জগদ্দল/কলকাতা, 20 জানুয়ারি: আবারও রাজ্যে জিবি সিন্ড্রোমে মৃত্যু ৷ এবার এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এক কিশোরের মৃত্যু হল । জানা গিয়েছে, তাঁর নাম দেব কুমার সাউ ৷ সে উত্তর 24 পরগনার জগদ্দলের বাসিন্দা ৷ বুধবার বিসি রায় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় ৷ এই রোগের সংক্রমণ ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়ায় সতর্ক রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ৷ স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের নেতৃত্বে এদিন এই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় ।
কোভিড ও এইচএমপিভি-র পর রাজ্যে এখন নয়া আতঙ্কের নাম গিলেন বারে সিনড্রোম ৷ গতকাল বারাসতে মৃত দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ এই জিবিএস বলে দাবি করেছিলেন চিকিৎসকরা ৷ আজ ফের জিবিএসে আক্রান্ত হয়েই এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে ৷
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, জগদ্দলের বাসিন্দা দেব কুমার সাউ নামে ওই কিশোর কলকাতার বিসি রায় শিশু হাসপাতালে এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি ছিল ৷ গত 26 জানুয়ারি তার মৃত্যু হয় ৷ জানা গিয়েছে, জিবি সিন্ড্রোমের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ।
বিসি রায় হাসপাতালে আরও দুই শিশু একই উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন । তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা সঙ্কটজনক ৷ তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে । তাছাড়াও ইনস্টিটিউশন অফ চাইল্ড হেলথেও জিবি সিনড্রোমের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছে দুই শিশু । তাদেরকেও রাখা হয়েছে ভেন্টিলেশনে ।
এদিকে, একের পর এক এমন ঘটনা সামনে আসায় গিলেন বারে সিন্ড্রোম নিয়ে সতর্ক রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর । স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের নেতৃত্বে বুধবার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা । ছিলেন বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সের একজন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ, বিসি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান এবং সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক-চিকিৎসক যোগীরাজ রায় ।
রাজ্যের প্রত্যেকটি হাসপাতালকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, গিলেন বারে সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে কেউ ভর্তি হলে, সেই তথ্য তৎক্ষণাৎ স্বাস্থ্য ভবনকে পাঠাতে হবে । প্রতিনিয়ত তাদের শারীরিক অবস্থা কেমন থাকছে তার আপডেট দিতে হবে স্বাস্থ্য ভবনকে । জেলার ক্ষেত্রে নজর রাখতে বলা হয়েছে প্রত্যেকটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদেরও । যদি দেখা যায়, আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বাড়ছে, তাহলে গাইডলাইন জারি করার কথা ভাববে স্বাস্থ্য ভবন । আপাতত গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে ।
এই রোগের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, যেমন প্লাজমা থেরাপি ভেন্টিলেশন সাপোর্ট সিস্টেম ও ইন্ট্রা ভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইনজেকশন - সমস্ত পরিকাঠামো পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রাখতে বলা হয়েছে হাসপাতালগুলিকে ।
