মালদা, 15 ফেব্রুয়ারি: 16 দিনের মাথায় আবার ! মালদা শহরের পর এবার মোথাবাড়ি ৷ বাড়ি থেকে মাত্র 200 মিটার দূরে ভুট্টাখেত থেকে মিলল এক যুবতীর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ ৷ কুপিয়ে খুন করার আগে যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অনুমান করছেন পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে গ্রামবাসীরাও ৷ বৃহস্পতিবার দেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মোথাবাড়ি থানার পুলিশ ৷ এই ঘটনায় আরও একবার মালদায় নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ ধর্ষণ করে খুন কি না, তা জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় পুলিশ ৷
গত 31 জানুয়ারি মালদা শহরের এক প্রান্ত থেকে উদ্ধার হয় 11 বছরের এক কিশোরীর ধর ও মুণ্ডু ৷ এই নৃশংস খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কিশোরীরই জ্যেঠতুতো দাদাকে ৷ এখনও সেই খুনের মোটিভ বের করতে পারেনি পুলিশ ৷ তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার মোথাবাড়ি থানার একটি গ্রামে ভুট্টাখেত থেকে উদ্ধার হল বছর পঁচিশের এক যুবতীর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ ৷ শরীরের নীচের অংশ ছিল সম্পূর্ণ অনাবৃত ৷ সারা শরীর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো ৷ এমনকি গোপনাঙ্গেও আঘাত রয়েছে ৷ ঘটনাস্থল থেকে মাত্র 200 মিটার দূরে তাঁর বাড়ি ৷ তিনি বিবাহিত ৷ তবে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না ৷ তাঁর কোনও সন্তান নেই ৷ এ দিন স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জমিতে ওই যুবতীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন ৷
নিহত যুবতীর বাবা পেশায় কৃষিশ্রমিক ৷ নিতান্ত গরিব পরিবার ৷ চার বোন আর দুই ভাইয়ের সবার বিয়ে হয়ে গিয়েছে ৷ তাঁর মা বলেন, “গতকাল গ্রামে ধুমধাম করে সরস্বতী পুজো হয়েছে ৷ বিকেলে পুজো মণ্ডপে সবাই গানের সঙ্গে নাচছিল ৷ আমার মেয়েটাও সেখানে খুব আনন্দ করছিল ৷ সন্ধের সময় ও আমার এক নাতনিকে বলে যায়, বাথরুম যাচ্ছে ৷ তারপর থেকেই ওর কোনও খোঁজ পাচ্ছিলাম না ৷ রাতে আমার ছেলে খিচুড়ি রান্নার জন্য দিদির খোঁজ করে ৷ কিন্তু তখনও মেয়ে বাড়ি ফেরেনি ৷ তখন থেকেই আমরা ওকে খুঁজতে শুরু করি ৷ সারা রাত খোঁজাখুঁজি করেও ওর হদিশ মেলেনি ৷ আজ সকালে ওর দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ আমরা ক’বছর আগে ওর বিয়ে দিয়েছিলাম ৷ কিন্তু জামাইয়ের মাথার গোলমাল ৷ তাই স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ও বাপের বাড়ি চলে আসে ৷ ওর সঙ্গে কারও প্রেমের সম্পর্কও নেই ৷ কে বা কারা, কেন ওকে এভাবে মারল জানি না ৷”
যুবতীর ভাই বলেন, “সরস্বতী পুজোর রাতে খিচুড়ি আর তরকারি খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল ৷ সন্ধ্যায় বাজার করে এনেছিলাম৷ দিদির খোঁজ করতেই শুনি ওকে পাওয়া যাচ্ছে না ৷ সঙ্গে সঙ্গে আমরা খোঁজাখুঁজি শুরু করি ৷ আজ সকালেই খোঁজ চালাচ্ছিলাম ৷ তখনই জানতে পারি, ভুট্টাখেতে দিদির দেহ পড়ে রয়েছে ৷ মৃতদেহ প্রায় বিবস্ত্র ছিল ৷ আমাদের ধারণা, ধর্ষণ কিংবা গণধর্ষণ করে দিদিকে খুন করা হয়েছে ৷ পুলিশ দেহ নিয়ে গিয়েছে ৷ আমরা এনিয়ে মোথাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি ৷”
মোথাবাড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা ঘটনাস্থলে যায় ৷ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে ৷ তার রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে ৷ আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ এই নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে ৷
আরও পড়ুন: