ETV Bharat / state

আজও মাটির বস্ত্র-অলংকারে সাজেন বিপ্লবীদের মা ! - Durga Puja 2024

ব্রিটিশ রক্তচক্ষুর জেরে তৎকালীন সময়ে সন্ধেবেলা বেরনো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মেদিনীপুরবাসীর ৷ এই পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন বিপ্লবীরা ৷ পুজোর ইতিহাস জানুন ইটিভি ভারতে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 2 hours ago

Ancient Durga Puja in Medinipur
মেদিনীপুরে বিপ্লবীদের প্রচলিত দুর্গাপুজো (ইটিভি ভারত)

মেদিনীপুর, 4 অক্টোবর: অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন কর্নেল গোলা আদি সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি । যা বিপ্লবীদের পুজো নামে পরিচিত ৷ এ বছর এই পুজো 91তম বর্ষে পদার্পণ করল ।

1931-32 ও 33 সালে পরপর তিনজন অত্যাচারী ব্রিটিশ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যথাক্রমে পেডি, ডগলাস এবং বার্জ মেদিনীপুর সুভাষচন্দ্র বসুর অনুগামী বেঙ্গল ভলান্টিয়ার বিপ্লবীদের হাতে খতম হয়েছিলেন ৷ তারপর থেকে কোনও কর্মরত আইসিএস (ICS) বিপ্লবীদের ভয়ে মেদিনীপুরের দায়িত্ব নিতে চাননি ।

স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দুর্গাপুজো (ইটিভি ভারত)

সেই সময় ব্রিটিশ সরকার এরকম বাধ্য হয়ে প্রশাসনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পিজে গ্রিফিথ নামে এক অবসরপ্রাপ্ত আইসিএস-কে মেদিনীপুর জেলায় পাঠিয়েছিল । যা ছিল এক বিরলতম ঘটনা । তার আমলে মেদিনীপুর শহরবাসীকে চরম অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল । সন্ধ্যার পর মেদিনীপুরের শহরের জনসাধারণ যাতে বাড়ি থেকে বের হতে না পারে তার জন্য চালু হয়েছিল সান্ধ্য আইন ।

মেদিনীপুর শহরের ক্লাব, স্কাউট লাঠিখেলা, কুস্তি আখড়া সমস্ত কিছুর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় । এক কথায় শহরকে জেলখানায় রূপান্তরিত করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসন । এরই পাশাপাশি ব্রিটিশ সরকার মেদিনীপুর শহরে বিপ্লবীদের দমন করতে 1800 অতিরিক্ত পাঠান সেনা নিয়োগ করে ৷ তাদের দায়ভার বাবদ 68 হাজার টাকা অতিরিক্ত কর মেদিনীপুরবাসীর উপর চাপিয়ে দিয়েছিল । এহেন জটিল পরিস্থিতিতে ব্যারিস্টার বীরেন্দ্রনাথ শাসমল এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অনুগামী দেবেন্দ্র লাল খান, ব্যারিস্টার ক্ষীরোদ বিহারী দত্ত, কিশোর পতি রায়, অক্ষয় দাশগুপ্ত প্রমুখ দিকপাল স্বদেশী নেতাও স্বাধীনতা সংগ্রামী পৃষ্ঠপোষকতায় 1934 সালে শুরু হয়েছিল কর্নেল গোলার এই দুর্গাপুজো ৷ ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরের সহায়তায় এবং বিমল দাশগুপ্তের মতো শহরে কিছু উৎসাহী বিপ্লবী যুবকের প্রচেষ্টাও ছিল এই পুজোর পিছনে ৷

Freedom Fighters Durga Puja in Medinipur
মূর্তি তৈরির মুহূর্ত (ইটিভি ভারত)

পুজো উদ্যোক্তাদের তৎকালীন সময় মূল উদ্দেশ্য ছিল বিপ্লবীদের ঐক্যবদ্ধ করা । তবে সে সময় গান্ধিজীর বিদেশি দ্রব্য বর্জন নীতির কঠোর বাস্তবায়নের ফলস্বরূপ কোনও কৃত্রিম অলংকার ও বস্ত্র মায়ের গায়ে চাপানো হয়নি ৷ সেই ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে এই পুজোয় । আদিপুজোয় এবারে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে 1974 সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতবর্ষের সুপ্রিম কোর্টের 250 বছর পূর্তি স্মরণ । সেই সঙ্গে জঙ্গলমহলের অ-বিসংবাদিত নেত্রী কর্ণগড়ের রানি শিরোমণির গ্রেফতারির 225 বছর পূর্তি স্মরণের সঙ্গে জঙ্গলমহলের দেশপ্রেমিক বিরসা মুন্ডার 150তম জন্মবর্ষ স্মরণ ৷

পুজো কমিটির সদস্য ও তীর্থঙ্কর ভকত জানান, পুজো যেভাবে তৎকালীন সময়ে বিপ্লবীরা শুরু করেছিলেন ঠিক সেইভাবেই হয়ে আসছে । আমাদের মা স্বদেশী অলংকারে ভূষিত হন । মূলত তৎকালীন সময় বিপ্লবীদের একজোট হওয়ার জন্য অনুষ্ঠিত এই পুজো আজও মানুষের মনে সাড়া ফেলে ৷ জাঁকজমকভাবে পুজো হয় ।

মেদিনীপুর, 4 অক্টোবর: অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন কর্নেল গোলা আদি সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতি । যা বিপ্লবীদের পুজো নামে পরিচিত ৷ এ বছর এই পুজো 91তম বর্ষে পদার্পণ করল ।

1931-32 ও 33 সালে পরপর তিনজন অত্যাচারী ব্রিটিশ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যথাক্রমে পেডি, ডগলাস এবং বার্জ মেদিনীপুর সুভাষচন্দ্র বসুর অনুগামী বেঙ্গল ভলান্টিয়ার বিপ্লবীদের হাতে খতম হয়েছিলেন ৷ তারপর থেকে কোনও কর্মরত আইসিএস (ICS) বিপ্লবীদের ভয়ে মেদিনীপুরের দায়িত্ব নিতে চাননি ।

স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দুর্গাপুজো (ইটিভি ভারত)

সেই সময় ব্রিটিশ সরকার এরকম বাধ্য হয়ে প্রশাসনের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পিজে গ্রিফিথ নামে এক অবসরপ্রাপ্ত আইসিএস-কে মেদিনীপুর জেলায় পাঠিয়েছিল । যা ছিল এক বিরলতম ঘটনা । তার আমলে মেদিনীপুর শহরবাসীকে চরম অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল । সন্ধ্যার পর মেদিনীপুরের শহরের জনসাধারণ যাতে বাড়ি থেকে বের হতে না পারে তার জন্য চালু হয়েছিল সান্ধ্য আইন ।

মেদিনীপুর শহরের ক্লাব, স্কাউট লাঠিখেলা, কুস্তি আখড়া সমস্ত কিছুর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় । এক কথায় শহরকে জেলখানায় রূপান্তরিত করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসন । এরই পাশাপাশি ব্রিটিশ সরকার মেদিনীপুর শহরে বিপ্লবীদের দমন করতে 1800 অতিরিক্ত পাঠান সেনা নিয়োগ করে ৷ তাদের দায়ভার বাবদ 68 হাজার টাকা অতিরিক্ত কর মেদিনীপুরবাসীর উপর চাপিয়ে দিয়েছিল । এহেন জটিল পরিস্থিতিতে ব্যারিস্টার বীরেন্দ্রনাথ শাসমল এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অনুগামী দেবেন্দ্র লাল খান, ব্যারিস্টার ক্ষীরোদ বিহারী দত্ত, কিশোর পতি রায়, অক্ষয় দাশগুপ্ত প্রমুখ দিকপাল স্বদেশী নেতাও স্বাধীনতা সংগ্রামী পৃষ্ঠপোষকতায় 1934 সালে শুরু হয়েছিল কর্নেল গোলার এই দুর্গাপুজো ৷ ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরের সহায়তায় এবং বিমল দাশগুপ্তের মতো শহরে কিছু উৎসাহী বিপ্লবী যুবকের প্রচেষ্টাও ছিল এই পুজোর পিছনে ৷

Freedom Fighters Durga Puja in Medinipur
মূর্তি তৈরির মুহূর্ত (ইটিভি ভারত)

পুজো উদ্যোক্তাদের তৎকালীন সময় মূল উদ্দেশ্য ছিল বিপ্লবীদের ঐক্যবদ্ধ করা । তবে সে সময় গান্ধিজীর বিদেশি দ্রব্য বর্জন নীতির কঠোর বাস্তবায়নের ফলস্বরূপ কোনও কৃত্রিম অলংকার ও বস্ত্র মায়ের গায়ে চাপানো হয়নি ৷ সেই ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে এই পুজোয় । আদিপুজোয় এবারে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে 1974 সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতবর্ষের সুপ্রিম কোর্টের 250 বছর পূর্তি স্মরণ । সেই সঙ্গে জঙ্গলমহলের অ-বিসংবাদিত নেত্রী কর্ণগড়ের রানি শিরোমণির গ্রেফতারির 225 বছর পূর্তি স্মরণের সঙ্গে জঙ্গলমহলের দেশপ্রেমিক বিরসা মুন্ডার 150তম জন্মবর্ষ স্মরণ ৷

পুজো কমিটির সদস্য ও তীর্থঙ্কর ভকত জানান, পুজো যেভাবে তৎকালীন সময়ে বিপ্লবীরা শুরু করেছিলেন ঠিক সেইভাবেই হয়ে আসছে । আমাদের মা স্বদেশী অলংকারে ভূষিত হন । মূলত তৎকালীন সময় বিপ্লবীদের একজোট হওয়ার জন্য অনুষ্ঠিত এই পুজো আজও মানুষের মনে সাড়া ফেলে ৷ জাঁকজমকভাবে পুজো হয় ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.