শিলিগুড়ি, 18 জুন: "যন্ত্র বা মানুষের ভুলে দুর্ঘটনা হয়ে থাকে ।" কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করে এমনই বললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ সোমবার সকাল 8টা 50 মিনিট নাগাদ শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুর এলাকায় আগরতলা-শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয় ৷ ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে 10 জনের ৷ আহত হয়েছেন প্রায় 50 জন ৷
সোমবার বিকেলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শিলিগুড়ি পৌঁছন রাজ্যপাল বোস ৷ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "এখন একত্রিত হয়ে এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা আহত হয়েছে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেলমন্ত্রী নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। রেল সমস্ত বিষয়টি দেখছে । সবাই মিলে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে ।"
এরপরই তিনি বলেন, "দুর্ঘটনা কোনও সময় দুর্ঘটনা হতে পারে না। যন্ত্র বা মানুষের ভুলে দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও সেটা পরে প্রকাশ্যে আসবে। অনিল কাকোলকারের একটি গবেষণা রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে কীভাবে রেল পরিষেবা ও ব্যবস্থাকে উন্নত করা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের নেতৃত্বে সেদিকেই রেল এগোচ্ছে।"
এদিন দুর্ঘটনায় আহত যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে যান কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি ৷ সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানান, আহতদের অনেকেই এখন ভালো আছেন ৷ যদিও 3 জন এই মুহূর্তে আইসিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন । এছাড়াও একটি শিশুও ভর্তি রয়েছে ।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে সুকান্ত বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী অ্যান্টি কলিশন প্রযুক্তি সম্বন্ধে কতটা জানেন সেটা ঠিক আমার জানা নেই ৷ তিনি রেলমন্ত্রী ছিলেন নিশ্চয়ই এইসব বিষয় জানেন ৷ তবে আমি ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি, অ্যান্টি কলিশন সিস্টেম বা কবজ গলায় মাদুলির মত পড়ার জিনিস নয় । এটি জটিল ইঞ্জিনিয়ারিং ৷ এটির ব্যবহারে সময় ও অর্থ লাগে । মুখ্যমন্ত্রী যে বলছেন ওনার আমলে ভারতবর্ষে প্রথম আন্টি কলিশন ব্যবস্থা উপলব্ধ হয়েছিল, তাহলে আমি এবার ওনাকে পাল্টা প্রশ্ন করি, উনার সময় কতগুলি জায়গায় এই প্রযুক্তি লাগানো হয়েছিল ? তার দলেরই একজন ব্যক্তি রেলমন্ত্রী হওয়ার পরে বলেছিলেন, তিনি রাজ্যের রেল ব্যবস্থাকে আইসিইউ থেকে বের করে নিয়ে আসবেন।"
সুকান্ত আরও জানান, তিনি চান না এই সময় এই ধরনের রাজনীতি হোক । সুরক্ষার উপরে সব থেকে বেশি জোর দেওয়া হয় । তবুও মাঝে মধ্যে কিছু ভুল ত্রুটি হয় ৷ এদিকে, উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগ দাবি করছেন ৷ এই বিষয়ে সুকান্ত বলেন, "একজন গুন্ডা-মস্তান রেলমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলছেন ওনার তো দেহত্যাগ করা উচিত ।"