মালদা, 25 মে: আবারও সামনে আসল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসির মানবিক মুখ ৷ দু'দিন ধরে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুমুরকলা গ্রামের একটি ক্ষেতে পড়েছিলেন এক অজ্ঞাতপরিচয় বৃদ্ধ ৷ পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা সেকথা জানলেও কোনও পদক্ষেপ করেননি ৷ তবে স্থানীয় এক চাষি ওই বৃদ্ধের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ সেই খবর পেয়ে গতকাল রাতেই সেখানে ছোটেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার ৷
ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভরতি করার যাবতীয় ব্যবস্থা করেছেন তিনি ৷ পুলিশের এই মানবিক দিকের প্রশংসা করছেন স্থানীয় মানুষজন ৷ ডুমুরকলা গ্রামের চাষি অনিলকুমার দাস প্রতিদিনের মতো বুধবার দুপুরে গরু বাঁধতে গিয়েছিলেন ৷ সেই সময় তিনি দেখেন, পুকুরপাড়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক অজ্ঞাতপরিচয় বৃদ্ধ ৷ তিনি তাঁকে তুলে গাছতলায় নিয়ে যান ৷ একদিন পর তাঁকে নিজের বাড়িতে আনেন ৷ স্নান করান ৷ খাবারও খাওয়ান ৷ কিন্তু বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই থাকে ৷
তিনি বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত প্রধানের নজরে আনেন ৷ কিন্তু কেউ তাঁর কথায় কর্ণপাত করেনি ৷ শেষ পর্যন্ত তিনি ফোনে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় খবর দেন ৷ অনিলবাবু বলেন, "গরু বাঁধতে গিয়ে ভাই আর বউদির কাছে খবর পাই, একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি পড়ে রয়েছেন ৷ ওনাকে দেখে আমার মন কেমন করে ওঠে ৷ সেই সময় পাটের জমি থেকে হাজাতুল বেরিয়ে আসেন ৷ উনি আর আমি তাঁকে গাছের নীচে নিয়ে আসি ৷
আরও পড়ুন:
অনিলবাবুর আরও সংযোজন, "দু'দিন ধরে উনি সেখানেই ছিলেন ৷ তারপর ওনাকে বাড়িতে নিয়ে আসি ৷ পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধানকে সব জানাই ৷ কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি ৷ শেষ পর্যন্ত থানায় খবর দিই ৷ খবর পেয়েই আইসি এখানে এসেছেন ৷" আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, "এই বৃদ্ধ লোকটি মাঠে পড়েছিলেন ৷ এখনও তাঁর পরিচয় কেউ জানেন না ৷ হয়তো প্রচণ্ড গরমে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৷ এমন একজন অজ্ঞাত পরিচয় লোককে এই গ্রামের একজন যেভাবে তাঁর নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সুশ্রূষা করেছেন, তা আমরা নিজেরাও করতে পারব কি না, জানি না ৷ মানবিকতার এমন জায়গা থেকে আমি এই গ্রামের মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ৷ তাঁদের কাছে খবর পেয়েই আমরা এখানে এসে বৃদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি ৷"
আরও পড়ুন: