কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে সুসম্পর্কের ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল ৷ সম্প্রতি বিধানসভায় এসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের 6 বিধায়কের শপথবাক্য পাঠ করানোর মধ্যে দূরত্ব কমে ছিল ৷ বিশ্ববিদ্যালগুলিতে উপাচার্য নিয়োগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে রাজ্য-রাজভবনের সু-সম্পর্ক বজায় রাখার পথে আরও একধাপ এগোলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷
ফের মুখ্যমন্ত্রী দেওয়া উপাচার্যের নামেই সিলমোহর দিল রাজভবন। রাজ্যের 4টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করল উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ মহাত্মা গান্ধি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন সৌরাংশু মুখোপাধ্যায়। হিন্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন নন্দিনী সাউ। কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন তপতী চক্রবর্তী। আর মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন জানে আলম। এর আগেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর ৷
দীর্ঘদিন ধরেই এই উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত দেখা গিয়েছে। উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ না-করেই উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোস। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই শিক্ষামন্ত্রী বারবার সরব হয়েছিলেন আচার্যের ভূমিকাকে নিয়ে। যার জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। সুপ্রিম কোটের নির্দেশে একটি কমিটি তৈরি করা হয়। সেই কমিটি তিনটে করে নাম বাছাই করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠায়। তারপর সেই নামে থেকে একটি তালিকা তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের কাছে পাঠান ৷
পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুরু হয় উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া। উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। উপাচার্যের জন্য 26 জুলাই থেকে 23 অগস্ট পর্যন্ত আবেদন করার সময় দেওয়া হয়েছিল। তারপর দু'সপ্তাহ ধরে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চলে। সেই মতোই এবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। নবান্নের তরফে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন জনের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে। সেখান থেকেই একটি করে নাম বেছে নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের 6 তারিখ রাজ্যে 6টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ সেক্ষেত্রেও মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নামেই সিলমোহর দিয়েছিল রাজভবন। সেই অনুযায়ী প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হন নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তী। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য হন শংকর কুমার নাথ। কল্লোল পাল হন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন রূপকুমার বর্মণ ৷ এছাড়া রানি রাসমণি গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিধু কানু বিরসা বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য হন যথাক্রমে অমিয় কুমার পান্ডা এবং পবিত্র কুমার চক্রবর্তী। ফলে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজ্যের মোট 10টি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করল উচ্চশিক্ষা দফতর ৷