 1:29 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.