হাবড়া, 3 অগস্ট: এবার আরাবুল-কাণ্ডের ছায়া উত্তর 24 পরগনার হাবড়ায় ৷ সরকারি বৈঠকে বিডিও-কে জলের বোতল ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ৷ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রতন দাস হাবড়া 2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে রয়েছেন ৷ স্বভাবত এই ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে প্রশাসনিক মহলে ৷ অভিযুক্ত নেতা অবশ্য বিডিও-র বিরুদ্ধেই তাঁকে অপমান করার পালটা অভিযোগ এনেছেন ৷ গোটা ঘটনাটি জেলাশাসক খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ৷
সূত্রের খবর, গত বুধবার টেন্ডার কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল হাবড়া-2 নম্বর বিডিও অফিসে ৷ সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন বিডিও সীতাংশু শেখর শীট, স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা দাপুটে তৃণমূল নেতা রতন দাস-সহ টেন্ডার কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ৷
অভিযোগ, বিডিও সীতাংশু শেখর শীটের সঙ্গে কথা কাটাকাটির সময় তাঁকে লক্ষ্য করে বোতল ছুড়ে মারেন তৃণমূল নেতা রতন ৷ বোতলটি বিডিওর গায়ে লাগেনি ৷ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের গায়ে লেগেছে বলে জানা গিয়েছে ৷ শুধু বোতল ছুড়ে মারাই নয় ! বাকবিতণ্ডার সময় বিডিওকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করারও অভিযোগ উঠেছে ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ৷
শনিবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনীতির অন্দরে ৷ ইতিমধ্যে বিডিও-র পাশে দাঁড়িয়ে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব ৷ সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্ত করে জেলা প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ করার দাবিও জানিয়েছে পদ্ম শিবির ৷
এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র এই ঘটনাকে নিন্দাজনক বলেছেন ৷ তিনি বলেন, "এই ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের শিক্ষিকার দিকে জগ ছুড়ে মারার ঘটনা ৷ আমরা চাই জেলা প্রশাসন তদন্ত করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিক ৷ নইলে আগামী দিনে আরও কতকিছু দেখতে হবে আমাদের ৷"
এদিকে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই তৃণমূল নেতা রতন দাসের অবশ্য দাবি, বিডিও তাঁকে অপমান করে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছিলেন ৷ তখনই রেগে গিয়ে জলের বোতল তুলেছিলেন ৷ তবে তা বিডিও-কে মারার উদ্দেশ্যে নয় ৷ বোতল ছুড়ে মারেননি তিনি ৷
এই ঘটনায় বিডিও অবশ্য মুখ খুলতে চাননি ৷ তবে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বলেই খবর সূত্রের ৷ অন্যদিকে, এ বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি অবশ্য ফোন ধরেননি ৷ ফলে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷
তবে বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, "ওঁদের দু’জনের মধ্যে একটা সমস্যা হয়েছে ৷ গোটা বিষয়টি জেলাশাসক দেখছেন ৷ ওখানে একটা সরকারি সভা ছিল ৷ সেই সরকারি সভার বিষয় নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই ৷ তবে জেলাশাসক আমাকে জানিয়েছেন, বিডিওর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আছে ৷ তিনি তদন্ত করছেন ৷"